ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ সহিংসতা, বোমা হামলা, ভোট দানে বাধার মাঝে পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ চলছে। দেশটির নির্বাচনের ইতিহাসে রেকর্ড ৩ লাখ ৭০ হাজার সেনাসদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। এর মাঝে দেশজুড়ে সংঘর্ষ, গোলাগুলি, আত্মঘাতী বোমা হামলার পাশাপাশি নারী ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যেতে বাধা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
দেশটির বেলুচিস্তান প্রদেশের রাজধানী কুয়েটায় আত্মঘাতী বোমা হামলায় দুই পুলিশ সদস্যসহ ৩১ জন নিহত এবং ৪০ জন আহত হয়েছেন। এছাড়া আফগান সীমান্তের খাইবার পাখতুনখাওয়া একটি ভোটকেন্দ্রে প্রতিদ্বন্দ্বী গোষ্ঠীগুলোর গোলাগুলিতে একজন নিহত ও দু'জন আহত হয়েছেন। বেলুচিস্তানের একটি ভোটকেন্দ্রে গ্রেনেড বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন।
বুধবার সকাল ৮টা থেকে দেশটির জাতীয় পরিষদের ২৭২ আসনে প্রতিনিধি নির্বাচনে ভোট দিচ্ছেন ১০ কোটির বেশি ভোটার। দেশটির সাবেক ক্রিকেট তারকা ইমরান খান ও তিনবারের প্রধানমন্ত্রী কারাবন্দি নওয়াজ শরিফের ভাই শেহবাজ শরিফের মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে, লাহোর, পাঞ্জাবসহ বেশ কিছু শহরে নারী ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। ইমরানের রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফ (পিটিআই) লাহোরে নারী ভোটারদের হয়রানি করার অভিযোগ আনার পর সেখানে সাময়িক ভোট স্থগিত রাখা হয়।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডন বলছে, পিটিআইর কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, নারী ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যেতে বাধা দিয়েছে পুলিশ। তাদের ভোট নিবন্ধন নেই বলে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে।
তবে এ দৃশ্য শুধুমাত্র লাহোরে আটকে নেই। বিবিসি উর্দু বলছে, পাঞ্জাবের ধুর্নাল, চকওয়াল এলাকার ভোটকেন্দ্র থেকেও নারী ভোটারদের ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। ভোটকেন্দ্রে পুরুষ ভোটাররা নারীদের বলেন, নারীদের ভোট দেয়া ইসলাম সমর্থন করে না।
২০১৫ সালে ডন ‘ধুর্নাল- যে গ্রামের নারীরা ভোট দিতে পারেন না’ শিরোনামে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এবারেও ধুর্নালের প্রায় চার হাজার নারী ভোটার রয়েছেন। কিন্তু এবারও তারা ভোট দিতে পারছেন না।
ডন বলছে, অতীতের মতো বুধবারের নির্বাচনেও পাঞ্জাবের গোঘানওয়ালি, মানদি বাহাউদ্দিন এলাকার নারী ভোটারদের ভোটদানে বাধা দেয়া হয়েছে।
এদিকে, আফগান সীমান্ত থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে পেশওয়ারের আচিনি এলাকায় নারীদের ভোটদানে বাধা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এই এলাকার নারী ভোটাররা বলেছেন, নারীদের ভোট দেয়া সংস্কৃতিবিরোধী।
নারীদের ভোট দিতে দেয়া হচ্ছে এমন অভিযোগ নির্বাচন কমিশনে জমা দিয়েছে পাকিস্তান পিপলস পার্টি। ভোটকেন্দ্রের ভেতরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা নারীদের ভোট দিতে বাধা দিয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করেছে দলটি।