ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ আজ দেশবরেন্য জনপ্রিয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব,বাংলাদেশের তিন বারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী এবং প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী, ২০ দলীয় জোটের প্রধান ও বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ৭০তম জন্মদিন।
১৯৪৫ সালের এই শুভ দিনে সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের বাবা এস্কান্দার মজুমদার ও মা তৈয়বা মজুমদারের কোল আলোকিত করে জন্মগ্রহণ করেন আপোষহীন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া।
এরপর সময়ের পরিক্রমায় সাধারণ গৃহবধূ থেকে রাজনীতিতে অংশ নিয়ে ৩ বার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন তিনি। পঞ্চম থেকে অষ্টম সংসদ পর্যন্ত ৪ বারই তিনি সাংবিধানিক সুযোগ অনুযায়ী সর্বোচ্চ ৫টি করে আসনে নির্বাচন করে ৫টিতেই বিজয়ী হন।
নির্বাচন কমিশনের নতুন নিয়ম অনুযায়ী নবম সংসদ নির্বাচনে সর্বোচ্চ ৩টি আসনে জয়ী হন তিনি।
তার ৭০তম জন্মদিনে তার পাশে নেই বড় ছেলে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আর চলতি বছরের জানুয়ারি মাসেই হারিয়েছেন ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোকে। ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর আকস্মিক মৃত্যু সংবাদে শোকে মুহ্যমান হয়ে পড়েন বেগম খালেদা জিয়া।
ওদিকে বেগম খালেদা জিয়া যখন ছেলে হারিয়ে শোকাহত তখনই তাকে হুকুমের আসামি করে দায়ের করা হয় একের পর এক মামলা। রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থানায় দায়ের করার গাড়ি পোড়ানো মামলায় হুকুমের আসামি করা হয় বেগম খালেদা জিয়াকে। বর্তমানে বেগম খালেদা জিয়াকে একাধিক মামলার আসামী করে সাজা দেয়ার যড়যন্ত্র করছে সরকার।
বেগম খালেদা জিয়ার গণতন্ত্র পূনরুদ্ধারের সংগ্রামে অভিরাম সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন। অতীতেও দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্র ও অন্যায় দাবির মুখে কখনোই মাথানত না করার ঐতিহাসিক সত্যতা রয়েছে বেগম খালেদা জিয়ার। নিজের কর্তব্য থেকে এক চুল সরে না আসা, দেশপ্রেম ও ভালবাসাকে আঁকড়ে ধরে কান্ডারী হয়ে, মায়ের মতো অভিভাবক হয়ে, দেশের ১৬ কোটি মানুষকে সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র আর বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখার শক্তি যুগিয়েছেন তিনি। বর্তমান আকুণ্ঠ দূর্নীতি নিমিজ্জিত স্বৈরাচারী সরকার একদলীয় নির্বাচনের মাধ্যমে আবারো ক্ষমতায় যাবার স্বপ্ন দেখছে।
কিন্তু বেগম খালেদা জিয়ার অশ্রুফোঁটা দেশপ্রেমিক জনগণকে সাহসী, প্রত্যয়ী করে তুলবে, লাখো শহীদের রক্তে ভেজা বাংলাদেশের মাটি কখনোই একদলীয় বাকশাল ও তাঁবেদারি মেনে নেয়নি, নেবে না। দেশী-বিদেশী চক্রান্তকে রুখে দিয়ে জাতীয়তাবাদী শক্তির উন্মেষ ঘটিয়ে কান্ডারী হয়ে বেগম খালেদা জিয়া জনগণকে এনে দেবেন আলোকিত দিন- এ বিশ্বাস সকলের।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানে বিপথগামী কিছু সৈনিকের হাতে নিহত হওয়ার পর তার সহধর্মিণী খালেদা জিয়া দলের হাল ধরেন। দীর্ঘ ৯ বছর রাজপথের আন্দোলন-সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়ে স্বৈরাচারী এরশাদ সরকারের পতনে মূখ্য ভূমিকা রাখেন তিনি। ‘৮৬ ও ৮৮’ সালের স্বৈরশাসকের বৈধতা দেয়ার নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করে আপসহীন নেত্রীর মর্যাদা লাভ করেন তিনি। এর পরপরই ’৯১ সালে বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদের নির্দলীয় অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি সংসদের সংখ্যা গরিষ্ঠ আসনে বিজয়ী হয়।
বেগম খালেদা জিয়া নিজে ৫টি আসনে নির্বাচন করে প্রতিটিতে বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়ে ক্যারিশমেটিক নেত্রী হিসেবে আবির্ভূত হন। জিয়াউর রহমানের বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের দর্শনকে এগিয়ে নিয়ে যান সব বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে। উন্নয়নের রাজনীতির যে সূচনা জিয়াউর রহমান করেছিলেন, তার সফল বাস্তবায়নের দায়িত্ব পড়ে খালেদা জিয়ার ওপর।
অবকাঠামো উন্নয়ন, সামাজিক ক্ষেত্রে উন্নয়নসহ বিশেষ করে নারীশিক্ষার উন্নয়নে খালেদা জিয়া বিশেষ সাফল্য অর্জন করেন। তার ক্যারিশমেটিক রাজনীতি বিএনপিকে দেশের জনপ্রিয় রাজনৈতিক দলে পরিণত করে।
বেগম খালেদা জিয়ার ৭০তম জম্মদিন উপলক্ষে আজ শনিবার সকাল আটটায় জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল তাদের দলীয় কার্যালয়ে কেক কাটার মাধ্যমে জন্মদিন পালন করবে। জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের পক্ষ থেকে ৭০ পাউন্ড কেক কাটা হবে।
মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা শুক্রবার বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা ম্যাডামের ৭০তম জন্মদিন উদযাপনের জন্য কেক অর্ডার দিয়েছি।’ ৭০ পাউন্ড কেক কাটবেন বলেও জানান তিনি।
ছাত্রদলের পক্ষ থেকেও বেগম খালেদা জিয়ার জন্মদিন উপলক্ষে আজ শনিবার সকাল ৮টায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কেক কেটে ‘প্রিয় নেত্রী’ এর জন্মদিন পালন করবে ছাত্রদল।
এ বিষয়ে ছাত্রদলের দফতর সম্পাদক মো. আবদুস সাত্তার পাটোয়ারি বলেন, ‘আমাদের নেত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে ৭০ পাউন্ড কেক অর্ডার দিয়েছি। শনিবার সকাল ৮টায় নয়াপল্টনে কেক কাটা হবে।