স্বাধীনতার পরে ঢাকা বারের নির্বাচনে আওয়ামীপন্থিদের সাদা প্যানেলের অভূতপূর্ব লজ্জাজনক পরাজয়ে সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে আদালত অঙ্গনে। কিন্তু কেন এমন পরাজয়? এই পরাজয় কি প্রত্যাশিত? এর জন্য কে দায়ী? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে পাওয়া গেছে বিচিত্র সব তথ্য।
দেশের আইন অঙ্গনে সুপ্রিমকোর্ট বারের পরই সবচেয়ে গুরুত্ব পেয়ে থাকে ঢাকা আইনজীবী সমিতি। মূল লড়াইটা হয়ে থাকে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি বলয়ের মধ্যে। এখানকার জয়-পরাজয়ের হিসাব নিকাশটা কখনোই কর্মী সমর্থকদের প্রত্যাশা বা আশঙ্কার সীমা অতিক্রম করেনি। বিশেষ করে আওয়ামীপন্থি আইনজীবীদের কথা থেকে সেটাই জানা গেছে। কিন্তু এবার যা ঘটেছে তা একেবারে স্বপ্নাতীত!
ঢাকা বারের আওয়ামীপন্থি আইনজীবীদের মধ্যে দুটি সুস্পষ্ট ধারা রয়েছে। এর একটি হচ্ছে আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ। এর নেতৃত্বে রয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন এবং মহানগর দায়রা জজ আদালতের পিপি আবু আব্দুল্লাহ। অন্যটি হচ্ছে বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদ। এর নেতৃত্বে আছেন অ্যাডভোকেট বাসেত মজুমদার ও অ্যাডভোকেট লায়েকুজ্জামান। যখন দেশে বঙ্গবন্ধু শব্দ উচ্চারণ 'নিষিদ্ধ' ছিল তখন বঙ্গবন্ধু পরিষদ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে আওয়ামী বলয়ের আইনজীবীদেরকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য এ সংগঠন গড়ে ওঠে।
এছাড়াও আওয়ামী যুব আইনজীবী পরিষদ নামে অধুনা আরেকটি সংগঠনও গজিয়েছে। তবে নামে ভিন্ন হলেও বাস্তবে এটি আওয়ামী আইনজীবী পরিষদেরই সমর্থক সংগঠন।
আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ ও বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদ কার্যতঃ আ্ওয়ামীপন্থি আইনজীবীদের দুটি সুস্পষ্ট ধারায় বিভক্ত করে রেখেছে। এই আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সমর্থকদের মথ্যেও ক্ষোভ। ক্ষোভের অন্যতম কারণ হচ্ছে- জন্মের পর হতে গত ১৮ বছর ধরে এই সংগঠনের কোনো সম্মেলন হয় না। এর নেতারা একই সঙ্গে সংগঠনে, মূল দলে এবং আদালতের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন ছিলেন এবং অনেকে আছেন।
অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন একাধারে আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সভাপতি, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী, বর্তমানে জাতীয় সংসদের সদস্য। আর অ্যাডভোকেট আবু আব্দুল্লাহ আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এবং মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকউটর। ফলে এই নেতারা কোনো সংগঠনেই যথেষ্ট সময় দিতে না পারেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। আর তাতেই ঝিমিয়ে পড়েছে সংগঠন।
অপরদিকে দল ক্ষমতায় আসার পর আদালতে প্রসিকউটর নিয়োগের ক্ষেত্রেও ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ করা সত্ত্বেও অনেক যোগ্য আইনজীবী এসব পদে নিয়োগ লাভের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হন। বিভিন্ন সেক্টরে আইনজীবী নিয়োগের ক্ষেত্রেও স্বেচ্ছাচারিতা ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়া আদালতে মামলা করতে গিয়ে নিজ দলীয় পাবলিক প্রসিকউটরদের কাছে বিড়ম্বনার শিকার হয়েছেন এমন আওয়ামী লীগ দলীয় আইনজীবীরাও অনেকে দলীয় প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন। এমনকি দলের বিরুদ্ধে ভোট দেয়ার কথা নির্বাচনের আগেই দলের ঊর্ধ্বতন নেতাদের জানিয়েছিলেন, এমন নিশ্চিত তথ্যও পাওয়া গেছে।
সবকিছু ছাপিয়ে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে আঞ্চলিকতা। দলনাশা এই আঞ্চলিকতাবোধের কথা স্বীকার করেছেন আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ ও বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদের দুজন ঊর্ধ্বতন নেতৃস্থানীয় আইনজীবী।
আওয়ামী লীগ কিংবা বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদ অথবা আওয়ামী আইনজীবী যুব পরিষদ যে যাই করুক না কেন নির্বাচন এলে সব কিছুর উপরে উঠে আসে আঞ্চলিকতাবোধ। এটাকে অনেকে 'গাছেরটা খেয়ে তলারটা কুড়ানোর' মতো জঘন্য মনোবৃত্তি বলে বর্ণনা করেছেন।
এবারের নির্বাচনেও প্রার্থী মনোয়নের ক্ষেত্রে এই মনোবৃত্তিই কাজ করেছে। আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ গঠনের পর থেকেই ঢাকা বারের নির্বাচনে প্রার্থী মনোয়নের ক্ষেত্রে ঢাকাইয়া এবং অঢাকাইয়া এরকম একটা মনোভাব চাঙ্গা হয়ে ওঠে।
ফল বিপর্যয়ের কারণ সম্পর্কে মতামত জানার জন্য ঢাকা বারের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট আবু সাঈদ সাগর ও সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ রেজাউর রহমানের সঙ্গে পৃথকভাবে যোগাযোগ করা হয়্।
এ ব্যাপারে অ্যাডভোকেট আবু সাঈদ সাগর ঢাকা আইনজীবী সমিতির নেতাদের ঢাকাইয়া মনোভাব অনেকাংশে দায়ী বলে মত দেন। অপরদিকে সৈয়দ রেজাউর রহমান কোনো বিশেষ অঞ্চলের কথা উল্লেখ না করলেও আঞ্চলিক প্রভাবকে দলীয় আনুগত্য ও আন্তরিকতার উর্ধ্বে স্থান পাওয়াকে দায়ী করেছেন।
এছাড়াও তিনি এবারে সভাপতি পদে বিজয়ী গতবারের নির্বাচনে ফেল করা অ্যাডভোকেট মহসীন মিয়ার দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, 'একবার বা একাধিকবার ফেল করা প্রার্থীদের প্রতি ভোটারদের বিশেষ সহানুভূতি কাজ করে থাকে।'
অপেক্ষাকৃত কম পরিচিতি ও কম জনপ্রিয়তা সভাপতি পদে সাইদুর রহমানের পরাজয়ের কারণ কি না এমন প্রশ্নে অ্যাডভোকেট সৈয়দ রেজাউর রহমান দ্বিমত পোষণ করেন। তিনি বলেন, গুছিয়ে কাজ না করতে পারাটাই ব্যর্থতার অন্যতম কারণ। এছাড়া বিভিন্ন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আসা নবীন আইনজীবীদের পক্ষভুক্ত করতে না পারাটাও পরাজয়ের অন্যতম কারণ বলে মনে করেন তিনি।
এছাড়াও নির্বাচনে জামায়াত-বিএনপির ব্যাপক অর্থ ব্যয়কেও সাদা প্যানেলের পরাজয়ের একটা কারণ বলে দাবি করেন ওই আইনজীবী নেতা।
তিনি বলেন, 'সরকারে আওয়ামী লীগ থাকলেও ঢাকা বারে বিএনপি ক্ষমতায় ছিল।'
উল্লেখ্য, গত ২০১৩ সালে ঢাকা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ২৫টি পদের মধ্যে আওয়ামী লীগ সমর্থিত সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের সাদা প্যানেল সভাপতিসহ ১২ পদে এবং বিএনপি সমর্থিত জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের নীল প্যানেল সাধারণ সম্পাদকসহ ১৩টি পদে বিজয়ী হয়েছে।
ঢাকা আইনজীবী সমিতির ভবন নির্মাণে প্রধানমন্ত্রীর ২০ কোটি টাকা অনুদান কি আইনজীবীদের মধ্যে কোনো প্রভাব ফেলতে সক্ষম হয়নি? এই প্রশ্নে অ্যাডভোকেট রহমান বলেন, 'নবীন আইনজীবীদের মধ্যে পড়েনি।'
দলীয় ভোটের চেয়ে নির্দলীয় ভোটাররাই নির্বাচনে প্রার্থীদের জয়-পরাজয়ে নীরব অথচ মুখ্য ভূমিকা পালন করে বলে তিনি জানান। নির্দলীয় ভোটারদের মাঝে সরকারবিরোধী একটা প্রচ্ছন্ন মনোভাব থাকে বলেও তার মত।
এছাড়া অনিয়মিত এবং ননপ্রাকটিসিং আইনজীবীরা নির্বাচনে একটা ফ্যাক্টর বলে তিনি উল্লেখ করেন। এরা তাহলে এবার বিএনপিকে ভোট দিয়েছে, কেন আওয়মী লীগকে দেয়নি? তিনি অবশ্য এর কোনো উত্তর দেননি।
এছাড়াও ঢাকা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ভৌগোলিক বিবেচনায় সংখ্যাধিক্যের কারণে ঢাকাইজম ছাড়াও ময়মনসিংহ ইজম এবং বরিশাল ইজম শক্তিশালী প্রেসার গ্রুপ হিসেবে কাজ করে। সে তুলনায় দৃষ্টিগ্রাহ্য সংখ্যাধিক্য থাকা সত্ত্বেও কুমিল্লা ইজম আজও শক্তিশালী কোনো অবস্থান তৈরি করতে পারেনি।
আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের ঊর্ধ্বতন নেতারা প্রার্থী মনোয়নের ক্ষেত্রে সব সময়ই ঢাকাইয়াদের প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। যার ফলে খাঁটি আওয়ামী লীগার হওয়া সত্ত্বেও ঢাকাইয়া না হওয়ার কারণে প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের কাছে পিছিয়ে পড়েন অনেকেই।
একই কারণে অপেক্ষাকৃত অযোগ্য বা কম ত্যাগী আইনজীবী মনোয়ন পেয়ে থাকেন। দলের অন্ধ সমর্থক ভোটার আইনজীবীরা শেষ পর্যন্ত সব ভুলে তাদেরকে ভোটও দিয়ে থাকেন বিধায় এরকম অনেকে বিজয়ী হওয়ারও নজির রয়েছে। কিন্তু সব সময় এমনটি ঘটে না। এমনটি এবার হয়নি বলেই অভূতপূর্ব এই ভরাডুবি।
এ বিষয়ে কথা বলার সময় অ্যাডভোকেট সৈয়দ রেজাউর রহমান বলেন, ‘অঢাকাইয়াদের তুলনায় ঢাকাইয়ারা অনেক বেশি সংগঠিত। নির্বাচনে ঢাকাইয়াদের প্রাধান্য পাওয়ার এটি অন্যতম প্রধান কারণ।’
সাধারন সম্পাদক পদে প্রার্থী হওয়ার জন্য আরও দু'বছর আগে থেকেই চেষ্টা করছিলেন অ্যাডভোকেট সাইদুর রহমান মানিক। এজন্য গতবছর মনোয়ন পাওয়ার আশায় প্রার্থী নির্ধারণের ক্ষেত্রে দুজন ক্ষমতাধর আইনজীবীকে সপরিবারে বিদেশ ভ্রমণ করিয়ে এনেছেন তিনি। এতে তার বিপুল অর্থ ব্যয় হয়েছিল বলে জানা গেছে। তবে শেষ পর্যন্ত গতবারের নির্বাচনে তিনি প্রার্থী হতে না পারলেও এবার প্রত্যাশার চেয়েও বড় পদে মনোয়ন পেয়েছেন। যা তার জন্য হিতে বিপরীত হয়েছে। ঢাকা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে সদস্য পদে নির্বাচনের অভিজ্ঞতাও তার নেই।
সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশীকে কেন সভাপতি পদে মনোনীত করা হলো এর কারণ অনুসন্ধানে জানা যায়, সভাপতি পদে বিএনপি-জামায়াতের প্রার্থী অ্যাডভোকেট মহসীন মিয়ার সঙ্গে নির্বাচন করার মতো আওয়ামী আইনজীবী পরিষদে উপযুক্ত কোনো প্রার্থী না থাকায় নির্বাচনে অনভিজ্ঞ অ্যাডভোকেট সাইদুর রহমান মানিককে সভাপতি পদে মনোনয়নের নামে বলি দেয়া হয়!
সাইদুর রহমান মানিকের সমর্থকদের ধারণা ছিল, বিপুল অর্থ ব্যয়ে নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়া যাবে। কিন্তু নির্বাচনপূর্ব এই ধারণা নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসতে থাকে ততই ফিকে হয়ে যায়।
এছাড়া সাইদুর রহমান মানিককে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হয়েছে বিএনপির নীল প্যানেলের অ্যাডভোকেট মহসীন মিয়ার সঙ্গে। অ্যাডভোকেট মহসীন মিয়া এর আগে ঢাকা আইনজীবী সমিতিতে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন। দলের বাইরে সাধারণ আইনজীবীদের মাঝে তার একটা পরিচিতি ও গ্রহণযোগ্যতা আগে থেকেই ছিল।
সেই তুলনায় সাইদুর রহমান মানিক নির্বাচনের মাঠে একেবারেই নতুন। প্রথমবারেই সভাপতি পদে অ্যাডভোকেট সাইদুর রহমানের মনোয়নকে দলীয় পোড় খাওয়া নেতাকর্মী থেকে শুরু করে সাধারণ আইনজীবীরা সহজে মেনে নিতে পারেননি। তারা এটাকে উড়ে এসে জুড়ে বসার মতো মনে করেছেন। ফলে অ্যাডভোকেট মানিককে হারতে হয়েছে বিপুল ভোটের ব্যবধানে।
এছাড়াও সাধারণ সম্পাদক পদে কয়েক বছর ধরে মনোয়ন প্রত্যাশী তুলনামূলকভাবে অধিক জনপ্রিয় এসএম নজরুল ইসলামকে মনোয়ন না দিয়ে মনোয়ন দেয়া হয় মো. মোশারফ হোসেনকে। অথচ এ পদে তুল্যবিচারে এসএম নজরুল ইসলাম অনেক বেশি জনপ্রিয় ও গ্রহণযোগ্য ছিলেন।
মনোকষ্টে এসএম নজরুল ইসলাম স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচনী লড়াইয়ে অবতীর্ণ হন। ব্যক্তি পরিচয়ে ভোট পান ৫৮২। অপরদিকে সাদা প্যানেলের মোশারফ হোসেন পরাজিত হন ৩১০ ভোটের ব্যবধানে। এই ফলাফলে একটা বিষয় পরিষ্কার হয়ে উঠে যে, যদি আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের নেতারা ঐক্যবদ্ধভাবে মোশারফ হোসেন বা এসএম নজরুল ইসলামকে প্রার্থী ঘোষণা করতে পারতেন, তাহলে এ পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা ছিল।
এছাড়া আওয়ামী লীগের বিপরীতে নীল প্যানেলে বিএনপি-জামায়াতের প্রার্থী মনোয়ন ও প্রচারণা ছিল অনেক বেশি গোছানো। গত ২/৩ বছরে বিভিন্ন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করে যারা ঢাকা বারে আইনপেশায় যোগ দিয়েছেন বিএনপি-জামায়াতের প্রার্থীরা তাদের প্রতি বিশেষ মনোযোগ দিয়েছেন এবং গুরুত্ব দিয়ে তাদের পক্ষে সম্পৃক্ত করতে পেরেছেন।
গত ২/৩ বছরে ঢাকা আইনজীবী সমিতিতে যোগ দেয়া নবীন আইনজীবীরাই এমন নির্বাচনী ফলাফল তৈরিতে মুখ্য ভূমিকা রেখেছেন বলে অনেকে মনে করছেন।
এরপর নির্বাচনে সাদা প্যানেলের অভূতপূর্ব বিজয়ের কারণ জানতে চাইলে ঢাকা বারের সাবেক সভাপতি ও বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া দৈনিক প্রথম বাংলদেশকে বলেন, 'সরকার নারী আইনজীবীদের ওপর যে নির্যাতন করেছে এবং সারা দেশে যে অত্যাচার চলছে তার প্রতিফলন ঘটেছে এ ফলাফলে।'
এরপর জামায়াতপন্থি আইনজীবী অ্যাডভোকেট আজমত হোসেইনের কাছে নির্বাচনে ট্রেজারার পদে শামসুজ্জামান ও সদস্য পদে তার এমন ফলাফলের রহস্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমরা ভালো মানুষ বলেই ভোটাররা আমাদেরকে জানেন। আমরা নিয়মিত প্রাকটিস করি। সবার সাথে যোগাযোগ রাখি এবং সদাচরণ করি।' সাদা প্যানেলে ভোট দেন এমন এক হাজার থেকে বারশ ভোট পেয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি।
মাথাপিছু দুই হাজার থেকে তদুর্ধ টাকায় ছয় শতাধিক ভোটারের ভোট জামায়াত আদায় করেছে এমন অভিযোগ খণ্ডন করে অ্যাডভোকেট আজমত বলেন, 'একথা সত্য নয়। যারা জামায়াত করে তারা নিজেদের টাকা খরচ করেই আমাদেরকে ভোট দিয়েছে।' তিনি জানান, তার পক্ষে কোনো একজন আইনজীবী ম্যাসেজিং (মোবাইল এসএমএস) করেছেন। অর্থ দিয়ে কোনো ভোট কেনার সঙ্গে তারা কোনভাবেই জড়িত নন।
এবারই প্রথম ঢাকা আইনজীবী সমিতিতে জামায়াতের দুইজন আইনজীবী নির্বাচিত হয়েছেন।
উল্লেখ্য, ঢাকা আইনজীবী সমিতির ২০১৪-১৫ বর্ষের নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াতপন্থিদের নীল প্যানেল সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদসহ ১৯টি পদে নিরঙ্কুশভাবে বিজয়ী হয়েছে। নির্বাচনে ভরাডুবি হয়েছে আওয়ামীপন্থি সাদা প্যানেলের। কেবল ছয়টি সদস্য পদ নিয়েই তাদেরকে সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে এবার।