ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ বাংলাদেশের জনগনের গনতন্ত্র,বাক-স্বাধীনতা এবং মানবাধিকার সব কেড়ে নিয়েও ক্ষান্ত হচ্ছেন না অবৈধ হাসিনা সরকার। করোনা মহামারি রোধে নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে এবার সরকার সমালোচনাকারীদের সরাসরি বলছেন ষঢ়যন্ত্রকারী।
সরকার বলছে, দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীরা সরকারকে বিপদে ফেলতে এবার বেছে নিয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। সেখানে ছড়ানো হচ্ছে নানা ধরনের প্রোপাগান্ডা। এমনকি গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন জায়গার শ্রমিকদের উসকানি দিয়ে পথে নামানোর চেষ্টাও করছে। তবে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোও বসে নেই। এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, আমলা, দেশি-বিদেশি সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, রাজনৈতিক নেতা, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার শতাধিক ব্যক্তির একটি তালিকা প্রস্তুত করেছে। যাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেছে, শুধু তাদেরই এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
অবৈধ হাসিনা সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘এই ধরনের ষড়যন্ত্র কঠোরভাবে মনিটরিং করা হচ্ছে। গোয়েন্দা সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা এ ব্যাপারে তত্পর রয়েছে। এ ধরনের কোনো তত্পরতা সফল হতে দেওয়া হবে না। প্রয়োজনে গুজব সৃষ্টিকারী বা ষড়যন্ত্রকারীদের আইনের আওতায় আনা হবে।’
গোয়েন্দা সূত্র জানায়, কয়েক জন সাংবাদিক বিদেশে বসে সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিদিনই প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছেন। দেশে থাকা তাদের বন্ধু-স্বজনদের টেলিফোন ট্র্যাক করে গোয়েন্দারা ষড়যন্ত্রের অনেক তথ্যই জানতে পেরেছেন। আগামী দুই মাসের মধ্যে সরকারকে চরম বিপদে ফেলার ছকও কষছেন অনেকে। এদের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন দেশের স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক জন অধ্যাপকও। এমনকি পরিচিত বুদ্ধিজীবীরাও এ ষড়যন্ত্রে শামিল হয়েছেন। কয়েক জন ব্যবসায়ী এদের পেছনে পয়সা ঢালতেও প্রস্তুত—এমন কথা টেলিফোন রেকর্ডে মিলেছে। একটি বড়ো শিল্প গ্রুপ সরকারবিরোধী তত্পরতায় এরই মধ্যে বেশ কিছু টাকাও ঢেলেছে বলে জানা গেছে।
পুলিশের মহাপরিদর্শক ড. বেনজীর আহমেদ বলেছেন, ‘ষড়যন্ত্রকারী কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। এরই মধ্যে একটি মামলায় চার জন গ্রেফতার হয়েছে। অন্যদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। আমি মনে করি, যারা ষড়যন্ত্রকারী, তারা দেশের ভালো কখনই চান না। এই দুর্যোগে যখন সারা বিশ্বের মানুষ তাদের সরকারকে সহযোগিতা করছে, সেখানে আমাদের দেশে কিছু ষড়যন্ত্রকারী সরকারের বিরুদ্ধে নানা ধরনের প্রোপাগান্ডায় লিপ্ত। এদের সঙ্গে বিদেশে অবস্থানকারীদের যোগাযোগের তথ্য মিলেছে। পর্যায়ক্রমে সবার বিরুদ্ধেই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাউকে ছাড় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’
এই প্রসঙ্গে এক জন গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, ‘সরকার যখন করোনা দুর্যোগ সামাল দিতে ব্যস্ত তখন সরকারকে কীভাবে বেকায়দায় ফেলা যায় তারই ছক কষছেন এ ষড়যন্ত্রকারীরা। বিরোধী মতাদর্শের কয়েক জন রাজনীতিকও যোগ দিয়েছেন তাদের সঙ্গে। আমরা এমন ১০০ জনের তালিকা প্রস্তুত করেছি। তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যেসব পোস্ট দিয়েছেন তাও সংগ্রহ করা হয়েছে। তাদের কথোপকথন রেকর্ড থেকে দেখা গেছে, তারা শ্রমিকদের উসকানি দিচ্ছে। গার্মেন্টস শ্রমিকদের পথে নামিয়ে এই সেক্টরকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্রও করছে তারা। ষড়যন্ত্রের সঙ্গে কোনো কোনো গার্মেন্টস মালিকের সংশ্লিষ্ট থাকার তথ্য-প্রমাণ পেয়েছে গোয়েন্দারা। এমন বেশ কয়েকটি উদ্যোগ এরই মধ্যে ভেস্তে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তার পরও তাদের তত্পরতা থেমে নেই।’
ইতিমধ্যেই জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি, অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে চার জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব । প্রবাসী সাংবাদিক, কার্টুনিস্টসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছে র্যাব । গ্রেফতারকৃতরা হলেন কার্টুনিস্ট আহম্মেদ কবির কিশোর, ব্যবসায়ী মুশতাক আহম্মেদ, তথ্যপ্রযুক্তিবিদ ও রাষ্ট্রচিন্তার সদস্য মো. দিদারুল ইসলাম ভূঁইয়া এবং সিকিউরিটি প্রতিষ্ঠানের মালিক মিনহাজ মান্নান।
এ মামলায় অন্য আসামিরা হলেন প্রবাসী সাংবাদিক তাসনিম খলিল ও সাহেদ আলম, সায়ের জুলকারনাইন, আশিক ইমরান, ফিলিপ শুমাখার, স্বপন ওয়াহিদ ও ব্লগার আসিফ মহিউদ্দীন। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেশবিরোধী পোস্ট এবং করোনার সময়ে ত্রাণ বিতরণ ও সরকারের গৃহীত অন্যান্য ব্যবস্থা সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য ও গুজব ছড়িয়ে অপরাধ করেছেন তারা। তাই তাদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে।