ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতিকে উদ্বেগজনক বলে মনে করে যুক্তরাজ্য। মানবাধিকার পরিস্থিতি উদ্বেগজনক রয়েছে এমন ৩০টি দেশের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক মানবাধিকার প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এ তথ্য।
২০১৫ সালের বৈশ্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে এ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় বৃহস্পতিবার।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে ২০১৫ সালে সার্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। প্রধান দুই দল আওয়ামী লীগ ও জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মধ্যে উত্তেজনা প্রশমিত হয়নি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৫ সালের প্রথম তিন মাস বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতাদের গ্রেপ্তার, পরিবহন ধর্মঘট এবং লাগাতার হরতালসহ নানা বিষয়ে এই দুই দল মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছিল। জনগণের নিরাপত্তা ও জীবিকার ওপর এর প্রভাব পড়ে। ২০১৫ সালে চরমপন্থীরা কয়েকজন সেক্যুলার লেখক ও সংখ্যালঘুর ওপর হামলা চালিয়েছে। বাক স্বাধীনতার ওপর চাপ বৃদ্ধি পেয়েছিল।
মানবাধিকার ও গণতন্ত্র কর্মসূচির মাধ্যমে যুক্তরাজ্য বাংলাদেশে ব্লগারদের নিরাপত্তা প্রশিক্ষণ দিয়েছে এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন ২০০৬-এর পর্যালোচনাকে আন্তর্জাতিক মানের করতে সহযোগিতা করেছে। বিলম্বিত বিচার প্রক্রিয়ার কারণে জনগণ আইন নিজের হাতে তুলে নিয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
এতে আরো বলা হয়েছে, বেসরকারি সংস্থাগুলোর দেওয়া তথ্যানুয়ায়ী, যেখানে আইনে সবোর্চ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড রয়েছে সেখানে অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুমের মতো ঘটনা ঘটেছে। ২০১৫ সালে যুদ্ধাপরাধের দায়ে তিনজনসহ কমপক্ষে পাঁচ ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।
বেসরকারি সংস্থাগুলো আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ অব্যাহত রেখেছে।
আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিভাগ বাংলাদেশে বিচার খাতের সংস্কারের জন্য ৩৭ লাখ পাউন্ড (চার হাজার ২১৮ লাখ টাকা) এবং পুলিশ বিভাগের সংস্কার কর্মসূচির জন্য ১২ লাখ পাউন্ড (এক হাজার ৩৬৮ লাখ টাকা) দিয়েছে।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘আমরা আবারো স্পষ্টভাবে বলছি, কার্যকর বিচার ব্যবস্থা, স্পন্দনশীল সুশীল সমাজ ও মুক্ত গণমাধ্যম, চ্যালেঞ্জ ও জবাবদিহিতা দিতে সক্ষম কর্তৃপক্ষ একটি সফল গণতন্ত্রের মৌলিক উপাদান। অবাধ, স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনও গুরুত্বপূর্ণ; আগামী জাতীয় নির্বাচনে সেই লক্ষ্য অর্জনে সব রাজনৈতিক দলকে কাজ করতে উৎসাহিত করছি।’
নারীদের অগ্রগতির কথা উল্লেখ করে প্রতিবেদন বলা হয়, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নারীরা উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে। অনেকে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও তৈরি পোশাক কারখানায় কাজ করছে। তারপরও নারীরা এখনো পুরুষের মতো সামাজিক অবস্থান উপভোগ করতে পারছে না। লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা এখনো উল্লেখযোগ্য সমস্যা। বাল্যবিবাহ এখনো উদ্বেগের বিষয়।