দৈনিক প্রথম বাংলাদেশ প্রতিবেদনঃ জিয়াউর রহমানকে বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি বলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা মানহানির মামলা খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। গতকাল সকালে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে মামলার বাদী আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এবি সিদ্দিকী হাজির হয়ে বিবাদী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে এ মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে বাদী তিনটি অভিযোগ আনয়ন করেন। এগুলো হল-জিয়াকে প্রথম রাষ্ট্রপতি বলা, গোপালগঞ্জের নাম বদলানোর হুমকি ও মিথ্যা জন্মদিন পালন। এ সময় মহানগর হাকিম শামসুল আরেফীন বাদীর জবানবন্দি ফৌজদারি কার্যবিধির ২০০ ধারায় গ্রহণ করেন। বাদীর জবানবন্দি গ্রহণের পর বিএনপিপন্থী আইনজীবী মাসুদ আহাম্মেদ তালুকদার দাঁড়িয়ে এর বিরোধিতা করে বক্তব্য দেন। তিনি বিচারককে বলেন, আমি কোনো পক্ষেরই নই, শুধু একজন কোর্ট অফিসার হিসেবে আমি এই বক্তব্য দিচ্ছি। এরপর ওই আইনজীবী জানান, শুধু মামলা করার কারণেই এই বাদীকে তিনি চেনেন। বাদীর কোনো পরিচয় জানেন না। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার বক্তব্যে যদি কোনো অপরাধ হয়ে থাকে তবে রাষ্ট্রের সরকার বধির নয়। চাইলে সরকারই ব্যবস্থা নিতে পারে। তিনি বাদীর মামলাকে সোলেমানের কবিতা হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, জন্মের আগেই এসব মামলার মৃত্যু হয়ে যায়। তার বক্তব্যের সময় পাশ থেকে কয়েকজন বিএনপিপন্থী আইনজীবী বাদীর উদ্দেশে কটূক্তি করলে সিনিয়র আইনজীবীরা তাদের বারণ করেন। শুনানি শেষে বিচারক পরে আদেশ দেবেন বলেন জানান। পরে বিকেল পৌনে ৪টায় আদালত মামলাটি খারিজের আদেশ দেন। আদালত তার আদেশে উল্লেখ করেন, মামলায় অভিযোগের যথাযথ উপাদান না থাকার কারণে মামলাটি খারিজ করে দেওয়া হল।
মামলার আর্জি থেকে জানা যায়, গত ২৭ মার্চ ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে মুক্তিযোদ্ধা দল আয়োজিত ‘মুক্তিযুদ্ধের শ্রেষ্ঠ অহঙ্কার স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমান বীরউত্তম’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তিনি সেখানে জিয়াউর রহমানকে দেশের স্বাধীনতার ঘোষক ও দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি হিসেবে উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধুকে হেয় করেছেন। গত ২৯ ডিসেম্বর তিনি গোপালগঞ্জের নাম বদলে ফেলার হুমকি দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে অপমান করেছেন। মামলায় খালেদা জিয়া দিনাজপুর গার্লস হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিক পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েছেন ও পরীক্ষায় তার রোল নং ছিল এ-৯৭২ এবং তার জন্ম তারিখ ৫/৯/১৯৪৬ ছিল বলে উল্লেখ করা হয়। বাদী আরও উল্লেখ করেন, অত্র মামলার বিবাদী সাবেক প্রধানমন্ত্রী, সাবেক বিরোধীদলীয় নেত্রী এবং বিএনপি চেয়ারপারসন। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা কোনো বড় বিষয় নয়। কিন্তু এ নিয়ে মিথ্যাচারের আশ্রয় নেওয়া নিঃসন্দেহে গর্হিত অপরাধ, যা ক্ষমার অযোগ্য। বাদী পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন আইনজীবী রওশন আরা শিকদার ডেইজী।