ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি কোনও সন্ত্রাসী সংগঠন নয়, এমন রায় দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত।
যুক্তরাষ্ট্রে একজন বাংলাদেশী বিএনপি কর্মীর রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা সংক্রান্ত মামলায় ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি (ডিএইচএস) বিএনপিকে একটি তৃতীয় স্তরের সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে অভিযোগ করে ১৬টি প্রমাণ উপস্থাপন করলেও অভিবাসন আদালত তাতে সন্তুষ্ট হয়নি।
অভিবাসন বিচারক ডরোথি হারবেক সম্প্রতি এই রায় দেন যার একটি কপি দৈনিক প্রথম বাংলাদেশের হাতে এসে পৌঁছেছে।
কোর্টের রায়ে বলা হয়, ‘বিএনপি একটি সন্ত্রাসী সংগঠন এ যুক্তিতর্কে ডিএইচএস দুটি বিকল্প তত্ত্ব নিয়ে আসে। প্রথমটি হচ্ছে বিএনপির সঙ্গে বর্তমানে এবং অতীতে সন্ত্রাসী সংগঠনের সম্পর্ক ছিল এবং দ্বিতীয়ত এর সদস্যরা সহিংস কার্যকলাপে লিপ্ত।’
রায়ে উল্লেখ করা হয়, ‘কোর্ট সতর্কতার সঙ্গে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যুক্তিতর্ক বিবেচনা করেছে এবং দুটি যুক্তিই প্রত্যাখ্যান করছে।’
২৫ বছর বয়সী এক বাংলাদেশি নিজেকে বিএনপির কর্মী দাবি করে গত ডিসেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করে। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতেই এ রায় আসে।
উল্লেখ্য যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি অঙ্গরাজ্যের ডিটেনশন সেন্টার গুলোতে আটক বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশী রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীরা অতি সম্প্রতি তাদের আবেদন সুবিবেচনার দাবীতে অনশন শুরু করলে বিষয়টি জনসমক্ষে চলে আসে।এর পরিপেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডি.সিতে মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারী (মাননীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী) জে. সি. জনসনের সাথে হোমল্যান্ড সিকিউরিটির কংগ্রেশনাল দফতরে এক সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হন বিএনপি চেয়ারপারসনের সাবেক বৈদেশীক উপদেষ্টা ও বিএনপির বিশেষ দূত জনাব জাহিদ এফ সরদার সাদী এবং যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সাধারন সম্পাদক ও যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি প্রফেসর দেলোয়ার হোসেন।
জনাব সাদী মাননীয় হোমল্যান্ড সিকিউরিটি মন্ত্রী জনসনকে বাংলাদেশের বর্তমান ভয়াবহ মানবাধিকার পরিস্থিতিতে জীবন বাঁচাতে আমেরিকায় আসা বিএনপি সহ বিরোধীদলের নেতা কর্মীদের ব্যাপার বিশেষ সহানুভূশীল আচরনের অনুরোধ জানান এবং টেক্সাস সহ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের জেলে আটক অনশনরত বাংলাদেশী রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থীদের অবিলম্বে মুক্তি দেয়ার বিশেষ অনুরোধ করেন ।
জানা যায়,এই সাক্ষাতের পরপরই ঐদিন রাতেই টেক্সাস ডিটেনশন সেন্টার থেকে ১১ জন বাংলাদেশী আশ্রয় প্রার্থীকে মুক্তি দেয়া হয় এবং পর্যায়ক্রমে আটক সকলকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রচলিত আইন অনুযায়ী রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদনের সুযোগ দেয়া হবে বলে জানানো হয় ।
এ প্রসঙ্গে যোগাযোগ করা হলে ঢাকার যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের এক মুখপাত্র বলেন, ‘বিএনপিকে বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়নি। এ সংক্রান্ত একটি তালিকা যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাওয়া যাবে।’