ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ আগামীতে দেশে আরও তিন কোটি মানুষের কর্মসংস্থান হবে জানিয়ে অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কর্মসংস্থান মানে শুধু চাকরি নয়, যেকোনো একজন মানুষকে ট্রেনিং দিয়ে শিক্ষিত করে কাজ করার মাধ্যমে সে যদি কর্ম করে খাওয়ার সুযোগ পায় সেটাই কর্মসংস্থান। সেখানেও বেকারত্বের অবসান ঘটে। এ সময় তিনি আরও বলেন, দেশে কর্মসংস্থানের ব্যপক সুযোগ আছে বলেই আজকাল ধান কাটার লোক পাওয়া যায় না।
আজ শুক্রবার বিকেলে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। বাজেটের লিখিত বক্তব্য শেষে তিনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলেন।
বিকেল ৩টায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলন শুরু করেন শেখ হাসিনা। প্রতিবার বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী বক্তব্য রাখলেও এবারের অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল অসুস্থ থাকায় প্রধানমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলন করছেন।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, পরিকল্পনামন্ত্রী আবদুল মান্নান, কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
হাসিনা বলেন, ‘দেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ আছে বলেই ধান কাটার লোক পাওয়া যায় না। যেখানে ধান কাটলে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা দৈনিক পাওয়া যায় এবং তিন বেলা খাবারও পাওয়া যায় তারপরেও লোক পাওয়া যায় না, তখন বুঝতে হবে বেকারত্বের কথা যেভাবে বলা হয় ততো বেকার দেশে নেই।
তিনি বলেন, ‘কর্মসংস্থান মানে সবাইকে চাকরি দেয়া এমন বোঝায় না। ১৬ কোটি মানুষকে চাকরি দেয়া কখনই সম্ভব নয়। কোন দেশ আছে যারা এত লোককে চাকরি দিতে পারবে?’
নিজের কর্ম নিজেকেই সৃষ্টি করার তাগিদ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা যে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল করেছি সেই ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলে চাকরি ছাড়াও নানাভাবে মানুষের কর্মসংস্থান হবে। তখন দেশে ৩ কোটি বেকার যুবকের কর্মসংস্থান হবে।’
বাংলাদেশের ইতিহাসে এটাই সর্ববৃহৎ বাজেট উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমাদের সরকারের বিগত দুই মেয়াদে ১০ বছরের যে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে তার মাধ্যমে জনগণের মাঝে আমাদের প্রতি আস্থা বেড়েছে। তার প্রতিফলন ঘটেছে গত ৩০ ডিসেম্বর সাধারণ নির্বাচনে।’
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় চার নেতা ও পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট নিহতদের স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী।
রীতি অনুযায়ী প্রতিবার বাজেট-উত্তর সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন অর্থমন্ত্রী। এবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল অসুস্থ হওয়ায় সংবাদ সম্মেলন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করা হয়। এটি দেশের ৪৮তম এবং বর্তমান সরকারের তৃতীয় মেয়াদের প্রথম বাজেট।
‘সমৃদ্ধ আগামীর পথযাত্রায় বাংলাদেশ : সময় এখন আমাদের, সময় এখন বাংলাদেশের’ শিরোনামে প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ধরা হয় ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বাজেট এটি।
গতকাল বেলা ৩টায় জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বাজেট অধিবেশন শুরু হয়। শুরুতে বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। নতুন অর্থমন্ত্রী হিসেবে এটি তার প্রথম বাজেট।
দাঁড়িয়ে বাজেট বক্তৃতা শুরু করলেও পরে স্পিকারের অনুমতি নিয়ে অর্থমন্ত্রী নিজ আসনে বসে বাজেট উপস্থাপন করেন। কিন্তু বিকেল ৪টার পর অসুস্থ অর্থমন্ত্রীর পক্ষে প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন সম্ভব না হওয়ায় স্পিকারের অনুমতি নিয়ে বাকি অংশ সংসদে উপস্থাপন করেন অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।