DMCA.com Protection Status
title="৭

সালাউদ্দীন কাদেরের ফাঁসি বিচার বিভাগীয় হত্যাকান্ডঃ বেগম খালেদা জিয়া

khaleda-zia-dabe-ifter-part

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ  বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন কথিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসিতে দন্ডিত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পরিবার।

বেগম খালেদা জিয়া এই পরিবারের সদস্যদের সান্তনা দিয়েছেন । পরিবারটিকে আল্লাহর উপর ভরসা করে ধৈর্য ধরার জন্য বলেছেন বেগম জিয়া ।

শনিবার রাতে গুলশানের বাসভবনে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাত করেন সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর স্ত্রী ফারহাত কাদের চৌধুরী, বড় ছেলে ফাইয়াজ কাদের চৌধুরী, ছোট ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী ও মেয়ে ফারহিন কাদের চৌধুরীসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্য ।

শনিবার বিকালে খালেদা জিয়া দেশে ফেরেন। বিমান বন্দর থেকে সরাসরি তিনি গুলশানের বাসভবনে যান । বাসভবনে যাওয়ার পর রাতে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পরিবারের সদস্যরা সাক্ষাত করেন। এরপর তারা কেন্দ্রীয় কারাগারে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করতে যান। ফাঁসি কার্যকর হওয়ার পরও খালেদা জিয়ার পক্ষে দলের সিনিয়র নেতারাও সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পরিবারের সদস্যদের শান্তনা দেন বলে বিভিন্ন সূত্র জানায়।

সালাউদ্দীন কাদের চৌধুরীর  ফাঁসির রায় কার্যকরের পর বেগম খালেদা জিয়া এই ফাঁসিকে বিচার বিভাগীয় হত্যাকান্ড আখ্যা দিয়ে তার তীব্র নিন্দাবাদ জ্ঞাপন  করেন ।

এদিকে জামায়াতের সেক্রেটারী জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসি কার্যকর হওয়ার পর জামায়াত-শিবির কাল সোমবার সারাদেশে হরতাল আহবান করেছে ।

আপিল বিভাগে ফাঁসির দন্ডাদেশ বহাল রাখার প্রতিবাদেও ১৯ নভেম্বর জামায়াত হরতাল পালন করেছে। অথচ সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী বিএনপির নীতিনির্ধারনী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য হওয়ার পরও তার ব্যাপারে ইতিপূর্বে দলটির কোনো কর্মসূচি ছিল না।

এমনকি ২১ নভেম্বর রাতে কেন্দ্রীয় কারাগারে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসি হওয়ার পরও বিএনপির পক্ষ থেকে কোনো ধরনের কর্মসূচি দেওয়া হয়নি। সালাউদ্দিনের পরিবার হরতালসহ বিভিন্ন কর্মসূচি দাবি করেছিল।

কিন্তু বিএনপি তাদের দাবির প্রতি গুরুত্ব না দেওয়ায় সালাউদ্দিনের পরিবার বিএনপির ওপর ক্ষুব্ধ হয়েছে। সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী বিএনপির তবে বিএনপি থেকে যে শান্তনা ও ধৈর্য ধরতে বলা হয়েছে এটাই তাদের জন্য যথেষ্ট নয় বলে বিএনপির কোন কোন নেতা মনে করছেন।

২০১০ সালের ১৬ ডিসেম্বর রাজধানীর মগবাজার এলাকায় গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পরে ১৯ ডিসেম্বর তাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। আর ২০১১ সালের ১৪ নভেম্বর আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জমা দিলে ১৮ নভেম্বর তা আমলে নেন বিচারক। এরপর ২০১২ সালের ৪ এপ্রিল মানবতাবিরোধী অপরাধের ২৩টি ঘটনায় অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে এই সাংসদের বিচার শুরু হয়। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২০১৩ সালের ১ অক্টোবর বিএনপির প্রভাবশালী এই নেতাকে মৃত্যুদণ্ড দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

গত ৭ জুলাই এ মামলার আপিলের চূড়ান্ত শুনানি শেষ হলে এটি রায়ের জন্য ২৯ জুলাই দিন ধার্য রাখা হয়। ট্রাইব্যুনালের দেওয়া দণ্ড বুধবার ২৯ জুলাই চূড়ান্ত রায় বহাল রাখেন সর্বোচ্চ আদালতের আপিল বিভাগ।

১৮ নভেম্বর রিভিউ শুনানির পরও আপিল বিভাগ সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ওপর ফাঁসির দন্ডাদেশ বহাল রাখেন। ২১ নভম্বের রাতে তাদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। মুসলিম লীগ নেতা ফজলুল কাদের চৌধুরীর ছেলে ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী।

তিনিই প্রথম বিএনপি নেতা, মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে যার ফাঁসি দিলো দেশের সর্বোচ্চ আদালত। ফাঁসি হওয়ার হওয়ার পর শোকাহত এই পরিবারের সদস্যরা কিছুটা অসহায় হয়ে পড়েছে। শনিবার খোঁজ-খবর নিয়ে জানা গেছে, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর স্ত্রী ফারহাত কাদের চৌধুরী, বড় ছেলে সাইয়াদ কাদের চৌধুরী, ছোট ছেলে হুম্মান কাদের চৌধুরী ও মেয়ে ফারহিন কাদের চৌধুরীকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির একাধিক সদস্য যোগাযোগ করে শান্তনা দিয়েছেন।

অনেকে যোগাযোগ করলে তারা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। চট্রগ্রামের রাউজানে পারিবারিক কবরস্থানে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর দাফন সম্পন্ন হয়েছে। সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ভাই গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরী বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক। তিনিও বিএনপি হাইকমান্ডের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছেন। সালাউদ্দিনের পরিবারের সদস্যরাও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ বিএনপির অন্যান্য নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন বলে সূত্র জানায়।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!