ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ করোনা মহামারীতে বাংলাদেশের সকল মানুষ করোনা সংক্রমণের আতঙ্কের মাঝে শারিরীক নানা জটিল রোগ নিয়ে দেশের ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হয়েছেন সাবেক স্বরাষ্টমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন। কিন্তু দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার বেহাল দশা হওয়ায় তার পরিবারের সদস্যগন তার ইচ্ছানুযায়ী বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা নিতে চান। এবার দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে কথা তুললো সাবেক স্বরাষ্টমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন এর পরিবারের সদস্যরা। যেতে চান বিদেশে চিকিৎসা নিতে।
হাসিনা সরকারের সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন শারীরিক নানা জটিলতা নিয়ে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তবে হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন তিনি এবং তার পরিবারের সদস্যরা।
অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুনের একান্ত ইচ্ছা তাকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা করালে তিনি হয়তো সুস্থতা লাভ করতে পারেন। এজন্য পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন সাবেক এই মন্ত্রী।
সাহারা খাতুনের চিকিৎসা সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে তার একান্ত ব্যক্তিগত সহকারী ও ভাতিজা অ্যাডভোকেট আশিকুর রহমান বলেন, আমার ফুপুকে গত ২ জুন দিনগত রাতে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করেছিলাম। সেই থেকে এখন পর্যন্ত চিকিৎসা চলছে। ওনার বর্তমান পরিস্থিতি হচ্ছে ওনাকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে। ওনার প্রেসারটা নেমে গিয়েছিল, অক্সিজেনটাও কমে গিয়েছিল। এখন একটু নিয়ন্ত্রিত অবস্থায় আসছে।
তারপরেও ডাক্তাররা বলেছেন ৭২ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে, ৭২ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখার পর বোঝা যাবে অবস্থা কী পর্যায়ে যায়। তবে আমরা খোঁজ নিয়ে দেখেছি কিছুটা উন্নতি হচ্ছে।
ইউনাইটেড হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ডাক্তাররা আমার ফুপুকে নিয়ে একেক বার একেক মন্তব্য করছেন। একেক বার একেক রিপোর্ট দিচ্ছেন। আমরা অনেকগুলো টেস্ট করিয়েছিলাম। ৪ দিন পর একটা বলছে আবার ৫ দিন পর আর একটা বলছে। যেগুলো বলছে উনার আসলে ওই ধরনের সমস্যা নেই থাকলে প্রথম রিপোর্টেই পাওয়া যেত। তারপরেও আমাদের দুর্ভাগ্য এই সমস্যাগুলো পেলাম।
আশিকুর রহমান বলেন, ওনার (সাহারা খাতুনের) করোনা নেই। ওনাকে ৪ বার টেস্ট করানো হয়েছে, তার এই ধরনের কোনো সমস্যা নেই। আমরা হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থায় চরম মর্মাহত হয়েছি। ইউনাইটেড হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থা যদি এই রকম হয় তাহলে তো অত্যন্ত দুঃখজনক।
চিকিৎসার সমস্ত ব্যয় ও সার্বক্ষণিক খোঁজ খবর রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পরিবারের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রী সবকিছু তদারকি করছেন, দেখভাল করছেন। প্রধানমন্ত্রী আমার ফুপুর চিকিৎসার জন্য বোর্ড বসিয়েছেন, তার পার্সোনাল ডাক্তার দিয়ে আমাদের সহযোগিতা করেছেন। এজন্য পরিবারের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাই।
সাহারা খাতুনের কথার উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, সর্বশেষ গতকাল যখন ফুপুর সঙ্গে দেখা করি, তখন তিনি এই মেসেজটা দেন যে, একটু দেখ না পিএমকে বলে, আপাকে বলে আমাকে যদি বিদেশে চিকিৎসা করানো যেত তাহলে আমি হয়তো ভাল হয়ে যেতাম। আমি খুবই উপকৃত হতাম এবং প্রধানমন্ত্রীর সাথে যদি একটু কথা বলতে পারতাম তাহলে আমি খুব উপকৃত হতাম। আমরা চেয়েছিলাম ফুপুকে দিয়ে তার কথাটা রেকর্ড করিয়ে পাঠাতে কিন্তু কোনোভাবেই পারলাম না। শুক্রবার (১৯ জুন) সকাল ১০টায় যখন তার সাথে কথা বলার জন্য যাব তার আগেই তার পরিস্থিতি আরও একটু অবনতির দিকে চলে যায়, যার ফলে আইসিইউতে নেওয়া হয়। আর বলা সম্ভব হয়নি। তার (সাহারা খাতুনের) একটা ইচ্ছা তিনি যদি দেশের বাইরে ট্রিটমেন্ট করাতে পারতেন তাহলে হয়তো অবস্থার উন্নতি হতো বা ভাল হতো।
প্রসঙ্গত, করোনা সংক্রমণ সারা বিশ্বে মহামারী আকারে ধারণ করেছে। করোনা ভাইরাসের প্রাদূর্ভাব বাংলাদেশে দেখা দিয়েছে গত মার্চ মাসের ৮ তারিখে। করোনা সংক্রমণ এদেশে কাউকেই ছাড় দিচ্ছে না। সকল শ্রেণীর মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে করোনায়। কিন্তু সাবেক স্বরাষ্টমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুনকে ৪ বার করোনা টেষ্ট করা হয়েছে। কিন্তু তার করোনা নেগেটিভ আসছে।