ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করে অঞ্চলটিকে কেন্দ্রীয় শাসনের অধীনে আনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মুসলিম দেশগুলোর সংস্থা অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি), আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিষয়ক বে-সরকারী সংগঠন ‘ইন্টারন্যাশনাল কমিশন অব জুরিস্ট (আইসিজি) এবং লন্ডনভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যশনাল। সমালোচক ও বিশ্লেষকরা এই ঘটনাকে পশ্চিম তীর ও তিব্বতের সঙ্গে তুলনা করছেন। ডন, আনাদুলু এজেন্সি,দ্য নিউজ
বুধবার এক বিবৃতিতে আইসিজি বলেছে, ‘ভারতের কাশ্মীর সিদ্ধান্ত দেশের সংবিধান, আন্তর্জাতিক আইন ও ভারতের মানবাধিকার আইনুযায়ী জনগণের অধিকার ও অংশগ্রহণের সুষ্পষ্ট লঙ্ঘন।’ আইসিজি’র মহাসচিব স্যাম জ্যারিফ বলেন, ‘ভারতের পদক্ষেপ অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক মর্যাদার লঙ্ঘন। বাক-স্বাধীনতাজনসভা ও ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা ও হাজার হাজার নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন স্বৈরতান্ত্রিক পদক্ষেপ।’
বুধবার ওআইসি’র বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বর্তমানে জম্মু ও কাশ্মীরে সৃষ্টি সংকটপূর্ণ পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ জানাচ্ছে ওআইসি। সেখানে যেভাবে নির্লজ্জভাবে মানবাধিকার হরণ করা হচ্ছে আমরা তারও নিন্দা জানাচ্ছি।’ সংস্থাটির সেক্রেটারি জেনারেলের স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব, ওআইসির শীর্ষ সম্মেলনের সিদ্ধান্ত এবং সংস্থার কাউন্সিল অব ফরেন মিনিস্টার্সের (সিএফএম) প্রস্তাব সমূহের ভিত্তিতে সংকট নিরসনে মধ্যস্থতা করতে সবগুলো পক্ষের প্রতি আমরা আহ্বান জানাচ্ছি।’
অ্যামনেস্টি জানিয়েছে, কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত রাজ্যটিতে সহিংসতা বাড়াতে পারে। বিক্ষোভ ব্যাপক আকার ধারণ করতে পারে। তারা আরো জানায়, ‘অনির্দিষ্ট সময় ধরে জম্মু কাশ্মীরের টেলিযোগাযোগ সেবা বন্ধ রাখা, কারফিউ জারি ও নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের মানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
প্রসঙ্গত, জম্মু-কাশ্মীরে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে অতিরিক্ত হাজার হাজার নিরাপত্তা সদস্য মোতায়েন করে মোদি সরকার। গত শুক্রবার তীর্থযাত্রী ও পর্যটকদের দ্রুত রাজ্য ছাড়ার নির্দেশ দেয়া হয়। এরপরেই রাজ্যে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করে বহু রাজনীতিবিদকে গৃহবন্দি করা হয়। মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ ও বিভিন্ন স্থানে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। আর এর মধ্যেই সোমবার ভারতের পার্লামেন্টে ঘোষণা দিয়ে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদার সুরক্ষা দেওয়া সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করে বিজেপি সরকার।