ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ বুধবার, জুন ২৬, ২০১৯, জাতিসংঘ ঘোষিত ‘নির্যাতিদের সমর্থনে আন্তর্জাতিক দিবস’-International Day in Support of Victims of Torture’। এই দিবস উপলক্ষে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো বাণীতে বলেছেন, প্রতিদিন কোন না কোন জনপদ রক্তে সিক্ত হচ্ছে। উগ্র গোষ্ঠীর কার্যকলাপ নিয়ে সরকারের ভূমিকা এখন রহস্যঘেরা। মাদকবিরোধী অভিযানের নামে সারাদেশে বেআইনী হত্যার হিড়িক পড়ে গেছে। এই অভিযানে বিএনপি নেতাকর্মীদেরও বেছে বেছে বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যা করা হচ্ছে। দেশে মানুষের ন্যায় বিচার পাওয়ার সকল পথ বন্ধ হয়ে গেছে। এদেশে এখন বিচারের বাণী নিরবে নিভৃতে কাঁদে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বাণী নিচে দেয়া হল —
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম,
২৬ জুন জাতিসংঘ ঘোষিত নির্যাতিতদের সমর্থনে আন্তর্জাতিক দিবসটি অত্যন্ত তাৎপর্যময়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর ঔপনিবেশিক শৃঙ্খল থেকে জাতিসমূহ স্বাধীনতা অর্জন করলেও আজও বিশ্বব্যাপী চলছে জাতিগত, বর্ণগত, ভাষাগত এবং ধর্ম ও সম্প্রদায়গত সংঘাত। আর এই সংঘাত ও বিরোধের কারনেই সাধারণ মানুষেরা দেশে দেশে নিহত ও পঙ্গুত্ব বরণ করছে, বিভিন্ন রাষ্ট্রে স্বৈরাচারী শাসকগোষ্ঠীর কারণে মিথ্যা মামলায় বছরের পর বছর কারাযন্ত্রণা ভোগ করছে বিরোধী মতের অসংখ্য মানুষ। সরকারের প্রতিহিংসার শিকার হয়ে নানাভাবে হয়রানী হচ্ছে। সারা বিশ্ব আজ যান্ত্রিক সভ্যতায় এগিয়ে গেলেও মানবিক সভ্যতা বেশীদুর এগুতে পারেনি। বাংলাদেশে গণতন্ত্র এখন বন্দী, এখানে ভয়াবহ দূঃশাসন চলছে।
বর্তমান সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার পরে বিএনপিসহ বিরোধী দলের অসংখ্য নেতা-কর্মী গুম, খুন, অপহরণ ও গুপ্তহত্যার শিকার হয়েছে। বন্দুক যুদ্ধের নামে বিচারবহির্ভূত হত্যাকে স্বাভাবিক ঘটনা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। সাংবাদিক হত্যা এবং অসংখ্য সাংবাদিককে নিষ্ঠুরভাবে নির্যাতন নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়াও মত প্রকাশের স্বাধীনতা স্তব্ধ করে দেয়ার জন্য একের পর এক সংবাদপত্র, টেলিভিশন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে, যাতে বিরোধীদের কণ্ঠ শোনা না যায়। আর এই ধারাবাহিকতায় এদেশে গণতন্ত্রের প্রতীক বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় অন্যায়ভাবে সাজা দিয়ে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে।
বাংলাদেশে সরকারের অগণতান্ত্রিক ও অসহিঞ্চু আচরণের প্রতিবাদ করতে গেলেই লেলিয়ে দেয়া হয় তাদের নিজস্ব পেটোয়া বাহিনী। এই সরকারের পোষ্য সন্ত্রাসীদের হাতে দেশের বিভিন্ন স্থানে নারী ও শিশু ভয়াবহভাবে নির্যাতিত হচ্ছে। সরকারের নিষ্ঠুর দমননীতির ছোবলে গণতন্ত্রকে করা হয়েছে দেশছাড়া। বিরোধী দল, মত ও বিশ্বাসকে দমন করার জন্য সরকার রক্তের হোলি খেলায় মেতে উঠেছে। একমাত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজ গঠনের জন্য বহুদলীয় ব্যবস্থাকে গুঁড়িয়ে দিতে সরকার উঠেপড়ে লেগেছে।
প্রতিদিন কোন না কোন জনপদ রক্তে সিক্ত হচ্ছে। উগ্র গোষ্ঠীর কার্যকলাপ নিয়ে সরকারের ভূমিকা এখন রহস্যঘেরা। মাদকবিরোধী অভিযানের নামে সারাদেশে বেআইনী হত্যার হিড়িক পড়ে গেছে। এই অভিযানে বিএনপি নেতাকর্মীদেরও বেছে বেছে বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যা করা হচ্ছে। দেশে মানুষের ন্যায় বিচার পাওয়ার সকল পথ বন্ধ হয়ে গেছে। এদেশে এখন বিচারের বাণী নিরবে নিভৃতে কাঁদে।
আমি তাই জাতিসংঘ ঘোষিত আন্তর্জাতিক নির্যাতন বিরোধী দিবসে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল নির্যাতিত মানুষকে সহমর্মিতা জ্ঞাপন করছি। মানবিকবোধে উদ্বুদ্ধ বিশ্বের সকল গণতন্ত্রকামী মানুষের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসের মাধ্যমেই নিষ্ঠুর নির্যাতনকারী মহল ও স্বৈরশাসককে পরাস্ত করা সম্ভব।
আল্লাহ হাফেজ। বাংলাদেশ জিন্দাবাদ।