জাতীয় প্রেসক্লাবে এবং ইকবাল রোড মাঠে লাখো মানুষের ভালবাসায় সিক্ত হলেন সর্বজন শ্রদ্ধেয় সাংবাদিক এবিএম মূসা।কিন্তু বাংলাদেশের প্রথম সংসদের সদস্য হিসাবে সংসদে কোন শোক প্রস্তাব না এনে আওয়ামী লীগ চরম হীনমন্যতা পরিচয় দিলো। এমন কি সংসদের দক্ষিন প্লাজায় প্রথা অনুযায়ী জনাব মূসার একটি নামাজ এ জানাজাও করতে দেয়নি সরকার।
জনাব মূসার মৃত্যুতে প্রবাসের বাংলাদেশীরা শোকে মুহ্যমান হয়ে উঠেন।কানাডা বিএনপির সভাপতি জনাব ফায়সাল আহমেদ চৌধুরী এবং সাধারন সম্পাদক একে আজাদ তার মহাপ্রয়ানে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
সাংবাদিক, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন অঙ্গনের মানুষ তাদের শ্রদ্ধার পাত্র প্রিয় মানুষটিকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে জাতীয় প্রেসক্লাবে ছুটে আসেন।
প্রথিতযশা এ সাংবাদিককে শেষশ্রদ্ধা জানান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর,তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, বিএনপির পক্ষে আবদুস সালাম, সাংবাদিক নেতাদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) একাংশের সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, অপর অংশের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) একাংশের সভাপতি আবদুল হাই শিকদার, বার কাউন্সিলের পক্ষ থেকে অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ও ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) পক্ষ থেকে সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, যমুনা টিভির পক্ষ থেকে জাকারিয়া কাজল, আবু আলম শহীদ খান, অধ্যাপক আনিসুজ্জামান,, প্রবীণ সাংবাদিক কামাল লোহানী, প্রধানমন্ত্রীর তথ্যবিষয়ক উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, ডেইলি স্টার পত্রিকার সম্পাদক মাহফুজ আনাম, আব্দুল কাইয়ুম, সাংবাদিক, লেখক ও কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ, জাতীয় পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান কাজী জাফর প্রমুখ।
এছাড়া ওয়ার্কার্স পার্টি, গণফোরাম, বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি, ঢাকা সাব এডিটরস কাউন্সিল, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল,প্রথম বাংলাদেশ পরিবার, যুগান্তর পরিবার, ফেনী সাংবাদিক ফেরাম, নোয়াখালী প্রেসক্লাব শ্রদ্ধা জানায়।
গত সোমবার ল্যাবএইডে ভর্তি হন এবিএম মূসা। তিনি ব্লাড ক্যান্সারের মতো রোগ মাইলো ডিসপ্লাস্টিক সিনড্রোমে আক্রান্ত ছিলেন। এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে তিনি বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। অবস্থার অবনতি হলে মধ্যরাতে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। তিনি হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. বরেন চক্রবর্তীর তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন ছিলেন। প্রবীণ এ সাংবাদিককে ফেরাতে সকল চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন তার নেতৃত্বাধীন বিশেষ টিম। সব চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে বুধবার সোয়া একটায় জীবনপ্রদীপ নিভে আসে দেশ ও জাতির বিবেকসম এবিএম মূসার। এর পরই তার লাইফ সাপোর্ট খুলে দেওয়া হয়।
এবিএম মূসার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। তিনি স্ত্রী সেতারা মূসা, এক ছেলে ডা. নাসিম মূসা এবং তিন মেয়ে শারমীন মুসা, মরিয়ম সুলতানা ও পারভীন সুলতানা ঝুমাসহ অসংখ্য স্বজন, ভক্ত ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় লাশবাহী গাড়িটি প্রেসক্লাবে এসে পৌঁছায়। এর আগে বেলা সাড়ে ১১টায় ল্যাবএইড হাসপাতাল শবযাত্রার গাড়িবহর রওয়ানা হয়।
জাতীয় প্রেসক্লাবে সাংবাদিক ও শুভানুধ্যায়ীদের শ্রদ্ধা জানানোর পর বাদ যোহর দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এর পর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে তার গ্রামের বাড়ি ফেনীতে।
এবিএম মূসার শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী অনুযায়ী ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার মুন্সিরহাট ইউনিয়নের কুতুবপুর গ্রামে তাকে দাফন করা হবে।
এর আগে বুধবার সন্ধ্যায় মোহাম্মদপুরের ইকবাল রোড মাঠে তার প্রথম জানাজা হয়।
পরে ফেনীর নিজ গ্রামে স্নেহময়ী মায়ের কবরের পার্শ্বে জনাব মূছা চির নিদ্রায় শায়িত হন।