ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ সম্প্রতি মিয়ানমরে ভারতীয় সেনা অভিযান নিয়ে যতই দিন গড়াচ্ছে ততই নানা ধোঁয়াশার সৃষ্টি হচ্ছে। ভারত সরকার যেভাবে এটাকে একটা ‘বড় সফলতা’ বলে জাহির করা চেষ্টা করছে তা নিয়ে মনিপুরের অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন। এ নিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিবিসি।
এতে বলা হয়, গত সপ্তাহে ভারতীয় সৈন্যদের মিয়ানমার সীমান্ত অতিক্রম করে অভিযানের খবরে এ অঞ্চলে উত্তেজনা বেড়েছে। গত দুই দশকের মধ্যে ভারতীয় সৈন্যদের ওপর সবচেয়ে ভয়ঙ্কর হামলার প্রতিশোধ নিতে অস্বাভাবিক ওই জঙ্গিবিরোধী অভিযান চালানোর কথা বলা হয়। তবে ভারতীয় অভিযান নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। ভারতের মনিপুর রাজ্যের এই এলাকায় সীমান্ত তেমন দৃশ্যমান নয়। উভয় দেশের লোকজন বৈধভাবেই অন্যদেশে সহজেই প্রবেশ এবং ব্যবসা করার সুযোগ পায়।
এখানে ভারতের সর্বশেষ শহর মুরেহ আর মিয়ানমারের সাগেইং অঞ্চলের তামু। তামুর প্রধান বাজার মনিপুরিসে আদিবাসী বার্মিজদের বাস। এখানেই বিদ্রোহীদের একটি ঘাঁটি ছিল বলে বলা হচ্ছে। কিন্তু এ ব্যাপারে কেউ মুখ খুলতে নারাজ। একজন নারী বলছিলেন, ‘আমরা টেলিভিশনে কিছু একটা দেখেছি কিন্তু এ সম্পর্কে আমরা বেশি কিছু জানি না।’
ভারতও মিয়ানমারের অভ্যন্তরে (কথিত) এই সামরিক অভিযান নিয়ে খুব বেশি কিছু জানায়নি। তবে বিদ্রোহীদের ওই হামলার পর মনিপুর রাজ্যে ভারতীয় সৈন্যদের প্রহরা বেড়েছে। কোনো কোনো গ্রামবাসী বলছেন, তারা হেলিকপ্টারে সৈন্যদের দেখেছেন। তবে ভারত সরকার যেভাবে এটাকে একটা ‘বড় সফলতা’ বলে জাহির করা চেষ্টা করছে তা নিয়ে মনিপুরের অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন।
‘বিদ্রোহী ক্যাম্প কিংবা লাশের কোনো ছবি প্রকাশ করে ক্ষয়ক্ষতির মাত্রার বোঝানো হয়নি,’ বলছিলেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তরুণ। ‘বেশিরভাগ বিদ্রোহীরই মনিপুরে আত্মীয়স্বজন আছেন। কেউ মারা গেলে কথা বের হতো। কিন্তু তা হয়নি।’ এখন জানা যাচ্ছে যে সীমান্তের কয়েকটি ছোট বিদ্রোহী শিবিরে আঘাত হানা হয়।
ইন্সটিটিউট অব কনফ্লিক্ট ম্যানেজমেন্টের অজয় শাহনি বলেন, এটা ছিল একটা সামান্য অভিযান। ‘আমাদের উচিত ছিল বড় টার্গেট করা, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ক্যাডার নেতাদের আঘাত করা।’ ‘এর পরিবর্তে আমরা তুলনামূলক নরম এবং সবচেয়ে কাছের শিবিরে আঘাত করেছি। এরফলে পাল্টা আঘাতও আসেনি এবং ভারতের দিকে ক্ষয়ক্ষতিও হয়নি।’ এ সম্পর্কে বিশদ তথ্য কিংবা এতে কি অর্জিত হয়েছে তা জানা না গেলেও এতে এ অঞ্চলে উত্তেজনা বাড়ছে।
সূত্রঃবিবিসি।