ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ সম্প্রতি দু’জন বিদেশী হত্যায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে জড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া বক্তব্যকে রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত বলে অভিহিত করেছে বিএনপি। একই সঙ্গে তার এ বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে দলটি প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে প্রত্যাখ্যান করেছে।
রবিবার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির মুখপাত্র ড. আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, ‘শুধুমাত্র প্রতিপক্ষকে নিন্দা এবং ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করার জন্য এই ধরনের বানোয়াট, ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলা হচ্ছে। বিষয়টি অত্যন্ত অনভিপ্রেত এবং অপ্রত্যাশিত। বাংলাদেশে রাজনীতিতে এটি শিষ্টাচারের মধ্যে পড়ে বলে আমরা মনে করি না।’
সরকারপ্রধানের এ ধরনের বক্তব্যের পর দুই বিদেশী হতাকাণ্ডের ঘটনার তদন্ত তার স্বাভাবিক পথে এগোবে না বলেও মনে করেন তিনি।
‘বিদেশে বসে খালেদা জিয়া দেশে বিদেশি হত্যাকাণ্ড ঘটাচ্ছে’-এই সংক্রান্ত একটি সংবাদ রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা বাসসে (বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা) প্রকাশের প্রতিবাদে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
বিদেশী হত্যায় খালেদা জিয়াকে জড়িয়ে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্যের নিন্দা জানিয়ে রিপন বলেন, ‘বিএনপি নেত্রীর অবস্থান সম্পর্কে দলের নেতাকর্মীরা যতটা জানেন, তার চেয়ে বেশি জানেন সরকারের গোয়েন্দা সংস্থা। লন্ডনে তিনি (খালেদা জিয়া) যে চিকিৎসার জন্য ছেলের বাসায় আছেন, তা সেখানকার দূতাবাসের গোয়েন্দা সংস্থা এবং কর্মকর্তা ভালো করেই জানেন।’
তিনি বলেন, ‘দেশে নষ্ট রাজনীতির চর্চা চলছে বলেই বিএনপি নেত্রীকে জড়িয়ে অরুচিকর এবং অশোভন বক্তব্য দেওয়া হচ্ছে।
বিএনপি প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করছে এবং এর নিন্দা জানিয়েছেন।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘দুজন বিদেশী হত্যাকাণ্ডের ঘটনার দেশের সবাই দু:খ পেয়েছে এবং এ ঘটনার নিন্দা করেছে। এই অবস্থায় বিরোধী দলের সঙ্গে বিরোধিতা করার সময় নয়। সরকার এবং বিরোধী দল পরস্পরের সঙ্গে রাজনীতি করবে সেটা স্বাভাবিক। কিন্তু অপরাজনীতির কৌশল নিয়ে বিরোধী দলকে দমন করা এবং বিরোধী দলীয় নেত্রীর সম্মান ক্ষুন্ন করার বক্তব্য অবাঞ্ছিত।’
দেশে অবস্থান করা বিদেশীদের নিরাপত্তায় সরকারকে গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির মুখপাত্র বলেন, ‘দেশে বসবাসকারী বিদেশী নাগরিকদের চলাফেরা নিরাপদও নির্বিঘ্নে হওয়া প্রয়োজন। কারণ বিদেশী নাগরিকদের এলার্ট জারির পর এদেশে ব্যবসা করতে আসছেনা। উল্টো তাদের দেশে গিয়ে ব্যবসার জন্য আলোচনার কথা বলছেন। এই পরিস্থিতি দেশের অর্থনীতি বিরূপ প্রভাব পড়বে।
তিনি বলেন, ‘ব্যবসা, অর্থনীতির অগ্রগতির স্বার্থে এবং মানুষের নিরাপত্তা শঙ্কা দূর করতে বিরোধী দলের বিরুদ্ধে বিরোধিতা বা দলের নেত্রীর বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক বক্তব্য দিয়ে তার সম্মান ক্ষুন্ন করা বক্তব্য দেওয়া নয়। বরং প্রকৃত সমস্যাকে আড়াল না করে তা উন্মোচন করার মাধ্যমে প্রতিরোধ করতে হবে।
সেজন্য জাতীয় ঐক্যের প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে বলেও মন্তব্য করেন রিপন।’
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতাদের মধ্যে চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, সেলিমা রহমান, খায়রুল কবির খোকন, হাবিবুর রহমান হাবিব, আবদুস সালাম আজাদ, শামীমুর রহমান শামীম, আসাদুল করিম শাহিন, শিরিন সুলতানা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।