ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ৮০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া কোনো ঘটনাই না বলে মন্তব্য করেছেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন দ্য ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ’র (এফবিসিসিআই) সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমেদ।
রোববার রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁয়ে এক অনুষ্ঠান শেষে তিনি সাংবাদিকদের কাছে এ মন্তব্য করেন।
‘বাংলাদেশ ট্রেড পোর্টাল’ ওয়েবসাইট উদ্বোধন উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে এফবিসিসিআই সভাপতির কাছে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে প্রশ্ন করা হয় বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার কারণে আর্থিক খাতে কি ধরণের প্রভাব পড়তে পারে?
জবাবে মাতলুব বলেন, ‘বুঝতে হবে কতোগুলো টাকা চুরি হয়েছে। আজ যদি সবটাকা নিয়ে যেতো, যদি ২৮ বিলিয়ন (২ হাজার ৮০০ কোটি) ডলারের মধ্যে ২৮ বিলিয়ন ডলারই নিয়ে যেতো, তাহলে বুঝতাম আর্থিক খাতে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু হয়ে গেছে। এমনও হতে পারে এখান থেকে কেউ কোড দিয়ে দিয়েছে। এখন তদন্ত চলছে। আমি যেটা বলছি তাহলো, ‘এটা কোনো বিষয় না’। কয় টাকা গিয়েছে? ২৮ বিলিয়নই নিতে পারত না? ওটাতো নেই নাই। তার মানে অতো বড় চোর নয়, ছেঁচড়া চোর।’
এরপর মাতলুব আহমেদকে প্রশ্ন করা হয়- বাংলাদেশ ব্যাংকের সব কম্পিউটারে ভারতের এক ব্যাক্তির সফটওয়্যার ব্যবহার করা হচ্ছে। এটি কি ঝুঁকিপূর্ণ নয় ?
জবাবে তিনি বলেন, ‘সফটওয়্যার একটি পার্ট মাত্র। কোড নম্বরটিই মূল। তোমার কোড নম্বর যদি বন্ধুকে দিয়ে দাও, সে খুলতে পারবে। এখন এই কোড নম্বর ভাঙার জন্য অনেকে বসে আছে। এরা হ্যাকার। এই হ্যাকারদের থামানোর জন্য ফায়ারওয়ালের অনেকগুলা যন্ত্রপাতি রয়েছে। কেউ চেষ্টা করলেও হ্যাক করতে পারবে না। ওই সিস্টেমে আমাদের যেতে হবে। এখন এই দুর্ঘটনাটি বাংলাদেশ ব্যাংকে হওয়ার কারণে দেশব্যাপী সব ব্যাংকের পলিসি, সিকিউরিটি জোরদার হবে। ফলে ভবিষ্যতে আমাদের অনেক উপকার হবে।’
এরপর এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘আমি নিশ্চিত এটি আমাদের শাপে বর হবে। এখন এই দুর্ঘটনা ঘটার কারণে আমার সবাই এ্যালার্ট (সতর্ক) হয়ে গিয়েছি। দেশব্যাপী এ্যালার্ট হয়ে গেছে। এখন এটিএম বুথে যাওয়ার সময় তিনবার চিন্তা করব। আগে খোলা বুথে ঢুকে টাকা তুলে নিয়ে আসতেন, এখন আর তা করবেন না। লুকায়ে-ঝুকায়ে করবেন।
এর আগে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়ে আহমেদ, আমদানি-রফতানি সংক্রান্ত তথ্য প্রাপ্তি সহজীকরণে ‘বাংলাদেশ ট্রেড পোর্টাল’ নামে নতুন ওয়েবসাইট উদ্বোধন করেন।
এটি সরকারি উদ্যোগে ব্যবসা-বাণিজ্য তথ্য প্রদানের উদ্দেশ্যে তৈরি প্রথম ওয়েবসাইট। বাংলা ও ইংরেজি মাধ্যমে ওয়েবসাইটটিতে তথ্য পাওয়া যাবে।
ওয়েবসাইটি তদারকির বিষয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, শিগগির এফবিসিসিআই’র সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই’র মাধ্যমে ওয়েবসাইটের যাত্রা শুরু হবে।
এর আগে এফবিসিসিআই সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমেদ বলেন, সরকার চাইলে ওয়েবসাইটির দেখভাল করার সব ধরণের দায়িত্বে এফবিসিসিআই নিতে পারে। এর উত্তরেই এফবিসিসিআিই’র সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই’র কথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়ার সচিব হেদায়েত উল্লাহ আল মামুন, প্রশাসনিক সচিব কাজী সালাউদ্দিন আকবর প্রমুখ।