ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ অত্যন্ত আশ্চর্য হলেও সত্য, যে মূহুর্তে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দল নিরাপত্তার অজুহাতে বাংলাদেশ সফর স্তগিত করেছে ঠিক মুহূর্তে বাংলাদেশ মহিলা ক্রিকেট দল যাচ্ছে পাকিস্তান সফরে।
বলা বাহুল্য ভয়াবহ জঙ্গি তৎপরতার কারনে গত কয়েকবছর ধরে কোনো বিদেশী দল আর পাকিস্তান যাচ্ছেনা। এমতাবস্থায় বাংলাদেশের মহিলা দলটিকে কেনো এতবড় ঝুকিতে ফেলা হচ্ছে তা আমাদের বোধগম্য নয়।
প্রথমে জাতীয় ক্রিকেট দল পাঠানোর কথা উঠলেও পরে সকল মহলের প্রতিক্রিয়ায় ঐ পরিকল্না বাদ দেয় বিসিবি ।পাকিস্তানের পক্ষ থেকে যতোই আশ্বাস দেয়া হোক না কেনো,সে দেশের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় প্র্ছন্ন তালিবান হামলার আশংখায় আমাদের এই বিষয়ে আরো গভীর ভাবে ভেবে সিদ্ধান্ত নেয়া উচিৎ ছিলো নয় কি ??
তবে এ পর্যায় নিজেদের কূটনৈতিক চেষ্টায় সফল হতে চলেছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। গত তিন বছর ধরে নানা বাহানায় বাংলাদেশের একটি দলকে পাকিস্তান সফর করানোর চেষ্টায় স্বর্ব শক্তি প্রয়োগ করেছিল পিসিবি।
এই সময়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সঙ্গে সম্পর্কের প্রাচীর যার জন্য কম-বেশি ভাঙা-গড়ার কাজটাও করেছে পিসিবি একাই। কিন্তু বারবার দুয়ারে দ্বারস্থ প্রতিবেশিকে নারাজ করার রাস্তায় এবার আর হাঁটছে না বিসিবি।
অন্তরে কাঁপন, মুখে মিষ্টতার আভা নিয়ে সোমবার দুপুরেই পাকিস্তান সফরের উদ্দেশ্যে বিমানে চড়বে বাংলাদেশ মহিলা ক্রিকেট দল। পিসিবির সাফল্যের ঝান্ডাই বহন করবে সালমা খাতুনদের ঝুঁকিপূর্ণ এই সফর।
দলের ম্যানেজার শফিকুল হক হীরার দেয়া তথ্য অনুযায়ী সোমবার দুপুর ১টা ৩৫ মিনিটে ঢাকা ছাড়বে মহিলা দল। দুটি ওয়ানডে ও দুটি টি-২০ ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ মহিলা দল। সবগুলো ম্যাচই হবে করাচিতে। রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ ব্যক্তির নিরাপত্তাই পাবে সালমারা। এমন আশ্বাসই দেয়া হয়েছে বিসিবিকে। রোববার মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অন্তরের ভয়কে লুকিয়ে ক্রিকেট মাঠের স্পিরিটকেই সামনে তুলে এনেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সালমা খাতুন।
নিরাপত্তা ঝুঁকিসহ সবকিছু বাদ দিয়ে সফরটাকে সালমা দেখছেন, ক্রিকেট খেলার সুযোগ হিসেবে। সফরে যেতে বিসিবির চাপ ছিল না জানিয়ে সালমা বলেন, “আমাদের নিজেদের ইচ্ছাতেই যাচ্ছি। আমাদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেয়া হবে। আমরা খেলতে চাই। ক্রিকেট খেলতে যাচ্ছি। আমাদের যাওয়া, না যাওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার সুযোগ ছিল।
গত এশিয়ান গেমসের পর আমাদের কোনো খেলা হয়নি। সামনে টি-২০ বিশ্বকাপ বাছাই পর্ব খেলা। তার জন্য প্রস্তুতি হিসেবে এই সফর কাজে লাগবে।” পাকিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতি জেনেও ভয় পাচ্ছেন না সালমা। তিনি বলেন, “ক্রিকেট খেলতে যাচ্ছি। মারামারির জন্য নয়। মাঠে থাকলে বাইরের কিছু মনে থাকে না। আমরা জিততেই চাই।
পাকিস্তানের সঙ্গে আগে অনেক ম্যাচ কাছাকাছি গিয়ে হেরে গেছি। এই বিষয়টা ঠিক করতে হবে। ওয়ানডে, টি-২০ দুটোই ভালো করতে হবে। আমাদের প্রস্তুতিও ভালো। দু’মাস ক্যাম্প হয়েছে।”
৩০ সেপ্টেম্বর ও ২ অক্টোবর দুটি টি-২০ খেলবে বাংলাদেশ মহিলা দল। ৪, ৬ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে দুই ওয়ানডে ম্যাচ। ৭ অক্টোবর দেশে ফিরবে সালমা বাহিনী। বাংলাদেশ মহিলা দল: সালমা খাতুন (অধিনায়ক), জাহানারা আলম, ফারজানা হক পিঙ্কি, রুমানা আহমেদ, লতা মন্ডল, আয়েশা রহমান শুকতারা, পান্না ঘোষ, শারমিন আক্তার সুপ্তা, ফাহিমা খাতুন, শামীমা সুলতানা, রিতু মনি, নিগার সুলতানা, খাদিজা তুল কুবরা, শারমিন সুলতানা ও নাহিদা আক্তার।