ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ এবার নুতন প্রজন্মের শিশু কিশোরদের পবিত্র কোরবানি ঈদের উৎসব বিমুখ করতে আসছে আওয়ামি লীগ সরকারের নতুন আইন।
.
‘১৮ বছর না হলে ঈদে পশু কোরবানি করতে পারবে না’
.
দেখা যায় প্রতি বছর কোরবানি ঈদ আসলে এক শ্রেণীর দূষ্কৃতিকারীর চক্রান্ত বেড়ে যায়। সারা বছর গ্রিল, চিকেন ফ্রাই, শর্মা, বিফ বিরিয়ানি খাওয়া শয়তানগুলো হঠাৎ করে পশুপ্রেমী হয়ে যায়। যেখানে সেখানে আর নদনদীতে পূজার আবর্জনা ফেলা লোকগুলো হয়ে যায় পরিবেশবাদী।
আর তারা যেহেতু সরকারের ঘাড়ে বসে আছে, তাই তারা সরকারকে কোরবানির বিরুদ্ধে উস্কানি দেয়। সরকারও সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের অনুভূতির কথা তোয়াক্কা না করে সায় দেয় তাদের কথায়, কারণ তাকে তো আগে গদি বাঁচাতে হবে, ক্ষমতায় আছে তো তাদেরই আশির্বাদে।
.
গত বছর ঐতিহ্যগতভাবে হয়ে আসা বাড়ি বাড়ি কোরবানি ঈদকে জটিল করতে আইন করেছিল বাড়ি থেকে কয়েক মাইল দূরে নির্দিষ্ট স্থানে কোরবানি দিতে হবে। তার আগের বছর থেকে কমিয়ে দেয়া হয়েছিল পশুর হাট, যাতে মানুষকে অনেক দূর থেকে গরু কিনে আনতে হয়। আবার এই বছর আইন করেছে ১৮ বছরের কেউ নাকি কোরবানিতে অংশ নিতে পারবে না। কেন?? সমস্যা কি??
.
গতকাল স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, কুরবানির ঈদ অর্থাৎ ঈদুল আযহার সময় ১৮ বছর বয়স হয়নি এমন কেউ পশু কোরবানি করতে পারবেনা। অপ্রাপ্তবয়স্ক কাউকে যেন কুরবানির কাজে অংশ না লাগানো হয় সেজন্য অনুরোধও করেছে। তিনি আরো জানান, নির্দেশনাটি আগে থেকেই দেয়া থাকলেও এবার ঈদে এটি কঠোরভাবে প্রয়োগ করা হবে। কিন্তু এই নির্দেশনাটি কবে থেকে ছিল সেটা তিনি জানাননি।
.
কোরবানি আমাদের কাছে একটা ঈদ, উৎসব। এই উৎসবে বড়দের থেকে ছোটদের আনন্দ বেশী। আমরা কোরবানি দেই পারিবারিকভাবে।
মৌলভী সাহেবরা এসে পশু জবাই করে, আমরা বড়রা মিলে চামড়া ছিলি আর ছোটরা গরুর পা ধরে দাঁড়িয়ে থাকে, যাতে আমরা সহজে চামড়া ছিলতে পারি। এই ছাড়াও তারা গোস্ত আনা নেয়ার কাজে সাহায্য করে, বিলিবন্টনের কাজে সাহায্য করে।
আমার ভাগ্নের বয়স ১৫, গত পাঁচ বছর যাবত সে সক্রিয়ভাবে আমাদের সাথে কোরবানীতে অংশ নিচ্ছে। কই, কোন তো সমস্যা দেখছি না, বরং সে আরো বেশী অভিজ্ঞ হচ্ছে।
সে আমাদের কাছ থেকে শিখছে, আমরা যেমন শিখেছি আমাদের বাবারদের কাছ থেকে, আমার বাবারাও শিখেছে তাদের বাবাদের কাছ থেকে। এইভাবেই তো পরিবারের শিশু কিশোররা বড়দের কাছ থেকে কোরবানি ঈদের কাজকর্মের শিক্ষা লাভ করে। তাহলে সরকার হঠাৎ করে এদের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করল কেন?
.
কারণ ভারতের মদদপুষ্ট হিন্দুত্ববাদী আওয়ামি লীগ চায়না বাংলাদেশে কোরবানি উৎসব বেশি দূর আগাক। কারণ, এখানে বেশীর ভাগই গরু কোরবানি দেয়। গরু আবার তাদের দেবতা !! যদি এদেরকে(শিশু-কিশোর) ১৮ বছর পর্যন্ত কোরবানি থেকে দূরে রাখা যায় তাহলে ১৯ তম বছরে গিয়ে এরা আর কোরবানি দেয়া তো দূরের কথা গোস্তও ধরতেও চাইবে না।
আমার অনেক পরিচিত যারা বিদেশে থেকে বড় হয়েছে, তাদের দেখলাম কোরবানির প্রতি অনিহা, গোস্ত কাটাকুটি তারা তেমন একটা লাইক করে না। কসাই এসে করে দিয়ে যায়। তাদের কোরবানিটা অনেকটা দোকান থেকে গোস্ত নিয়ে এসে খাওয়ার মত। তারা আমাদের মত আনন্দ উৎসব করতে পারে না। পারবেই কেমনে তারা যে শিশু কিশোর থেকেই এইসব থেকে দূরে ছিল। আওয়ামিলীগও ঠিক এমন একটা জেনারেশন বানাতে চাচ্ছে এখানে।
.
আইন যদি সবার জন্য সমান হত, আওয়ামিলীগ যদি সত্যি ন্যায়-পরায়ন হত, তাহলে এমন একটা আইন হিন্দুদের জন্যও করত। কারণ কিছুদিন পরেই তো হিন্দুদের পাঠা বলি উৎসব। তাদের জন্যও তো বলতে পারত, '১৮ বছর না হলে পাঠা বলি কার্যে অংশ গ্রহণ করতে পারবে না’।।
.
কিন্তু তারা এমন কিছু বলেনি, তাদের সকল চক্রান্ত যেন শুধুই মুসলিমদের বিরুদ্ধে।।