ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ শহীদ আসাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা বলেছেন, ৬৯-এর পথ ধরে স্বৈরাচার-সাম্প্রদায়িকতা-শোষণ-বঞ্চনার বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে। গণতন্ত্র- ভোটাধিকার ও সাম্প্রদায়িকতা-সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী সংগ্রামে শহীদ আসাদ এখনও প্রেরণা জোগায়।
রোববার ছিল শহীদ আসাদ দিবস। এ উপলক্ষে রাজনৈতিক সামাজিক দলের ব্যানারে ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনে আসাদের স্মৃতিস্তম্বে ফুল দেয়াসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়। এ পর বক্তব্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক সামাজিক নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন। নেতৃবৃন্দ সেখানে শহীদ আসাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন।
স্মৃতিস্তম্ভ চত্বরে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাম জোটের নেতারা বলেন, ১৯৬৯ সালের গণআন্দোলনের পথ চলার নায়ক শহীদ আসাদের রক্তের পথবেয়ে ২৪শে জানুয়ারি পূর্বপাকিস্তানে লাখো মানুষের যে গণভ্যুত্থান সৃষ্টি হয়- তা পাকিস্তানী সামরিক স্বৈরাচার জেনারেল আইয়ুব খানের তখত তাউস কাঁপিয়ে দিয়েছিল- তার পতনের দরজা খুলে গিয়েছিল। ৭০-এর নির্বাচন, ৭১-এর সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মধ্যদিয়ে সাম্রাজ্যবাদের মদদপুষ্ট পাকিস্তানী বাইশ পরিবারের একচেটিয়া শোষণ ও আমলাতান্ত্রিক পাকিস্তান রাষ্ট্রকে খতম করে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্ম হয়। জনগণের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা পায়।
কিন্তু স্বাধীনতার ৪৮ বছর পর একই ধরনের হাজার হাজার পুঁজিপতির শোষণ ও আমলাতান্ত্রিক রাষ্ট্র এদেশের কোটি-কোটি মানুষের উপর শোষণ-নির্যাতন চালাচ্ছে। মানুষ ভোট ও ভাতের অধিকার থেকে বঞ্চিত। তাই আজও ১৯৬৯-এর শহীদের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়নি। তাই ৬৯-এর পথ ধরে স্বৈরাচার-সাম্প্রদায়িকতা-শোষণ-বঞ্চনার বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে। উপস্থিথ ছিলেন জোটের সমন্বয়ক ও সিপিবি ’র সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহ আলম, সিপিবি’র সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বাসদ (মার্কসবাদী)’র নেতা শুভ্রাংশু চক্রবর্তী, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক হামিদুল হক প্রমুখ।
৬৯’র গণঅভ্যুত্থানের শহীদ আসাদ দিবসে বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির পক্ষ থেকে রোববার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে আসাদ স্মৃতিসৌধে পুস্পস্তবক অর্পণ করা হয়। পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বহ্নিশিখা জামালী, মোফাজ্জল হোসেন মোস্তাক, সজীব সরকার রতন, পার্টির ঢাকা মহানগর কমিটির নেতা ইমরান হোসেন ও জোনায়েত হোসেনসহ কেন্দ্রীয় মহানগর নেতৃবৃন্দ শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। পুস্পস্তবক অর্পণ করার পর নেতৃবৃন্দ শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ১ মিনিট নীরবতা পালন করেন তারা।
অপরদিকে ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম নায়ক শহীদ আসাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে প্রয়োজন মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ভিত্তিতে জাতীয় ঐক্য বলে অভিমত প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া। তিনি বলেন, শহীদ আসাদের রক্তদানই আইয়ুব শাহীর পতনের পথ তৈরি করে। এই গণঅভ্যুত্থানের পথ ধরেই স্বাধীনতা সংগ্রাম ত্বরান্বিত হয়। নয়াপল্টনস্থ যাদু মিয়া মিলনায়তনে শহীদ আসাদ দিবস স্মরণে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ ঢাকা মহানগর আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। দলের ঢাকা মহানগর সভাপতি মো. শহীদুননবী ডাবলু'র সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশগ্রহন করেন এনডিপি মহাসচিব মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা, ন্যাপ ভাইস চেয়ারম্যান স্বপন কুমার সাহা, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. কামাল ভুইয়া, নগর সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম, যুব ন্যাপ যুগ্ম সমন্বয়কারী আবদুল্লাহ আল কাউছারী প্রমুখ।