DMCA.com Protection Status
title="৭

শহিদুল আলম আমার সরকারের বিরুদ্ধে ভূয়া নিউজ ছড়িয়েছিলোঃরয়টার্সকে শেখ হাসিনা।

 

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ  গত আগস্টে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আলোকচিত্রী শহিদুল আলম ‘ভুয়া নিউজ’ ছড়ানোর সরকার বিরোধী প্রপাগান্ডা চালিয়েছেন বলে রয়টার্সের সঙ্গে এক বিশেষ সাক্ষাতকারে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আগস্টে সড়ক দূর্ঘটনায় দুই শিক্ষার্থী নিহতের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সময় আল জাজিরাকে দেয়া সাক্ষাতকারে সরকারের সমালোচনা করেন আলম। এরপরপরই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার গ্রেপ্তারে বাংলাদেশের বাক-স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে ও আন্তর্জাতিকভাবে তার মুক্তির দাবী ওঠে।

গত মাসে নিউইয়র্কে রয়টার্সের সঙ্গে দেয়া সাক্ষাতকারে শেখ হাসিনা বলেন, ‘শহিদুল আলম আলম আন্দোলনের পরিস্থিতে ব্যবহার করতে চেয়েছিলো। আমরা শিশুদের রক্ষা করতে চেয়েছি কিন্তু তারা শিশুদের ব্যবহার করতে চেয়েছে। ভুয়া খবর প্রচার করতে শুরু করে। এটি কিভাবে মেনে নেয়া সম্ভব।’শেখ হাসিনা আরো বলেন, ‘আলমের আংকেল সাবেক সরকারের মন্ত্রী আবদুস সাত্তার খান বাংলাদেশে স্বাধীনতার বিরুদ্ধে গিয়ে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের সঙ্গে জোট বেঁধেছিলো। আপনারা জানেন, রক্ত মাঝে মাঝে কথা বলে।’

 

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, আলম ও তার পরিবারের সদস্যরা এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন। অন্যদিকে শেখ হাসিনাও এর কোন যথাযোগ্য প্রমাণ দিতে পারেন নি। এছাড়া স্বাধীনতা যুদ্ধ বর্তমানে বাংলাদেশে একটি সংবেদনশীল ইস্যু। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এই ইসুতে ‘প্রোপাগান্ডা’ ছড়ানোর অভিযোগে ১৪ বছরের কারাদন্ডের কথা উল্লেখ আছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আতাউর রহমান বলেন, ‘আমরা একটি উল্টো ব্যবস্থাপনার মধ্যে বসবাস করছি, যতক্ষণ না আপনি নিজকে নির্দোষ প্রমাণ করতে পারবেন ততক্ষণ পর্যন্ত আপনি দোষি। শহিদুলের মত পরিণতির ভয়ে মানুষ এখন আর বিতর্কে জড়াতে চায় না।’

আলমের ভাতুস্পুত্র দিলরুবা করিম বলেন, ‘হাসিনার মন্তব্য পুরোপুরি নৃশংস ও তথাকথিত গণতান্ত্রিক দেশের নেত্রীর মত নয়।’ আলমের পরিবার জানায়, ‘সরকার বিচারের আগেই বিচার সম্পন্ন করে নিয়েছে।’ এছাড়া তথ্য প্রযুক্তি আইনের বিতর্কিত যে ধারায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তার তীব্র সমালোচনা করে আসছে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।

শহিদুল আলমের আইনজীবী শাহদীন মালিক বলেন, আল জাজিরাকে দেয়া শহিদুলের সাক্ষাতকারের মন্তব্যগুলো ফৌজদারি অপরাধের আওতায় পড়ে না। আর শহিদুল আলমের দাদার ভাইকে নিয়ে হাসিনার মন্তব্য ‘সামন্ততান্ত্রিক’ বিচার ব্যবস্থার ইঙ্গিত।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৪ সালে বিরোধী দল নির্বাচন বয়কটের পরও পুনরায় ক্ষমতায় বহাল থাকেন হাসিনা। তার কর্তৃত্ববাদী শাসন নিয়ে সমালোচনার সৃষ্টি হলেও ডিসেম্বরে তৃতীয়বারের মত নির্বাচন করবেন তিনি। হাসিনা সরকার এমন অনেক আইন প্রণয়ন করেছে যেখানে দেশের বিরুদ্ধে ‘অপপ্রচার’ চালালে কারাদন্ডের বিধান রয়েছে। অন্যদিকে তার রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া দুর্নীতির অভিযোগে কারাবাস করছেন। তিনি বলছেন, ‘আগামী নির্বাচনে তার অংশগ্রহণ ঠেকাতেই এই সাজা দেয়া হয়েছে।’

সূত্রঃ রয়টার্স।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!