DMCA.com Protection Status
title=""

দেশে অচীরেই আগাম নির্বাচন ? এরশাদের জাতীয় পার্টির দৌড়-ঝাপ শুরু

jatio-partyদৈনিক প্রথম বাংলাদেশ প্রতিবেদনঃ দেশে আগাম নির্বাচন কি আসন্ন ? সরকারের পালিত বিরোধীদল এরশাদের জাতীয় পার্টির কার্যকলাপে সেই ধরনের ইঙ্গিতই পাওয়া যাচ্ছে।

গ্রীন সিগন্যাল পেয়ে ‘আগাম নির্বাচনকে’ সামনে রেখে গোপনে শতাধিক আসনের প্রার্থী তালিকা তৈরি করেছে সংসদের তথাকথিত বিরোধী দল জাতীয় পার্টি। তালিকা অনুযায়ী প্রার্থীদের অপেক্ষাকৃত দুর্বল সংসদীয় এলাকায় দলকে সংগঠিত করার কার্যক্রমও আগস্ট থেকে শুরু করছেন দলের কেন্দ্রীয় নেতারা।

সরকারের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলা জাতীয় পার্টির একাধিক নেতা জানিয়েছেন, সরকারের নানা পরিকল্পনা রয়েছে। এর মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিকল্পনা হচ্ছে হঠাত করেই আগাম নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা। এটি হলে জাতীয় পার্টি যাতে নির্বাচনী বৈতরণী নির্বিঘ্নে পার হতে পারে সে জন্যই খুব সতর্কতার সঙ্গে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে রাখছে জাতীয় পার্টি।

জাতীয় পার্টির গুরুত্বপূর্ণ একজন নেতা বলেন, ‘আগস্ট থেকেই সারাদেশের বিভিন্ন আসনে প্রভাব রয়েছে বিএনপির এমন কিছু নেতা জাতীয় পার্টিতে যোগদান করবেন। তারাই সম্ভাব্য নির্বাচনে জাতীয় পার্টির দুর্বল প্রার্থী রয়েছে এমন এলাকায় লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী হবেন।’ বিএনপি নেতাদের জাপায় যোগদানে সরকারের সহযোগিতা রয়েছে কী না এমন প্রশ্নের উত্তরে সংসদ সদস্য এই নেতা বলেন, ‘জাতীয় পার্টি সরকারে রয়েছে। সরকারের সহযোগিতা থাকাটাই তো স্বাভাবিক। বরং না থাকাটাই অস্বাভাবিক।’

ershad_733577628_88299জাতীয় পার্টির একাধিক নেতার দাবি— পার্টির সিলেট অঞ্চলের নেতাদের সঙ্গে নির্বাচন সংক্রান্ত ব্যাপারে আলাপ-আলোচনা ও পার্টির সাংগঠনিক অবস্থার খোঁজ নিতে গোপনে ৩ দিন সিলেটে অবস্থান শেষে বৃহস্পতিবার ঢাকায় ফিরেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।

এরশাদের সিলেটে অবস্থানের খবর নিশ্চিত করেছেন তারই প্রেস এ্যান্ড পলিটিক্যাল সেক্রেটারি সুনীল শুভ রায়। তিনি বলেন, ‘স্যার সিলেটে ছিলেন। বৃহস্পতিবার ঢাকায় ফিরেছেন।’ জাতীয় পার্টির মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেন, ‘আমরা বিএনপি নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছি না। বিএনপির অনেক নেতাই আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। এখন তাদের দলে নেওয়া হবে কি না আমরা আগস্ট মাসে সিদ্ধান্ত নেব। তবে রাজনীতির অনেক চমকই বাকি আছে।’

দলীয় সূত্র মতে, আগাম নির্বাচন ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী চূড়ান্তের পরিকল্পনা অত্যন্ত গোপনে বাস্তবায়ন করছে জাতীয় পার্টির কয়েকজন নেতা। আর বাকি নেতারা বিষয়টি সম্পর্কে একেবারেই অন্ধকারে। তবে জাপার কিছু নেতার দাবি, সরকার এখন আগাম নির্বাচনের দিকে যাবে বলে মনে হয় না। ২-৩ মাস আগে এমন পরিকল্পনা ছিল। এখন নেই।

জাতীয় পার্টির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম-মহাসচিব এ্যাডভোকেট রেজাইল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, ‘এখন আগাম নির্বাচনের কোনো সম্ভাবনা নেই। আমাদের প্রস্তুতিও নেই। তবে পার্টির সংগঠিত করার কার্যক্রম আমরা জোরেশারে শুরু করব।’ জাতীয় পার্টির মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেন, ‘নির্বাচন ২০১৯ সালে হোক আর যখনই হোক জাতীয় পার্টি নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে রাখছে। জেলার নেতাদের সঙ্গে আমরা নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করছি। আগস্ট মাস থেকেই আমাদের পার্টি পুনর্গঠনের কাজ সারাদেশেই শুরু হবে।’

প্রার্থী চূড়ান্তের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আগস্টে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর, দক্ষিণ, সিলেট ও সুনামঞ্জের কাউন্সিল। এরপর পুরো দেশের কমিটি পুনর্গঠন হবে। জানুয়ারিতে আমরা কেন্দ্রীয় কাউন্সিল করব। তখন এটি জানতে পারবেন। তবে আমাদের টার্গেট ১৫১ আসন।’ সম্প্রতি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে জাপার চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদও নির্বাচনে জাপার প্রস্তুতি নিয়ে কথা বলেছেন। তিনি ঈদের আগে বিভিন্ন ইফতার পার্টিতে বলেছিলেন, আগামী নির্বাচনে জাতীয় পার্টি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। নির্বাচন যখনই হোক সেই নির্বাচনে জাতীয় পার্টি অংশ নেবে। এ ছাড়া দলের এমন সিদ্ধান্ত জানতে পেরে জাপার কেন্দ্রীয় নেতারা নিয়মিত জাতীয় পার্টির কার্যালয়েও বসছেন।

জেলার নেতারাও জাপার রওশন ঘনিষ্ঠ এমপি ও এরশাদ ঘনিষ্ট নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছেন। বুধবার সন্ধ্যায় জাতীয় পার্টির কাকরাইল কার্যালয়ে নেতাকর্মীদের নিয়ে বৈঠক করেছেন দলের মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু। সেখানে ছিলেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আবদুস সবুর আসুদ, যুগ্ম-মহাসচিব ইকবাল হোসেন রাজু, এ্যাডভোকেট রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, গোলাম মো. রাজু, মনিরুল ইসলাম মিলন, শ্রমিক পার্টির সভাপতি শাহ আলম তালুকদার প্রমুখ। এ ব্যাপারে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আব্দুস সবুর আসুদ বলেন, ‘জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের নির্দেশ পার্টিকে খুব শিগগিরই সংগঠিত করতে হবে। এ জন্যই স্যারের নির্দেশে আমরা যারা ঢাকায় আছি তারা নিয়মিত অফিসে যাচ্ছি। কর্মীদের সময় দিচ্ছি।’

জাতীয় পার্টির একাধিক নেতা জানিয়েছেন, আগাম হোক কিংবা যখনই হোক আগামী নির্বাচনে ৫ জানুয়ারি নির্বাচন বর্জনকারী অধিকাংশ দল অংশ নেবে এমনটা ধরে নিয়েই সারাদেশে ১০০টি আসন টার্গেট করেছে জাতীয় পার্টি। এ লক্ষ্য নিয়েই গোপনে ১০০ জন প্রার্থীর একটি তালিকাও প্রস্তুত করেছে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতারা। তালিকার বিষয়ে জাতীয় পার্টির নীতি নির্ধারকরা প্রকাশ্যে কিছু না বললেও নির্বাচনে জাপার অংশগ্রহণ নিয়ে তারা যে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছে তা এখন প্রকাশ্য।

জাপার অধিকাংশ নেতাই এবারের ঈদুল ফিতর এলাকার জনগণের সঙ্গে কাটিয়েছেন। এ ছাড়া কাজী জাফর আহমদের দলের কিছু নেতাদেরও জাতীয় পার্টিতে যুক্ত করার প্রক্রিয়া নিয়েছে এরশাদের জাপার নেতারা। সে ক্ষেত্রে তাদেরও প্রার্থী করা হতে পারে। খাখ

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!