ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ কাঁঠালের মধুর রসে মন ভরে না এমন মানুষ কমই আছে। স্বাদ ও সুগন্ধের কারণে এই ফলটি আমাদের জাতীয় ফল। তবে কাঁঠালের শুধু কোষই নয়, খাওয়া হয় এর বিচিও। ভেজে, রান্না করে, হালুয়া বানিয়ে নানাভাবেই খাওয়া হয়। কাঁঠালের বিচিও স্বাদে অনন্য। এখানেই শেষ নয়। এর রয়েছে অসংখ্য উপকারিতা।
কাঁঠালের বিচিতে উপস্থিত ফাইবার কোষ্ঠ্যকাঠিন্যের মতো সমস্যা দূর করে। সেইসঙ্গে কোলোনের কর্মক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়। তাই হজমশক্তি বৃদ্ধি করতে চাইলে প্রতিদিন খাবারের কাঁঠালের বিচি।
শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি মেটাতে নিয়মিত কাঁঠালের বিচি খাওয়া শুরু করতে পারেন। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে কাঁঠালের বিচিতে যে পরিমাণে প্রোটিন থাকে, তা দেহের দৈনিক চাহিদা মেটানোর জন্য যথেষ্ট। শুধু তাই নয়, পেশীর গঠনের উন্নতি ঘটাতে এবং মেটাবলিজম রেট বাড়াতে এই প্রকৃতিক উপাদানটির কোনো বিকল্প হয় না বললেই চলে।
বর্ষাকালে নানাবিধ সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচতে কাঁঠালের বিচি আপনাকে দারুণভাবে সাহায্য করতে পারে। এতে উপস্থিত একাধিক অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল এলিমেন্ট জীবাণুদের দূরে রাখার মধ্যে দিয়ে নানাবিধ ফুড-বন এবং ওয়াটার বন ডিজিজের প্রতিরোধ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়।
পরিমাণমতো কাঁঠালের বিচি নিয়ে প্রথমে কিছুটা সময় রোদে শুকিয়ে নিন। তারপর সেগুলি বেটে নিয়ে চটজলদি গুঁড়া করে ফেলুন। এই গুঁড়া খেলে নিমেষে বদ-হজম এবং গ্যাস-অম্বলের মতো সমস্যা কমে যায়। সেইসঙ্গে কনস্টিপেশনের মতো সমস্যা কমাতেও সাহায্য করে। এতে উপস্থিত ডায়াটারি ফাইবার এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
কাঁঠালের বিচিতে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় প্রোটিন এবং অন্যান্য উপকারি মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টস, যা মস্তিষ্কের অন্দরে ক্যামিকেল ব্যালেন্স ঠিক রাখার মধ্যে দিয়ে স্ট্রেস কমাতে বিশেষ ভূমিকা নেয়।
কাঁঠালের বিচিতে উপস্থিত ভিটামিন এ, দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটানোর পাশাপাশি একাধিক চোখ সম্পর্কিত সমস্যাকে দূরে রাখতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই চোখের সমস্যা দূর করতে আজ থেকেই কাঁঠালের বিচিকে সঙ্গে রাখতে শুরু করুন।
কাঁঠালের বিচিতে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় আয়রন, যা খুব অল্প দিনেই রক্ত স্বল্পতার মতো সমস্য়া দূর করতে দারুণভাবে সাহায্য করে থাকে।
ত্বক তরতাজা এবং সুন্দর রাখতে ব্যবহার করুন কাঁঠালের বিচি। এক্ষেত্রে পরিমাণমতো বিচি নিয়ে প্রথমে গুঁড়া করে নিন। তারপর সেটি অল্প পরিমাণ দুধের সঙ্গে মিশিয়ে একটা পেস্ট বানিয়ে ফেলুন। এই পেস্টটি প্রতিদিন মুখে লাগালে দারুণ উপকার পাওয়া যায়। আর যদি হাতের কাছে মধু থেকে থাকে, তাহলে সেটিও এই পেস্টটি বানানোর সময় কাজে লাগাতে পারেন। দেখা গেছে পেস্টটির সঙ্গে মধু যোগ করলে ত্বকের ঔজ্জ্বল্য আরো বৃদ্ধি পায়।