ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ রাজধানীর মুগদা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে অনিয়মের খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন আরটিভির সাংবাদিক সোহেল রানা ও ক্যামেরা পার্সন নাজমুল হোসেন সায়মন। অপরদিকে ঢাকা ওয়াসার দুর্নীতি নিয়ে রিপোর্ট করতে যাওয়ায় হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে এসএ টিভির সাংবাদিক বাতেন বিল্পবকে।
মুগদায় হামলার শিকার সোহেল রানা বলেন, মুগদা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যাওয়া রোগীদের চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয় এমন অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার বেলা ১১ টার দিকে তিনি ও ক্যামেরা পার্সন নাজমুল ওই হাসপাতালে সংবাদ সংগ্রহ করতে যান। তারা প্রথমে হাসপাতালের পরিচালকের কাছে গিয়ে সংবাদ সংগ্রহের অনুমতি চান। কিন্তু পরিচালক তাদের অনুমতি না দিয়ে চলে যেতে বলেন। এক পর্যায়ে তারা হাসপাতালের বাইরে গিয়ে ভুক্তভুগী রোগী ও স্বজনদের অভিযোগ শুনতে থাকেন। ওই সময় হাসপাতালের কর্মচারী আসিফের নেতৃত্বে ৮/১০ জন এসে তাদের রিপোর্ট সংগ্রহে বাঁধা দেন। এক পর্যায়ে তারা সোহেল রানা ও নাজমুলকে মারধর করে তাদের ক্যামেরার লেন্স লাইট ভেঙ্গে ফেলে। পরে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।
হামলার শিকার নাজমুল হোসেন সায়মন জানান, সংবাদ সংগ্রহে প্রথমে হাসপাতালের নিরাপত্তারক্ষীরা বাধা দিয়ে পরিচালকের অনুমতি নিতে বলে। পরে পরিচালকের কক্ষে গেলে তিনি সাংবাদিকদের নিয়ে বিষোদগার করে বলেন। পরিচালক বলে ‘সাংবাদিকদের কারণেই প্রধানমন্ত্রী ডাক্তারদের ওপর কড়াকড়ি করেছেন। হাসপাতালে কোনো সাংবাদিক প্রবেশ করা যাবে না’। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের হাসপাতাল থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। তার কথামত সাংবাদিরা বাইরে গিয়ে ভুক্তভুগীদের অভিযোগ শুনছিলেন। এমন সময় এই হামলা চালানো হয়। এব্যপারে মুগদা থানার ইন্সপেক্টর অপারেশন মাসুদুর রহমান বলেন, বিষয়টি তদন্ত করা হয়েছে। অভিযুক্তদের বিচারের আওতায় আনা হবে।
অপরদিকে ঢাকা ওয়াসার অনিয়ম, দুর্নীতি নিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করতে গিয়ে ওয়াসার সিবিএ নেতা হাফিজের ছোট ভাই শামছুদ্দিন বাতেন বিপ্লবকে-০১৭১১-৫৬০৪২৮ নম্বর থেকে ফোন করে প্রাণনাশের হুমকি ও হয়রানির চেষ্টা চালান। বাতেন বলেন, ওয়াসায় কয়েক হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির বিষয়ে তথ্য পান তিনি। তার কাছে ডকুমেন্টও রয়েছে। এ ব্যপারে তিনি সিবিএ নেতার বক্তব্য জানার চেষ্টা করলে তাকে এই হুমকি দেয়া হয়।
এ ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছেন বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন ক্র্যাব নেতৃবৃন্দ। ক্র্যাবের সভাপতি আবুল খায়ের ও সাধারন সম্পাদক দীপু সারোয়ার এক বিবৃতিতে বলেন, একজন পেশাদার সাংবাদিককে এভাবে প্রাণনাশের হুমকি ও হয়রানির চেষ্টায় আমরা উদ্বিগ্ন। নেতৃবৃন্দ এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিকে দ্রুত খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান। নেতৃবৃন্দ বলেন, একজন পেশাদার সাংবাদিককে হত্যার হুমকি দিয়ে শামছুদ্দিন যা করেছেন, তা ধৃষ্টতা এবং সীমা লংঘনের সামিল। বিষয়টি প্রচলিত আইনে ফৌজদারি অপরাধ। এটি অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়। বাতেন বিপ্লবের আইনী সহায়তা পেতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি আহবান জানান ক্র্যাব নেতৃবৃন্দ।