ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ কার্গো মুভমেন্টের (পণ্য পরিবহন) জন্য ভারত শিগগিরই পূর্নদমে চট্টগ্রাম এবং মোংলা বন্দর ব্যবহার শুরু করবে।
মঙ্গলবার এই খবর দিয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস।
পত্রিকাটি জানায়, এ ছাড়াও প্রায় ৩০০ কোটি রুপি ব্যয়ে পিআইডব্লিউটিটি নামের একটি চুক্তির অংশ হিসেবে কুশিয়ারা নদীর ৩০৯ কিলোমিটার দীর্ঘ আশুগঞ্জ-জাকিগঞ্জের অংশ এবং যমুনা নদীর ১৪৬ কিলোমিটার দীর্ঘ সিরাজগঞ্জ-দইখোওয়া অংশে সারাবছর যাতে নৌযান চলাচল করতে পারে, সেই লক্ষ্যে নদী শাসনেও ভারত ও বাংলাদেশ একমত হয়েছে।
সিরাজগঞ্জ-দৈখোলা অংশটি গঙ্গা (ন্যাশনাল ওয়াটারওয়ে-১) এবং ব্রহ্মপুত্রের (ন্যাশনাল ওয়াটারওয়ে-২) মধ্যে নৌযান চলাচলে সহায়ক হবে। এবং একই সঙ্গে এই দুটি নৌপথ বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে বৃহৎ আকারের ভারতীয় জাহাজ আসামের সাদিয়া এবং উত্তর প্রদেশের বেনারসের মধ্যে কানেকটিভিটি নিশ্চিত করবে।
পত্রিকাটির রিপোর্টে আরো বলা হয়, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় উন্নত অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়ন বা দূরপ্রাচ্য নীতির অংশ হিসাবে কেন্দ্রীয় সরকার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় এবং বাংলাদেশের মতো প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে চার হাজার কিলোমিটারে বিস্তৃত জলপথ প্রকল্পের একটি নেটওয়ার্ক উন্নয়নে কাজ করছে।
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সাতটি রাজ্য ভারতের অবশিষ্ট অংশের সঙ্গে কানেকটিভিটি বা নেটওয়ার্ক গড়তে পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়িতে প্রায় ২২ কিলোমিটার আয়তনের একটি সংকীর্ণ ভূমির ওপর নির্ভরশীল। নেপালী এবং বাংলাদেশ ওই করিডরের উভয় পাশে অবস্থিত।
গত ২রা জানুয়ারি নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় পঞ্চদশ ফিন্যান্স কমিশনের কাছে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প সম্পর্কিত একটি উপস্থাপনা পেশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, নেটওয়ার্কটি বাণিজ্যকে আরো শক্তিশালী করার জন্য ভারতের ‘চরম প্রান্ত’কে ‘ভারতের হৃদয়’ এর সঙ্গে যুক্ত করবে।
নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, আমরা বর্তমানে অত্যন্ত সংকুচিত অবস্থায় থাকা শিলিগুড়ি করিডরকে কি করে বিস্তৃত করা যায়, সেদিকে এগুচ্ছি এবং কার্গো ও যাত্রী চলাচলের জন্য একটি বিকল্প তৈরি করছি।
ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ প্রটোকল অন ইনল্যান্ড ওয়াটার ট্রানজিট অ্যান্ড ট্রেড (পিআইডব্লিউটিটি) এর আওতায় উভয় দেশের মধ্যে চিহ্নিত নৌপথগুলো ব্যবহার করার জন্য ভারতীয় ও বাংলাদেশি জাহাজগুলোকে অনুমতি দেয়া হয়েছে।
মিয়ানমারের সঙ্গেও চুক্তি ও উন্নয়ন চলছে: মিয়ানমারে, উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলোর জন্য আরেকটি বিকল্প পথ তৈরির জন্য ভারত ৯০৪ কোটি টাকা ব্যয়ে কালাদান মাল্টি-মডল ট্রানজিট ট্রান্সপোর্ট প্রকল্পে কাজ করছে। এটি মিয়ানমারের সিটিওয়ে বন্দরকে উত্তর-পূর্ব ভারতকে যুক্ত করবে। এটি উত্তর-পূর্বের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদানের জন্য সমুদ্রপথকে আরো উন্মুক্ত করে দেবে বলে আশা করা হচ্ছে। শিপিং মন্ত্রণালয় তার উপস্থাপনায় বলেছে, এটি খুলে দেয়ার পরে এটি শিলিগুড়ি করিডরের ওপর চাপ আরো কমিয়ে দেবে।
ভারত ২১০৫ সালের এপ্রিল মাসে নেপালের প্রধানমন্ত্রী খাদগা প্রসাদ শর্মা ওলির ভারত সফরকালে নেয়া সিদ্ধান্ত মতে ভারত ও নেপালের মধ্যে অভ্যন্তরীণ নৌপথ সংযোগ স্থাপনেরও চেষ্টা করছে।