DMCA.com Protection Status
title="৭

শিগগিরই ছাত্রদলের নতুন কমিটি, যারা আসছেন নেতৃত্বে ( বিশেষ প্রতিবেদন )

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ  একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর এখন বিএনপির মূল লক্ষ্য দল এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলো গোছানো। সব পর্যায়েই দীর্ঘদিন ধরে থাকা অপূর্ণাঙ্গ কমিটিগুলো হালনাগাদ বা নতুন কমিটি করতে চায় দলটি। সম্প্রতি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকীর আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির দু’জন সদস্য কাউন্সিলের মাধ্যমে দলের নেতা নির্বাচনের কথা বলেছেন। তবে বিএনপির আন্দোলন সংগ্রামের প্রধান হাতিয়ার ছাত্রদলের নতুন কমিটি গঠন নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি। একটি পক্ষ ডাকসু নির্বাচনের আগে নতুন কমিটি করার পক্ষে। অন্য পক্ষ বলছে, ডাকসু নির্বাচনের আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল কমিটিগুলো পূর্ণাঙ্গ করা হোক। তবে কাউন্সিলের মাধ্যমে ছাত্রদলের দ্রুত নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি চান সংগঠনটির কেন্দ্রীয় ও তৃণমূল নেতারা। এ দিকে ছাত্রদলের নতুন কমিটি গঠনে বিএনপির হাইকমান্ড তৎপর রয়েছে। খুব দ্রুতই নতুন কমিটি গঠন করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন বিএনপির একাধিক শীর্ষ নেতা। 

২০১৪ সালে ঘোষিত ছাত্রদলের বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হয় ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর। এখন অপেক্ষাকৃত ‘কম বয়সী’র হাতে ছাত্রদলের নতুন নেতৃত্ব দিতে চান বিএনপির হাইকমান্ড। সম্প্রতি বিএনপি ও ছাত্রদলের একাধিক শীর্ষ নেতার সাথে কথা বলে এসব জানা গেছে। কেননা নতুন কমিটি হচ্ছে, হবে করেও অপেক্ষার শেষ নেই ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের। নতুন কমিটি হচ্ছে-হবে করেই দুই বছর মেয়াদের কমিটি পাঁচ বছরে পা রেখেছে। মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের ওপর সংগঠনের শীর্ষ অনেক নেতা অনাস্থা জানিয়েছেন অনেক আগে। বিএনপির প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত ছাত্রদলের নতুন কমিটি না হওয়ায় পদপ্রত্যাশী নেতাকর্মীদের মাঝে যেমন হতাশা ও চাপা ক্ষোভ বাড়ছে তেমনি নতুন কর্মী-সমর্থকও হারাচ্ছে সংগঠনটি। 
সম্প্রতি নতুন কমিটি গঠনের একটি সম্ভাবনা তৈরি হলেও অদৃশ্য কারণে তা ঝুলে গেছে। তবে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসানসহ সিনিয়র কয়েকজন নেতা বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সাথে নয়াপল্টন কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করে নতুন কমিটি দেয়ার দাবি জানিয়েছেন। প্রত্যুত্তরে বিএনপির শীর্ষ দুই নেতা আশ্বাসও দিয়েছেন।

২ বছরের কমিটি ৫ বছর : ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে। গত বছরের ১ জানুয়ারি ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সামনে রেখেও নতুন কমিটির দাবিতে সোচ্চার হয়েছিলেন ছাত্রদলের নেতারা। বর্তমান কমিটির বেশির ভাগ নেতার ছাত্রত্ব না থাকাসহ বিভিন্ন কারণে এ কমিটি গঠনের পর থেকেই ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে। বর্তমান কমিটির শীর্ষ তিনজন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটিতে পদ পেয়েছেন। সদ্য অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থী হওয়ার জন্য জোর লবিংও করেন ছাত্রদলের শীর্ষ তিন নেতা। এসব কারণেই ছাত্রদল নেতারা সর্বস্তরে নতুন কমিটি গঠনের দাবি জানিয়ে আসছেন। 

ছাত্রলীগের চেয়ে পিছিয়ে ছাত্রদল : ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের চেয়ে কমিটি গঠনের ধারাবাহিকতায় পিছিয়ে ছাত্রদল। ২০১৪ সালে ছাত্রদলের কমিটি হওয়ার পর ছাত্রলীগের দু’টি নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন হয়েছে। কিন্তু মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি দিয়েই চলছে ছাত্রদল। এ নিয়ে সংগঠনের নেতাকর্মীরা প্রশ্ন তুলে ছাত্রদলকে গতিশীল করার কথা বলছেন। 
ছাত্রদলের নতুন কমিটির শীর্ষ পদ পেতে আগ্রহী ছাত্রদলের প্রথম যুগ্ম সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, গঠনতন্ত্র মোতাবেক নতুন কমিটি না হলে পদপ্রত্যাশীদের মাঝে অসন্তোষ ও হতাশা সৃষ্টি হবে। সুতরাং আগামী দিনের আন্দোলন-সংগ্রামের কথা বিবেচনায় নিয়ে বিএনপির হাইকমান্ডের উচিত দ্রুত ছাত্রদলের নতুন কমিটি করা।
শীর্ষ পদপ্রত্যাশীদের দৌড়ঝাঁপ : ছাত্রদলের সম্ভাব্য নতুন কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ পেতে চেষ্টা করছেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতাদের অনেকেই। এদের মধ্যে রয়েছেন নাজমুল হাসান, আলমগীর হাসান সোহান, আব্দুল ওহাব, আবু আতিক আল হাসান মিন্টু, ইখতিয়ার কবির, মামুন বিল্লাহ, জহিরুল ইসলাম বিপ্লব, আসাদুজ্জামান আসাদ, মফিজুর রহমান আশিক, বায়েজীদ আরেফিন, নাহিদুল ইসলাম সুহাদ অন্যতম। এর বাইরেও শীর্ষ পদের জন্য চেষ্টা করছেন কাজী মোক্তার হোসেন, মেহবুব মাসুম শান্ত, মিনহাজুল ইসলাম ভূঁইয়া ও আরজ আলী শান্ত প্রমুখ। পদপ্রত্যাশীদের অনেকেই মিথ্যা ও রাজনৈতিক মামলায় জেলও খেটেছেন।

ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক বায়েজীদ আরেফিন বলেন, সারা দেশে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা প্রতি দুই বছর বা আড়াই বছরের মধ্যে কেন্দ্রীয় নতুন নেতৃত্বের অধীনে কাজ করতে অভ্যস্ত। তাই আগে দরকার কেন্দ্রে গতিশীল নতুন নেতৃত্ব। তা না হলে আবার ছাত্রদলের ভূমিকা প্রশ্নের মুখে পড়বে। 

ছাত্রদলের কমিটি গঠন প্রক্রিয়ায় জড়িত বিএনপির কয়েকজন সিনিয়র নেতা বলেন, ছাত্রদল হচ্ছে বিএনপির প্রবেশদ্বার। ছাত্রদলের নেতৃত্বেই আশির দশকে স্বৈরাচার এরশাদকে ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত করা সম্ভব হয়েছিল। ছাত্রদলের আগামী নেতৃত্বের জন্য বিএনপির হাইকমান্ড তৎপর রয়েছে। তাদের নির্দেশ মতো সম্ভাব্য ছাত্রনেতাদের তালিকা যাচাই-বাছাইও হয়েছে। বিষয়টি দেখছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তবে নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণার সময়ের ব্যাপারে ব্যাপারে কোনো ইঙ্গিত দিতে পারেননি তারা।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!