যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ার আগে নিখোঁজ মালয়েশীয় বিমানটি থেকে সম্ভবত সংকেত পাওয়া গিয়েছিল বলে দাবি করেছে থাইল্যান্ডের সেনাবাহিনী। মঙ্গলবার দেশটির সেনাবাহিনী জানায়, ঘটনার দিন তাদের রাডারে একটি বিমানের অস্তিত্ব ধরা পড়েছিল যা মালয়েশীয় এয়ারলাইন্স ৩৭০ হতে পারে। তবে তারা এই তথ্য এতদিন প্রকাশ করেনি কারণ বিষয়টিতে তখন তারা খুব মনোযোগ দেননি।
থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়াসহ মোট ২৬টি দেশের নৌ ও বিমানবাহিনী যখন থাই উপসাগর থেকে শুরু করে ভারত মহাসাগরের বিস্তৃত অঞ্চল বিমানটির খোঁজে চষে ফেলছে তখন এ খবর জানা গেলো। ফলে বিমানটিকে শেষ যেখানে দেখা গিয়েছে এবং এর গতিপথ নিয়ে আবার নতুন করে ভাবতে শুরু করেছেন তদন্তকারীরা।
এ বিষয়ে মঙ্গলবার থাই বিমানবাহিনীর মুখপাত্র এয়ার ভাইস মার্শাল মনটল সুকর্ন জানান, তারা তাদের রাডারে যে বিমানটির অত্বিত্ব পেয়েছিল তা ছিল মালাক্কা প্রণালীতে। তবে সেটি মালয়েশিয়ার ওই বিমানটি কিনা তা সম্পর্কে তারা নিশ্চিত নন। এর আগে একই জায়গায় ফ্লাইট ৩৭০কে শেষ দেখা গেছে বলে মালয়েশিয়াও জানিয়েছিল।
কিন্তু কেনো এই তথ্য এতদিন জানানো হলো না এমন প্রশ্নের জবাবে মনটল বলেন, ‘কারণ আমরা এটির দিকে মনোযোগ দেইনি। আমাদের বিমান বাহিনী কেবল দেশের জন্য হুমকি হতে পারে এমন বিষয়ে ওপরই খেয়াল রাখে। আর যে বিমানের সংকেত আমরা পেয়েছিলাম তা থাইল্যান্ডের আকাশসীমায় প্রবেশ করেনি।’
এদিকে থাইল্যান্ড দ্রুত এই তথ্য প্রচার না করায় সমালোচনা শুরু হয়েছে চারদিকে। কারণ মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষ এই তথ্য জানতে পারলে তাদের অনুসন্ধান কাজে সাহায্য হতো বলে বলে করা হচ্ছে। নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাডারের এই তথ্যগুলো আগে পেলে ভারত মহাসাগর ও দক্ষিণ চীন সাগরে যে লক্ষ লক্ষ মাইল জুড়ে অনুসন্ধান চলছে তা না করে অনেক সময় বাঁচতো।
থাই কর্তৃপক্ষের সমালোচনা করে এ বিষয়ে বিমান চলাচল বিষয়ক পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান লিহামের প্রধান স্কট হ্যামিলটন বলেন, ‘এটা আশ্চর্যের বিষয় যে তারা আগে সামনে আসেনি। অনুসন্ধানকাজে সাহায্য করার ক্ষেত্রে এখন অনেক দেরি হয়ে গেছে।’
অন্যদিকে বিমানটির খোঁজ নিয়ে আশা ছেড়ে দিচ্ছে অনেকে। ইতোমধ্যে অনেক দেশের অনুসন্ধানকারীরা ফিরে গেছে দেশে। যদিও নিখোঁজ বিমানটিতে থাকা যাত্রীদের সন্ধানে এখনো আশা ছাড়ছেন না তাদের স্বজনরা। এরইমধ্যে অনুসন্ধান প্রক্রিয়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে তারা। মালয়েশীয় কর্তৃপক্ষ বিমানটি সম্পর্কে আরো সঠিক তথ্য না দিতে পারলে অনসনে যাবেন বলে হুমকি দিয়েছে বিমানটির নিখোঁজ যাত্রীদের স্বজনরা।
উল্লেখ্য, গত ৮ মার্চ মধ্যরাতে কুয়ালালামপুর থেকে বেইজিং যাওয়ার পথে ২৩৯ জন যাত্রী নিয়ে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয় মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের বিমানটি।