ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরের একটি পাইকারি বাজারের অভিযোগ উঠেছিল বিস্তর।করোনা ভাইরাস মারণ রূপ নেওয়ার পর থেকেই খবরের শিরোনামে ছিল চীনের এ মার্কেটটি। অবশেষে সেই উহান মার্কেট থেকে করোনা ছড়ানোর রিপোর্টকেই কার্যত মেনে নিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এতদিন পর্যন্ত এই নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তথা হু পরিষ্কার করে কিছু বলেনি। কিন্তু শুক্রবার এই প্রথম হু জানিয়ে দিল, করোনা সংক্রমণের নেপথ্যে উহানের ওই বাজারের ভূমিকা রয়েছে।
শুক্রবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষজ্ঞ, পিটার বেন এমবারেক বলেন, “সংক্রমণ ছড়ানোর ক্ষেত্রে উহানের বাজারের ভূমিকা অনস্বীকার্য। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে কী হয়েছিল তা এখনও আমরা পরিষ্কার করে জানি না।”
ড. পিটার বেন জানান, এখনো স্পষ্ট করে বলা যাচ্ছে না যে জীবজন্তু থেকেই ওই বাজারের দোকানদারদের শরীরে সংক্রমণ ছড়িয়েছে। উদাহরণ দিতে গিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এই কর্মকর্তা বলেন, ‘২০১২ সালে সৌদি আরবে মার্স (মিডল ইস্ট রেসপিরেটরি সিনড্রোম) ভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হয়েছিল। গবেষকদের প্রায় এক বছর সময় লেগেছিল উৎস খুঁজে পেতে। উটের শরীরই যে ভাইরাসের আধার, তা বুঝতে সময় লেগেছিল ১৪ মাস।’
অনেকেই মনে করেন, বাদুড় বা ওই জাতীয় প্রাণীর শরীর থেকেই করোনাজনিত কোভিড-১৯ রোগ ছড়িয়েছে। এ ছাড়া চীনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, গবেষণাগারে তৈরি করে এ ভাইরাস ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিযোগ, উহানের ভাইরোলজি ল্যাবেই এ ভাইরাস তৈরি করা হয়েছে।
সম্প্রতি সংবাদমাধ্যম এবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও একই অভিযোগ করেন বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে। যদিও এ ব্যাপারে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ল্যাবেই যে করোনাভাইরাস তৈরি হয়েছে, এমন কোনো প্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি।
গত বৃহস্পতিবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছিল, করোনার উৎস সন্ধানে আবারও একটি টিম চীনের উহানে পাঠাতে চায় তারা। বেইজিংয়ের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, তারা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার টিমকে সব সাহায্য করবে। তারাও চায় এ বিতর্কের একটা উপসংহার টানা হোক।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো দুটি জিনিস খুঁজে বের করা। এক, কোনো প্রাণীর শরীর থেকে এ ভাইরাস ছড়িয়েছে কি না এবং দুই, ছড়ালে কীভাবে এবং কখন তা মানব শরীরে প্রবেশ করল।