DMCA.com Protection Status
title="৭

মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়েও ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আনা যাচ্ছে না: মেনন

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ  আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দল শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেছেন, নির্বাচন নিয়ে জনগণ আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। উপজেলা নির্বাচনেই তার প্রমাণ পাওয়া যায়। মসজিদে-মসজিদে ঘোষণা দিয়েও ভোটারদের কেন্দ্রে আনা যায় না। এটা নির্বাচনের জন্য কেবল নয়, দেশের গণতন্ত্রের জন্যও বিপজ্জনক।

 

আজ বুধবার জাতীয় সংসদে ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি একথা বলেন।

 

ভোটাধিকারের জন্য ১৯৬৩ সাল থেকে শুরু করে সর্বশেষ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আন্দোলন করার কথা তুলে ধরে মেনন বলেন, আবার যেন এই বৃদ্ধ বয়সে সবটাই ‘পুনঃ মূষিক ভব’ করতে না হয়। রাষ্ট্রযন্ত্রের বিভিন্ন অংশ দেশের ও নির্বাচনের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করলে রাজনৈতিক দল শুধু নির্বাচন নয়-রাষ্ট্র পরিচালনায়ও প্রাসঙ্গিকতা হারিয়ে ফেলবে। এটা সবার জন্য যেমন, আওয়ামী লীগের জন্যও প্রযোজ্য।

 

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ১৪ দলের শরিকদের নিজ পায়ে দাঁড়াতে বলেছেন। কিন্তু গণতান্ত্রিক স্পেস না থাকলে কেউই সংগঠন, আন্দোলন,কিংবা ভোট নিয়ে এগোতে পারে না।

 

মেনন বলেন, রোগ এখন উপজেলা নির্বাচন পর্যন্ত বিসতৃত হয়েছে। পাঁচ দফা উপজেলা নির্বাচনে আমাদের দল (ওয়ার্কার্স পার্টি), এমনকি আওয়ামী লীগের প্রার্থীদেরও অভিজ্ঞতা করুণ। নির্বাচন কমিশন, প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের বলেও কোনো লাভ হচ্ছে না। বরং তাদের যোগসাজশ রয়েছে। এর ফলে নির্বাচন ও সামগ্রিক নির্বাচনী ব্যবস্থা সম্পর্কে জনমনে অনাস্থা সৃষ্টি হয়েছে। ভোট দেওয়ার ব্যাপারে জনগণের আগ্রহ নেই।

 

সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রার পথে কাঁটা আর্থিক খাতের সিমাহীন দুর্গতিঃ

বাজেট আলোচনায় মেনন বলেন, সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রার পথে এখন কাঁটা হয়ে রয়েছে আর্থিক খাতের দুর্গতি। ব্যাংক খাতে লুটপাট, নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলা কারও অবিদিত নয়। ঋণখেলাপির দায়ে ব্যাংকগুলো আজ ন্যুজ্ব। চলছে চরম তারল্য সংকট। করের টাকা দিয়ে ব্যাংকের ঘাটতি মূলধন পূরণ করার জন্য বরাদ্দ এবারেও রাখা হয়েছে বাজেটে। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীন ভূমিকা দূরে থাক, ব্যাংকগুলোকে কার্যকর নজরদারি করতেও অক্ষমতার পরিচয় দিচ্ছে। নিজের অর্থই তারা সামাল দিতে পারেনি এবং তার কোনো জবাবদিহিতা দেশবাসী পায়নি। রাজনৈতিক বিবেচনায় ব্যাংক প্রদান, ব্যাংক মালিকদের আবদারে ব্যাংক আইন সংশোধন করে ব্যাংকগুলোকে পারিবারিক মালিকানার হাতে তুলে দেওয়া, একই ব্যক্তি একাধিক ব্যাংকের মালিক বনে ব্যাংক খাতকে নিয়ন্ত্রণ করা, ব্যাংক মালিক অ্যাসোসিয়েশনের মাধ্যমে সিআরআর নির্ধারণ করা-এসবই ব্যাংক খাতে এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী।

 

১৪ দলের অন্যতম এই শীর্ষ নেতা বলেন, অর্থমন্ত্রী ব্যাংক খাতে সংস্কারের জন্য কিছু কথা বলেছেন। তাও ভবিষ্যতবাচক। ব্যাংক কমিশন গঠনের প্রস্তাবকেও তিনি আলোচনা-সাপেক্ষ রেখে দিয়েছেন। অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন আর এক টাকাও ঋণখেলাপি হবে না। কিন্তু এক মাসের মধ্যে ঋণখেলাপির পরিমাণ ১৭ হাজার কোটি টাকা থেকে বেড়ে ১ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। যা এই বাজেটের পরিমাণের এক পঞ্চমাংশ। আর ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি কীভাবে নির্দিষ্ট হবে তা জানা নেই।

 

ওয়ার্কার্স পার্টি সভাপতি বলেন, সাবেক অর্থমন্ত্রী যেমন ব্যাংক সংস্কার করতে পারেননি, এবারেও এনিয়ে যথেষ্ঠ বেগ পেতে হবে। কারণ ওরাই অর্থনীতির বর্তমান নিয়ন্ত্রক হয়ে উঠেছে। বাজেটের ঘাটতি অর্থ পূরণে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ৪৭ হাজার ৩৬৪ টাকা সংগ্রহের কথা বলা হয়েছে। এতে ব্যাংকের তারল্য সংকট আরও বাড়বে। বেসরকারি বিনিয়োগ আরও কমে যাবে। কর্মসংস্থান হবে না। এসবই একই সূত্রে গাঁথা।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!