ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ বাংলাদেশের অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয় থেকে নথি বের করে জালিয়াতির মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত বদলে দেয়ার গুরুতর অভিযোগের মামলায় গ্রেফতার কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি তরিকুল ইসলাম মুমিনকে ছাত্রলীগ থেকে স্থায়ী ভাবে করেছে দলটির কেন্দ্রীয় কমিটি।
এ ঘটনায় গতকাল শুক্রবার মুমিনসহ তিনজনের বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় মামলার পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চার দিনের রিমান্ডে পাঠায় ঢাকার একটি আদালত।
পুলিশের তেজগাঁও জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার রুবাইয়াত জামান বলেন, ভয়াবহ জালিয়াতির এই ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক-৭ মোহাম্মদ রফিকুল আলম বাদী হয়ে ৫ মে তরিকুল মুমিন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অফিস সহকারী ফাতেমা ও ফরহাদ নামে তিনজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় তরিকুলকে ভোলা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে কোষাধ্যক্ষ পদে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম এনামুল হক, বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. আব্দুর রউফ এবং বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালের সাবেক কোষাধ্যক্ষ অবসরপ্রাপ্ত এয়ার কমোডর এম আবদুস সালাম আজাদের নাম প্রস্তাব করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে নথি পাঠানো হয়। এই নথি প্রধানমন্ত্রীর সামনে উপস্থাপন করার পর তিনি অধ্যাপক ড. এম এনামুল হকের নামের পাশে টিক চিহ্ন দেন।
পরে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য নথিটি রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানোর প্রস্তুতি পর্বে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অফিস সহকারী ফাতেমার কাছে এলে তিনি এম আবদুস সালাম আজাদ অনুমোদন পাননি বলে ফোনে তরিকুলকে জানিয়ে দেন।
এরপরেই তরিকুলের পরিকল্পনা অনুযায়ী, নথিটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে কৌশলে বের করে ফরহাদ নামে একজনের হাতে তুলে দেন ফাতেমা।
মামলায় বলা হয়, এরপরেই সেই নথিতে তরিকুল ড. এম এনামুল হকের নামের পাশে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া টিক চিহ্নটি ‘টেম্পারিং’ করে সেখানে ক্রস চিহ্ন দেন। একইভাবে অধ্যাপক মো. আব্দুর রউফের নামের পাশে ক্রস চিহ্ন দিয়ে এয়ার কমোডর এম আবদুস সালাম আজাদের নামের পাশে টিক চিহ্ন দেন। প্রায় এক মাস আগে নথিটি রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে পাঠানো হয়।
এই নথি হস্তান্তরের আগে ফাতেমা ১০ হাজার টাকা বিকাশের মাধ্যমে গ্রহণ করেন এবং হস্তান্তরের পরে আরেক দফায় ১০ হাজার টাকা তার ছেলের বিকাশ একাউন্টের মাধ্যমে নেন বলে মামলায় বলা হয়।
প্রায় এক মাস আগের ঘটনা হলেও করোনাভাইরাসের কারণে মামলা দিতে দেরি হয়েছে বলে বাদী এজাহারে উল্লেখ করেছেন।
এই মামলায় শুক্রবার তরিকুলের সঙ্গে ফরহাদ ও নাজিম উদ্দিন নামে দুজনকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ডে চায় পুলিশ।
শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম মঈনুল ইসলাম তাদের জামিন আবেদন নাকচ করে প্রত্যেকের চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
নাজিম উদ্দিনের নাম মামলার এজাহারে না থাকলেও তদন্তে তার সংশ্লিষ্টতা বেরিয়ে এসেছে বলে আদালত পুলিশের কর্মকর্তা এসআই ফরিদ মিয়া জানিয়েছেন।