DMCA.com Protection Status
title="৭

বাকশাল মানুষের আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে দিয়েছিল: শেখ হাসিনা

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ  ২৭ মার্চ বুধবার বিকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত স্বাধীনতা দিবসের আলোচনা সভায় সভাপতিত্বকালে  অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাকশাল প্রবর্তন করে জাতির পিতা বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করতে চেয়েছিলেন। যেনো কারো কাছে হাত পাততে না হয়, বাংলাদেশ যেনো মর্যাদা নিয়ে বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে।

এ সময় হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনের জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছিলেন। বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ গঠন করে একটি প্লাটফর্ম করেন। এই কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ যেটাকে অনেকেই ‘বাকশাল’ হিসেবে বলে।

‘এই বাকশাল ছিল কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগসহ দেশের সকল স্তরের মানুষ সকল শ্রেণী-পেশার মানুষ সকলকে এক প্লাটফর্মে নিয়ে আসার একটি প্রক্রিয়া। প্রতিটি রাজনৈতিক দল, আমাদের সেনাবাহিনী-নৌবাহিনী-বিমানবাহিনী-পুলিশ বাহিনীসহ সকলকে একটি প্লাটফর্মে নিয়ে অর্থ সামাজিক কাজে সম্পৃক্ত করে অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনের জন্য তিনি জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলেছিলেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘স্বাধীনতা বিরোধী, যারা ৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দোসর ছিল; যারা পাকিস্তানি বাহিনীকে গ্রামের পর গ্রাম পথ চিনিয়ে নিয়ে গিয়েছে, যারা ঘর থেকে আমাদের মা-বোনদের তুলে নিয়ে ওই পাকিস্তানি সৈন্যদের হাতে তুলে দিয়েছে; পরবর্তীকালে ক্যাম্প থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল।’

‘যারা আমাদের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছে; স্বাধীনতা বিরোধী এ যুদ্ধাপরাধী যাদের বিচার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুরু করেছিলেন। তাদের অনেকে সাজাপ্রাপ্ত এবং অনেকের মামলা চলছিল, অনেকেই দেশ ছেড়ে বিদেশে পাড়ি দিয়েছিল; অনেকেই পাকিস্তানি পাসপোর্ট নিয়ে চলে গিয়েছিল তাদের ষড়যন্ত্র কিন্তু থেমে যায়নি।’

‘মুক্তিযুদ্ধে তারা পরাজিত হয়েছিল ঠিকই, কিন্তু তারা থেমে যায়নি। তারা একের পর এক চক্রান্ত করে যাচ্ছিল। আওয়ামী লীগের ৭ জন সংসদ সদস্যকে হত্যা করা হয়েছিল। অনেক নেতাকে হত্যা করা হয়, পাটের গুদামে আগুন দেয়া হয়েছিল। এই রাজাকার-আলবদরদের সঙ্গে কমিউনিস্ট পার্টি এক হয়ে চক্রান্ত শুরু করে।’

এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘যারা পাকিস্তানকে সহায়তা করেছিল বাঙালিকে দমন করার জন্য, যারা চায়নি বাংলাদেশ স্বাধীন হোক, এই দেশটা স্বাধীন হয়ে কি হবে, এটাতো একটা তলাবিহীন ঝুড়ি হবে! বাঙালির বিজয় যারা মেনে নিতে পারে নাই; তারাই এই চক্রান্তে লিপ্ত ছিল। তারা হাত করে নেয় আমাদের কিছু লোকদেরকে। তারা অর্থ সম্পদ দিয়ে ক্ষমতার লোভ দেখিয়ে তাদেরকে ব্যবহার করে চক্রান্তের সূচনা হয়।’

তাছাড়া বিশ্ব দরবারে বাঙালির মর্যাদা বৃদ্ধি এবং মাথা উচু করতেই বঙ্গবন্ধু এমন উদ্যোগ নিয়েছিলেন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এ চক্রান্ত অতিক্রম করে জাতির পিতা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যান। পাকিস্তানিদের পরিত্যক্ত সকল শিল্প কারখানা রুগ্ন অবস্থায় ছিল। মা যেমন তার রুগ্ন সন্তানকে বুকে নিয়ে সুস্থ করে, প্রতিটি পরিত্যক্ত শিল্প-কারখানা জাতির পিতা আবারও সচল করেছিলেন। সকল শিল্প কারখানার মালিক যারা বাংলাদেশের ছিল তাদের শিল্প কারখানা তাদের হাতে ফিরিয়ে দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছিলেন।’

‘দেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য তিনি একটা ব্যবস্থা নিয়েছিলেন। প্রত্যেকটা কৃষি জমি চাষ হবে সমবায়ের মাধ্যমে। কৃষি যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে ফসল উৎপাদিত হবে। মালিকানা ঠিক থাকবে কিন্তু যখন চাষ হবে সেটা ব্লক ব্লক আকারে ভাগ করে সমবায়ের মাধ্যমে। যারা শ্রম দেবে উৎপাদিত পণ্যের একটা অংশ তারা পাবে। এভাবে তিনি বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করতে চেয়েছিলেন।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রতিটি মহকুমাকে জেলায় রূপান্তর করে প্রত্যেকটা জেলার গভর্নরকে ট্রেনিং দেয়া শুরু করেছিলেন, যেন সরকারের সকল সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছায়। তার সব ব্যবস্থা তিনি নিয়েছিলেন। তার এ পদ্ধতিতে (বাকশাল) যে সুফলটা আমাদের সমাজে এসেছিল, সেটা হলো মানুষের ভেতরে আত্মবিশ্বাস ফিরে এসেছিল। মানুষ সুখের মুখ দেখতে শুরু করেছিল।’

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!