ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের নাম বদল করে ‘বাংলা’ রাখার প্রস্তাব দিল্লিতে পাঠানোর বেশ কয়েক মাস পরে তা নিয়ে মুখ খুলেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।
এক ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, রাজনীতির কারণেই বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার পশ্চিমবঙ্গের নাম পাল্টাতে দিচ্ছে না।
তিনি লিখেছেন, ‘নিজেদের রাজনৈতিক সুবিধার দিকে নজর দিয়ে বিজেপি প্রায় প্রতিদিনই ঐতিহাসিক স্থান বা সংস্থাগুলির নাম বদল করে দিচ্ছে একতরফাভাবে। স্বাধীনতার পর থেকে অনেক রাজ্য আর শহরের নাম বদল হয়েছে। কিন্তু বাংলার ক্ষেত্রে একেবারে অন্য মনোভাব।’
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় কয়েক মাস আগে সর্বসম্মতভাবে প্রস্তাব পাশ করা হয়েছিল যে রাজ্যের নতুন নাম হোক ‘বাংলা’।
এর আগে বাংলা, ইংরেজি আর হিন্দিতে তিনটি পৃথক নাম রাখার প্রস্তাব গিয়েছিল। সেই প্রস্তাবে রাজ্যের নাম বাংলায় দেয়া হয়েছিল ‘বাংলা’, ইংরেজিতে ‘বেঙ্গল’ আর হিন্দিতে ‘বঙ্গাল’। কিন্তু এক রাজ্যের তিনটি নাম হতে পারে না বলে আপত্তি তুলেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। পরে বিধানসভায় নতুন করে প্রস্তাব এনেছিল রাজ্য সরকার। তিনটি ভাষাতেই প্রদেশের নাম ‘বাংলা’ রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।
রাজ্যের নাম বদলের প্রস্তাব দিল্লির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে যাওয়ার পরে তারা এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতামত চেয়েছিল। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের নোটে আপত্তি তুলে লিখেছে, প্রতিবেশী বাংলাদেশের নামের সঙ্গে ‘বাংলা’ শব্দটি বহুল পরিচিত। তাই পশ্চিমবঙ্গের নামও যদি ‘বাংলা’ দেয়া হয়, তাহলে বিভ্রান্তি ছড়ানোর আশঙ্কা আছে।
মমতা ব্যানার্জি তার পোস্টে এ প্রসঙ্গেও মন্তব্য করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘অবিভক্ত বাংলার রাজধানী ছিল কলকাতা। ভারত আর বাংলাদেশ দুই দেশেরই জাতীয় সঙ্গীত লিখেছেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। আমরা যেমন ভারতকে ভালবাসি, তেমনই বাংলাদেশকেও ভালবাসি। কিন্তু একই ধরনের শুনতে দুটি নাম নিয়ে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। ভারত আর প্রতিবেশী রাষ্ট্র (পাকিস্তান) দুই জায়গাতেই তো পাঞ্জাব রয়েছে।’
যদিও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এই নোটের ব্যাপারে এখনও কিছু জানানো হয়নি এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও যে পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে নাম বদলের প্রস্তাব নাকচ করে দেয়নি, সেটাও জানিয়েছেন মমতা ব্যানার্জি।
কিন্তু তিনি সরাসরি বিজেপির প্রসঙ্গে লেখায় প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে দলটির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ মন্তব্য করেছেন যে নাম বদল করেই শুধু উন্নয়ন করা যায় না।
তবে যখন নাম বদলের প্রস্তাব পাশ হয়েছিল, তখন তাতে সব দলই সমর্থন জানিয়েছিল। এখন বিজেপি বিরোধিতার করলেও মমতা ব্যানার্জি অবশ্য পাশে পেয়েছেন কংগ্রেস আর বামপন্থীদের। তারা বলেছে আগের মতোই তারা রাজ্যের নাম বদলের সরকারি প্রস্তাবের সঙ্গেই রয়েছে।