ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ বাংলাদেশের অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যদের পবিত্র সংবিধান এবং দেশমাতৃকার সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ থেকে অভ্যন্তরীণ কিংবা বাহ্যিক যে কোনো হুমকি মোকাবেলায় সদাপ্রস্তুত থাকার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
রবিবার দুপুর ১২টায় রাজশাহী সেনানিবাসের শহিদ কর্নেল আনিস প্যারেড গ্রাউন্ডে বাংলাদেশ ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্ট সেন্টারের (বিআইআরসি) ৭ম, ৮ম, ৯ম এবং ১০ম রেজিমেন্টকে ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড (জাতীয় পতাকা) প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এ নির্দেশ দেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্টের সংশ্লিষ্ট ইউনিট কমান্ডারগণের হাতে জাতীয় পতাকা হস্তান্তরের মাধ্যমে তাদের আনুষ্ঠানিকভাবে ‘ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড’ প্রদান করেন।
জাতীয় পতাকাপ্রাপ্ত সেনাবাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পবিত্র সংবিধান এবং দেশমাতৃকার সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার জন্য আপনাদের ঐক্যবদ্ধ থেকে অভ্যন্তরীণ কিংবা বাহ্যিক যে কোন হুমকি মোকাবিলায় সদা প্রস্তুত থাকতে হবে।’
এর আগে প্রধানমন্ত্রী খোলা জিপে করে প্যারেড (কুচকাওয়াজ) পরিদর্শন এবং অভিবাদন (সালাম) গ্রহণ করেন। মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজের মাধ্যমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি সুসজ্জিত দল প্রধানমন্ত্রীকে রাষ্ট্রীয় সালাম জানায়। এ সময় সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন।
সেনাবাহিনীর সদস্যদের দেশের সম্পদ এবং দেশের মানুষের ভরসা ও বিশ্বাসের মূর্ত প্রতীক উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পেশাদারিত্বের কাঙ্ক্ষিত মান অর্জনের জন্য আপনাদেরকে দক্ষ, সামাজিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে সৎ এবং মঙ্গলময় জীবনের অধিকারী হবারও হতে হবে।’
ছবি: ফোকাস বাংলা
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে দেশের গণতান্ত্রিক ধারা সমুন্নত রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। সেজন্য আপনাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। চতুর্থ বারেরমত এবং একটানা তৃতীয়বার সরকার গঠন করার সুযোগ পাওয়ায় আমি দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। আমাদের সরকার শাসক হিসেবে নয়, জনগণের সেবক হিসেবে দেশ পরিচালনা করতে চায়।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রথমবারের মত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে প্যারা কমান্ডো ব্রিগেড গঠন করা হয়েছে। দেশের আকাশ প্রতিরক্ষাকে আরও সুসংহত করতে সংযোজিত হয়েছে এমএলআরএস এবং মিসাইল রেজিমেন্ট। অত্যাধুনিক বিভিন্ন যুদ্ধাস্ত্র, হেলিকপ্টার, আর্টিলারি গান এবং মর্ডান ইনফ্যান্ট্রি গেজেট ইত্যাদি সংযোজন করে সেনাবাহিনীর আভিযানিক সক্ষমতাকে বহুলাংশে বৃদ্ধি করেছি।’
সেনাবাহিনীর সদস্যদের জন্য তার সরকারের বিভিন্ন কর্মকান্ডের উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সেনাবাহিনীতে কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত সদস্যদের চিকিৎসা সেবা ও আবাসনসহ বিভিন্ন কল্যাণমূলক সুযোগ-সুবিধা উন্নত ও বৃদ্ধি করা হয়েছে। সেনা সদস্যদের রেশন স্কেল বৃদ্ধি খরেছি। সেনাসদস্যদের দুস্থ ভাতা ও ক্ষতিপূরণ অনুদান উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি করেছি। সেনাবাহিনীর সেসিও পদকে ২য় শ্রেণি থেকে ১ম শ্রেণি এবং সার্জেন্ট পদকে ৩য় শ্রেণি থেকে ২য় শ্রেণিতে উন্নীত করা হয়েছে। এছাড়া আরও অনেক কল্যাণমূখী কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’
অনুষ্ঠানে মন্ত্রীপরিষদের সদস্যবৃন্দ, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিষয়ক উপেদষ্টা মেজর জেনারেল তারিক আহমেদ সিদ্দিক (অব.), নৌবাহিনী প্রধান ভাইস এডমিরাল এএমএমএম আওরঙ্গজেব চৌধুরী, বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, রাজশাহী-১ আসনের সাংসদ ওমর ফারুক চৌধুরী, রাজশাহী-২ আসনের সাংসদ ফজলে হোসেন বাদশা, রাজশাহী-৩ আসনের সাংসদ আয়েন উদ্দিন, রাজশাহী-৪ আসনের সাংসদ এনামুল হক, রাজশাহী-৫ আসনের সাংসদ ডা. মনসুর রহমান, রাজশাহী-৬ আসনের সাংসদ ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এম আব্দুস সোবহান, উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. আনন্দ কুমার সাহা ও ড. চৌধুরী মো. জাকািরয়া রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ বজলার রহমান, রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার নূর-উর-রহমান, পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি এম খুরশীদ হোসেন, রাজশাহী মহানগর পুলিশ কমিশনার একেএম হাফিজ আক্তার, রাজশাহীর জেলা প্রশাসক এস এম আব্দুল কাদের, পুলিশ সুপার মো. শহীদুল্লাহ, মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি শাহীন আক্তার রেনী, সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, সাবেক সেনাপ্রধানবৃন্দ, বিদেশি কূটনীতিক এবং পদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।