ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ কোভিড-১৯ ভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা ও চিকিৎসায় চরম প্রতারণার অভিযোগে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির সদস্য এবং রিজেন্ট হাসপাতাল গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. সাহেদকে হন্যে হয়ে খুঁজছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। শিগগিরই তাকে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লে. কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম। তিনি দেশ ছেড়ে পালাতে পারবেন না বলেও জানান সারওয়ার।
আজ বুধবার দুপুরে র্যাব সদর দফতরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানান তিনি।
সারওয়ার বিন কাশেম বলেন, দুই রাত ধরেই তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। বিভিন্ন জায়গায় আমরা খোঁজ করছি। বলে রাখতে চাই, সে অবশ্যই ধরাছোঁয়ার বাইরে নয়। কারণ কেউই ধরাছোঁয়ার বাইরে নয়। যারাই আইনের ঊর্ধ্বে যাওয়ার চেষ্টা করবে অবশ্যই তাকে আমরা আইনের আওতায় আনতে সক্ষম। তার বিষয়ে অন্যান্য সংস্থাও পুর্ন সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।
তিনি বলেন, রিজেন্টের প্রতারণায় ১৭ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত আরও ৯ জনকে আসামি করে নিয়মিত মামলা হয়েছে। মামলার প্রধান আসামি প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান সাহেদ পলাতক।
অভিযানের পর পরই তিনি গাঢাকা দিয়েছেন। গতকাল রাতেও আমরা বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়েছি। সাহেদের মোবাইল নম্বর বন্ধ। প্রথম দিন দেখেছিলাম ফেসবুকে অ্যাক্টিভ ছিলেন, কিন্তু এখন তিনি সবকিছু থেকেই নিষ্ক্রিয়। তবে আশা করছি দ্রুত তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে সক্ষম হবো।
এক প্রশ্নের জবাবে অচিরেই এই প্রতারক সাহেদকে গ্রেফতারের সুখবর দিতে পারবেন আশা প্রকাশ করে র্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, তিনি অবশ্যই ধরাছোঁয়ার বাইরে নন।
সারওয়ার বলেন, রিজেন্ট হাসপাতাল হোম ডেলিভারির মতো বাসায় গিয়ে করোনার নমুনা সংগ্রহ করে দ্রুততার সঙ্গে রিপোর্ট সরবরাহ করছিল। প্রাথমিক তথ্যের ভিত্তিতে আমরা গোয়েন্দা নজরদারি বাড়িয়েছি। এরপর কেঁচো খুঁড়তে সাপ নয়, এনাকোন্ডা বের করে আনতে সক্ষম হই।
রিজেন্টের চেয়ারম্যান সাহেদের বিষয়ে তিনি বলেন, বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমে তার নানা অপকর্মের কথা জানতে পেরেছি। বিভিন্ন সময় তিনি প্রতারণার দায়ে আটক হয়েছিলেন, জেলও খেটেছেন। মিথ্যাকে কেন্দ্র করেই তার উত্থান। ভুয়া পরিচয় দিয়ে নানাভাবে প্রতারণা করেছেন মানুষের সঙ্গে। সে একটা এমএলএম কোম্পানি খুলে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিয়েছিল, যার জন্য জেলও খেটেছে। আমরা জানতে পারছি তার আরও অনেক নামে-বেনামে প্রতিষ্ঠান রয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে লাইসেন্সও নেয়া হয়নি। উল্লেখ করতে চাই, প্রতিদিন নানা জায়গা থেকে অসংখ্য ফোন রিসিভ করছি, তারা সাহেদের অপকর্ম-অরাজকতার বিষয়ে জানাচ্ছে।
সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে ছবি তোলাকে কেন্দ্র করেই তিনি প্রতারণা করতেন। প্রতারণার জন্যই ছবিগুলো তুলেছে বলে তদন্তে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে। তবে এক্ষেত্রে বেসরকারী টেলিভিশন চ্যানেল গুলোর ভুমিকা সম্পর্কে কিছু বলেনি র্যাব।