ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ ‘বাস্তব কর্ম জীবনের সাথে সম্পৃক্তি ছাড়া শিক্ষা অর্থহীন। বড় বড় সার্টিফিকেট বাস্তবে কোন কাজে লাগে না। কারিগরি দক্ষতা থাকলে তা কাজে লাগে। সকল মানুষকে দক্ষতা দিতে হবে। আমাদের তরুন জনশক্তি হচ্ছে সবচেয়ে বড় সম্ভাবনা। নতুন প্রজন্মের সকলকে দক্ষতা দিতে হবে। কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়াতে হবে।’
শুক্রবার রাজধানীর আর্মি গলফ ক্লাবের গলফ গার্ডেন মিলনায়তনে বিশ্ব শিক্ষক দিবস-২০১৮ উপলক্ষে আলোচনা ও বরেণ্য শিক্ষক সম্মাননা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা কল্যাণ সমিতি এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, শিক্ষকদের হাতেই দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে গড়ে তোলার দায়িত্ব, তারা নতুন প্রজন্মকে দক্ষ ও যোগ্য মানুষ হিসেবে তৈরি করবেন। মানুষ গড়ার মূল কাজটি তারাই করছেন। শিক্ষকদের তাই যথাযথ সন্মান ও মর্যাদা দিতে হবে। বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষে সকল শিক্ষককে অভিনন্দন জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, দক্ষ মানব সম্পদ তৈরির মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নেয়ার দায়িত্ব শিক্ষককদেরকে নিতে হবে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালে যখন আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে তখন দেশে কারিগরি শিক্ষা একেবারেই অবহেলিত ছিল। এ খাতে বাস্তবসম্মত কোন উদ্যোগ অতীতে নেয়া হয়নি। আমরা কারখানার মালিক, বিনিয়োগকারী ও অভিভাবকদের সাথে আলাপ করে এ খাতে বিভিন্ন সংস্কার কার্যক্রম গ্রহন করি। কারিগরি শিক্ষা যুগোপযোগী করতে নতুন কারিকুলাম ও চাহিদা মোতাবেক ট্রেড চিহ্নিত করে শিক্ষার্থীদের আগ্রহী করে তোলা হয়। এখন ভর্তি হার ১৪ ভাগের অধিক। ২০২০ সালে তা ২০ ভাগে উন্নীত হবে।
তিনি বলেন, শিক্ষকদের উপযুক্ত করে তোলার জন্য কারিগরি শিক্ষার ক্ষেত্রে যে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে, তা অন্য কোন সেক্টরে দেয়া হয়নি। বড় সংখ্যায় শিক্ষকদের বিদেশে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। শিক্ষকদের মানোন্নয়নে ৪২১ জন শিক্ষককে সিঙ্গাপুরে নানিয়ান পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হয়েছে। আরো ১১৫০ জন ধাপে ধাপে এ প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। চীনের গুয়াংজুতে ৫৮১ জন শিক্ষক প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। এত বিপুল সংখ্যক শিক্ষককে একসাথে আর কোন সেক্টরে বিদেশে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়নি।
শিক্ষামন্ত্রী আরো বলেন, চীন সরকার বাংলাদেশের কারিগরি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দিচ্ছে। এ বছর ৬২২ জন শিক্ষার্থী চীনের বৃত্তি নিয়ে কারিগরি শিক্ষা গ্রহন করতে চীন যাচ্ছে। ২০১৭ সালে এ প্রোগ্রাম-এর আওতায় ৩০৮ জন শিক্ষার্থী চীনে যায়।
বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা কল্যাণ সমিতির সভাপতি মো. নাজমুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এ কে এম জাকির হোসেন ভূঞা, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব নাজমুল হক খান, কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. মোস্তাফিজুর রহমান এবং টেকনিক্যাল এডুকেশন কনসোর্টিয়াম অব বাংলাদেশের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল আজিজ।
অনুষ্ঠানে ৫ জন বরেণ্য শিক্ষককে সম্মাননা প্রদান করা হয়।