ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ ‘আপনি ইন্টারনেটে পর্নোগ্রাফি দেখেন। সেক্স চ্যাটও করেন। আমাদের কাছে প্রমাণ আছে। এখনই ২২৫০ ডলার দিন, না হলে আপনার সেক্স চ্যাটের ভিডিও ক্লিপ আপনার পরিচিতদের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়া হবে।’ অফিস থেকে বাড়ি ফেরার পর ই-মেইলের ইনবক্সে এমনই একটা মেইল দেখে চমকে উঠেন ভারতের এক বাসিন্দা।
নিজেকে রাসেল লেভেল বলে পরিচয় দিয়ে অমিতাভকে (ছন্দনাম) ই-মেইলে জানায়, তার কম্পিউটার ও মেইল অ্যাকাউন্ট ‘হ্যাক’ করা হয়েছে। ওই ব্যক্তির দাবি, গত কয়েক মাস ধরে অমিতাভের সমস্ত অনলাইন কাজকর্মের তথ্য জানেন। তিনি যত পর্নোগ্রাফি দেখেছেন বা সেক্স চ্যাট করেছেন তার ভিডিও ক্লিপ রয়েছে তাদের হাতে। টাকা না দিলে দুই-একদিনের মধ্যে এসব প্রকাশ করা হবে।
রীতিমতো ব্ল্যাকমেইল করে অভিনব এ পদ্ধতিতে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন সাইবার অপরাধীরা। ঘটনাটি ভারতে হলেও সারাবিশ্বেই এদের কর্মকাণ্ড রয়েছে।
অমিতাভ ওই ই-মেইল দেখে প্রথমে আতঙ্কিত হলেও পরে লালবাজারে সাইবার অপরাধ বিভাগে অভিযোগ করেন। লালবাজারের গোয়েন্দারা জানান, রাসেল লেভেল নামের যে মেইল এসেছিল তা যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসেছে। পরে দেখা যায়, ওই মেইলের প্রক্সি সার্ভার দিল্লিতেও রয়েছে।
তদন্তকারী অফিসারদের ধারণা, বিশ্ব জুড়ে এ নতুন ধরনের সাইবার অপরাধ জাল বিছানো শুরু করেছে তারা। কারণ, ইন্টারনেটের মাধ্যমে পর্নোগ্রাফি দেখা ও সেক্স চ্যাটের প্রবণতা আগের থেকে অনেক বেড়েছে। সেই সুযোগকটাই কাজে লাগাচ্ছে সাইবার অপরাধীরা।
টেলিফোনে ডেবিট কার্ডের পিন অথবা কার্ডের নম্বর চেয়ে টাকা হাতানো বা ‘আপনার লক্ষাধিক টাকার লটারি লেগেছে’ বলে মেইল করে অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা নেয়ার পদ্ধতি পুরনো হয়ে গিয়েছে। ফলে জালিয়াতেরা এখন নিত্য নতুন পদ্ধতিতে প্রতারণা করছে।
তদন্তকারী অফিসাররা জানান, এ ধরনের মেইল পেলে ফাঁদে পা না দিয়ে সঙ্গে সঙ্গে থানায় অভিযোগ দায়ের করা উচিত। সেই সঙ্গে ই-মেইল থেকে শুরু করে সব ধরনের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড নিয়মিত পরিবর্তন করা দরকার। এছাড়া সন্দেহজনক ওয়েবসাইটে না যাওয়াই ভালো।