ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ কোভিড-১৯ প্রতিরোধে বিশ্বের নানা দেশে চলছে টিকা ও ওষুধ তৈরির গবেষণা। পরীক্ষাধীন ওষুধের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালও শুরু করেছে কিছু দেশ। এক্ষেত্রে সবার আগে রোগীদের ওপর পরীক্ষাকৃত ওষুধ প্রয়োগের অনুমতি দিয়েছে রাশিয়া। অ্যান্টিভাইরাল ওষুধটির নাম রাখা হয়েছে ‘আভিফাভিয়ার’। ১১ জুন থেকে রোগীদের এই ওষুধ দেওয়া যেতে পারে বলে নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে হাসপাতালে। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মাসে ৬০ হাজার জনকে ঐ ওষুধের জোগান দিতে পারবে বলে জানিয়েছে ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা।
রাশিয়ার তৈরি ‘আভিফাভিয়ার’ জেনেরিক নাম ‘ফাভিপিরাভিয়ার’। ১৯৯০-এর শেষের দিকে সেটি তৈরি করে জাপানের একটি সংস্থা। আরএনএ ভাইরাস প্রতিরোধে ভালো কাজ দেয় ওষুধটি। ‘রাশিয়ান ডিরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড’-এর প্রধান কিরিল দিমিত্রিয়েভ জানিয়েছেন, ‘ফাভিপিরাভিয়ার’-এর ক্ষমতা আরো বাড়িয়ে নতুন ওষুধটি তৈরি করা হয়েছে। এর গুণাগুণ কী বাড়ানো হয়েছে, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে তা প্রকাশ করবে মস্কো। জাপানেও এই ওষুধের প্রয়োগ নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা চলছে। সেখানে এর নাম ‘আভিগান’। জাপানের প্রধানমন্ত্রী এক প্রকার অনুমোদন দিলেও এখনো রোগীদের ওপর প্রয়োগের ছাড়পত্র পায়নি ওষুধটি।
এখন পর্যন্ত কোভিড-১৯-এর কোনো নির্দিষ্ট চিকিৎসা আবিষ্কৃত হয়নি। ‘গিলিড’-এর ওষুধ ‘রেমডেসিভিয়ার’ আশার আলো দেখাচ্ছে। কিন্তু সার্বিকভাবে ব্যবহারের ছাড়পত্র পায়নি। এছাড়া অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘চ্যাডক্স-১’ নামে একটি প্রতিষেধকের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু করেছে। গবেষণায় যুক্ত বিজ্ঞানীদের দাবি, তাদের প্রতিষেধক সাফল্য পাবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো প্রতিষেধক পেতে এখনো ঢের দেরি।
এ দিকে গোটা বিশ্বে সংক্রমণ ৬৫ লাখ ছুঁইছুঁই। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ৮২ হাজারেরও বেশি মানুষের। তাই কোভিড-১৯-এর একটি কার্যকরী ওষুধ পেতে মরিয়া গোটা বিশ্ব। রাশিয়ার প্রয়োগ করা ওষুধটি যদি সেইভাবে কার্যকরী ওষুধ হিসেবে প্রমাণিত হয়, তাহলে হয়তো বিশ্বের অন্যান্য দেশেও এর ব্যাপক ব্যবহার হবে। বর্তমানে রাশিয়াতে করোনা ভাইরাসে প্রায় সাড়ে চার লাখ মানুষ আক্রান্ত।
কিরিল ডিমিত্রিয়েভ বলেন, ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে ওষুধটি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ৩৩০ জন রোগীর ওপর প্রয়োগ করে মাত্র চার দিনেই ভালো ফল মিলেছে। যে কোনো ওষুধের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল সাধারণত দীর্ঘদিন ধরে বিপুলসংখ্যক মানুষের ওপর করা হয়। কিন্তু রাশিয়া মাত্র দুই মাসের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের পরই ওষুধটির অনুমোদন দিল।