ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ কথিত জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মিথ্যা মামলায় দণ্ডিত হয়ে কারাগারে আটক বিএনপির চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন আবারো খারিজ করে দিয়েছে আদালত। অর্থাৎ এ দফাতেও জামিন পেলেন না খালেদা।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে আদালতে মামলার শুনানি শুরু হয়। সে সময়ে হাইকোর্টের আদেশ অনুযায়ী খালেদা জিয়ার সর্বশেষ স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হয়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) থেকে পাঠানো তার চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রতিবেদনে জানানো হয় যে, খালেদা জিয়া বিএসএমএমইউ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য সম্মতি দেননি।
এরপর খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা বিশেষায়িত হাসপাতালে তার উন্নত চিকিৎসার জন্য হাইকোর্টে আবেদন জানান।
কিন্তু আদালত তার স্বাস্থ্য রিপোর্ট পড়ে সেই আবেদন খারিজ করে দেন।
রিপোর্টে, খালেদা জিয়ার ডায়াবেটিস, শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আছে উল্লেখ রয়েছে বলে জানা গেছে।
তবে বিএসএমএমইউ-তে উন্নত চিকিৎসা সম্ভব উল্লেখ করে আদালত নির্দেশ দিয়েছে যেন খালেদা জিয়ার সম্মতির ভিত্তিতে দ্রুত তার চিকিৎসা শুরু করা হয়।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চে প্রতিবেদনটি দাখিল করেন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. আলী আকবর।
এর আগে গত রোববার উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়া সম্মতি দিয়েছেন কিনা, সম্মতি দিলে চিকিৎসা শুরু হয়েছে কিনা এবং চিকিৎসা শুরু হলে কী অবস্থা তা জানাতে বিএসএমএমইউ এর উপাচার্যকে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।
বুধবারের মধ্যে এ প্রতিবেদন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল কার্যালয়ে পাঠাতে বলা হয়।
পরে হাইকোর্ট এ বিষয়ে আদেশের জন্য আজকের দিন নির্ধারণ করেন।
আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও দুদকের পক্ষে খুরশীদ আলম খান।
রায় ঘোষণার পর ক্ষোভ প্রকাশ করে খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন গণমাধ্যমকে বলেন, "খালেদা জিয়ার অবস্থা সংকটাপন্ন। তার চিকিৎসা যুক্তরাজ্যের লন্ডনে হতে হবে, যেখানে আর অপারেশন হয়েছিল। বিএসএমএমইউ থেকে নিরপেক্ষ রিপোর্ট পাওয়া সম্ভব না। সেখানে এমনভাবে রিপোর্ট তৈরি করা হয় যেন আদালত মানবিক দৃষ্টিকোন থেকে দেখতে না পারে।"
তবে দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান বলেছেন মেডিকেল রিপোর্টের ভিত্তিতে আদালত এই রায় ঘোষণা করেছে।
তিনি বলেন, "বিএসএমএমইউ এর মেডিকেল বোর্ডকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে, যখনই খালেদা জিয়া সম্মতি দেবেন তখনই যেন তার চিকিৎসা শুরু করা হয়। যদি তার মেডিকেল বোর্ডে আরও চিকিৎসক যুক্ত করার প্রয়োজন হয় তাহলে যেন সেটা করা হয়। "
এদিকে এই আদেশকে কেন্দ্র করে হাইকোর্ট ও এর আশেপাশের এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
২০০৮ সালে বিএনপি চেয়ারপার্সনের বিরুদ্ধে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ মামলা দায়ের হয়।
দশ বছর পর ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারীতে মামলার রায়ে তার পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হয়। এরপর থেকে খালেদা জিয়া কারাগারে রয়েছেন এবং তার জামিনের জন্য আপিল চলছে।