DMCA.com Protection Status
title="৭

আবার এলো বৈশাখ: এসো মিলি আজ প্রাণের উৎসবে

image_123135'মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা/অগি্নস্নানে শুচি হোক ধরা/রসের আবেশরাশি শুষ্ক করে দাও আসি/আনো আনো আনো তব প্রলয়ের শাঁখ/মায়ার কুজ্ঝটিজাল যাক দূরে যাক/এসো হে বৈশাখ এসো এসো।'_ আজ পহেলা বৈশাখ, ১৪২১ বঙ্গাব্দ। বাঙালির উৎসবের দিন।

দিবসটি বাঙালির সর্বজনীন উৎসবে পরিণত হওয়ার মূলে রয়েছে বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি। বৈশাখ সম্পর্কে খনা বলেছেন, 'বৈশাখের প্রথম জলে আশুধান দ্বিগুণ ফলে অথবা মাঘে মুখী, ফাল্গুনে চুখী, চৈত্রে লতা, বৈশাখে পাতা ইত্যাদি।' রবীন্দ্রনাথ বলেছেন, 'পহেলা বৈশাখ বাংলা ভাষাভাষী মানুষদের বাৎসরিক একটি অনুষ্ঠানের দিন।'

নতুন বছরকে বরণ করে নিতে গোটা জাতি অপেক্ষা করে পুরো একটি বছর। প্রতীক্ষার অবসানে বাঙালির সে কী বাঁধভাঙা উল্লাস। আর তাই হৃদয়ের সবটুকু উষ্ণতা দিয়ে বৈশাখকে বরণও করে নেয়। পূর্ব দিগন্তে সূর্যের আগমনে, কথা আর সুরে ধ্বনিত হবে গোটা জাতির মঙ্গলবার্তা। আর এই মঙ্গলালোকে স্নাত হতে বাঁধভাঙা জোয়ারে মানুষ আছড়ে পড়বে শহর-বন্দরসহ প্রতিটি জনপদে। রাজধানী ঢাকার চিরচেনা রূপ বদলে যাবে। সকালে রমনার বটমূলে ছায়ানটের সুর ধ্বনিতে মানুষের যে অংশগ্রহণ কিংবা মঙ্গল শোভাযাত্রায়_ সারাদিন এমনই ব্যস্ততা থাকবে সবখানে। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বাঙালির সবচেয়ে বড় সর্বজনীন ও অসাম্প্রদায়িক এই উৎসবের আনন্দে মাতোয়ারা এখন সারাদেশ। হাজার বছরের ঐতিহ্যে লালিত সমৃদ্ধ এই সংস্কৃতির চেতনা বিকশিত বাঙালির দেহ-মনে। বসনে-ভূষণে বৈশাখকে ধারণ করে বাঙালি আজ মেতে উঠবে প্রাণের জোয়ারে। বাঙালির ঘরে ঘরে থাকবে নববর্ষের নানা আয়োজন। সেই সঙ্গে পান্তা-ইলিশ, মুড়ি-মুড়কি, নাড়ু, খই আর ম-া-মিঠাই-বাতাসার স্বাদ গ্রহণের হিড়িক।

পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে আজ সরকারি ছুটি। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধীদলীয় নেত্রী রওশন এরশাদ এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া পৃথক বাণীতে দেশবাসীকে ১৪২১ বঙ্গাব্দের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। সংবাদপত্রগুলোও প্রকাশ করেছে বিশেষ ক্রোড়পত্র। রেডিও-টেলিভিশনে প্রচারিত হবে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা। সেই সঙ্গে বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নানা আয়োজন আর ব্যবসায়ীদের হালখাতা_ সব মিলিয়ে সারাদেশে এখন বইছে উৎসবের আমেজ।

উৎসবপ্রিয় বাঙালিকে গ্রীষ্মের দাবদাহ আজ রুখতে পারবে না। বর্ষবরণের উৎসবের আমেজে মুখরিত থাকবে আজ বাংলার চারদিক। দেশের পথে-ঘাটে, মাঠে-মেলায়, অনুষ্ঠানে থাকবে কোটি মানুষের প্রাণচাঞ্চল্য আর উৎসবমুখরতা। পহেলা বৈশাখের শুভ লগ্নের আনন্দে আজ বাঙালি ধর্মান্ধ অপশক্তির কূট-ষড়যন্ত্রের জাল ভেদ করার আর কুসংস্কার-কূপম-ুকতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অনুপ্রেরণা নেবে, হবে ঐক্যবদ্ধ। চিরাচরিত ঐতিহ্য অনুযায়ী ধর্ম-বর্ণ, ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে সবাই মেতে উঠবে বৈশাখী উৎসবে। নতুনের আবাহনে অন্তরে গীত হবে নজরুলের 'তোরা সব জয়ধ্বনি কর/ঐ নূতনের কেতন ওড়ে কালবোশেখীর ঝড়'। এই ধ্বনির মধ্য দিয়েই বাঙালি ফেলে আসা বছরের সব অপ্রাপ্তি ভুলে গিয়ে নতুন বছরে সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত করবে। ভাষা আন্দোলন এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় একটি আত্মমর্যাদাসম্পন্ন গণতান্ত্রিক-অসাম্প্রদায়িক-সমাজতান্ত্রিক দেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়েই বাঙালি পালন করবে এবারকার পহেলা বৈশাখ।

পাখিডাকা ভোরে রমনার বটমূলে বর্ষবরণের গান, মঙ্গল শোভাযাত্রা এবং হাজারো কণ্ঠে বর্ষবরণের গানসহ নানা রকম সাংস্কৃতিক আয়োজন আর মেলায় বর্ণবহুল হয়ে উঠবে গোটা ঢাকা শহর। গত পাঁচ দশকের রীতি অনুযায়ী, ভোর সোয়া ৬টায় রমনার বটমূলে ছায়ানটের প্রভাতি অনুষ্ঠানে সরোদের আহীর-ভৈরব সুরের আলাপ দিয়ে শুরু হবে বর্ষবরণের আনুষ্ঠানিকতা। আর এর সঙ্গে সঙ্গেই রমনা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, ধানম-ির লেকের পাড় এবং সংসদ ভবনসহ শেরেবাংলানগর, গুলশান, বনানী, উত্তরা, মিরপুর ও যাত্রাবাড়ী, এক কথায়, পুরো ঢাকা মহানগরী পরিণত হবে বৈশাখী আমেজে। কাকডাকা ভোর থেকেই নগরীর পিচঢালা পথে নামবে বর্ণিল রঙের ছটা। পথে ঢল নামবে বাঙালি সংস্কৃতি লালনকারী আনন্দপিপাসু নগরবাসীর। সবার পরনেই থাকবে বৈশাখী রং লাল-সাদায় বাহারি নকশা করা শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ থাকবে নারীর বসন। পায়ে আলতা, হাতে মেহেদি আর খোঁপায় থাকবে তাজা ফুলের মালা। পুরুষদের বসন পাঞ্জাবি-ফতুয়ায়ও থাকবে লাল-সাদার আধিক্য। শিশুরাও এদিন মা-বাবার হাত ধরে আসবে বাঙালি সাজেই, প্রায় সবাই। বিশেষ করে শিশু, তরুণ-তরুণীদের কপালে, গালে আর বাহুতে থাকবে বাঙালি সংস্কৃতির লোকজ মোটিফ। অাঁকিয়েরা তুলির অাঁচড়ে এঁকে দেবেন ঢাকঢোল, একতারা, পাখি, ফুল এবং টেপা পুতুলের উল্কি।

শুধু বসনে নয়, খাদ্যাভ্যাসেও আসবে পরিবর্তন। অভিজাত রেস্তোরাঁ থেকে শুরু করে সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যান আর রমনা উদ্যানের খাবারের দোকানে মিলবে পান্তা-ইলিশ। কয়েক বছর ধরে নববর্ষ উদযাপনের অন্যতম প্রধান অনুষঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে পান্তা-ইলিশ। শুধু পান্তা-ইলিশই নয়, খাবারের প্লেটে আরো স্থান পাবে বিভিন্ন সুস্বাদু বাঙালি পদ। এসবের মধ্যে রয়েছে শর্ষে ইলিশ, ইলিশভাজা, শুঁটকি, বেগুন, ডাল, আলু এবং কালিজিরাসহ নানা রকম ভর্তা।

পহেলা বৈশাখ ঠিক কবে থেকে পালিত হয়ে আসছে, তা নিয়ে প-িতদের মধ্যে রয়েছে মতভেদ। বিভিন্ন বই-পুস্তক ঘেঁটে জানা যায়, হিন্দু সৌর পঞ্জিকা অনুসারে বাংলা ১২টি মাস অনেক আগে থেকেই পালিত হতো। এই সৌর পঞ্জিকার শুরু হতো গ্রেগরীয় পঞ্জিকায় এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে। হিন্দু সৌর বছরের প্রথম দিন আসাম, বঙ্গ, কেরালা, মণিপুর, নেপাল, উড়িষ্যা, পাঞ্জাব, তামিলনাড়ু এবং ত্রিপুরার সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে অনেক আগে থেকেই পালিত হতো। এখন যেমন নববর্ষ নতুন বছরের সূচনার নিমিত্তে পালিত একটি সর্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে, একসময় এমনটি ছিল না। তখন নববর্ষ বা পহেলা বৈশাখ আত্ম উৎসব তথা ঋতুধর্মী উৎসব হিসেবে পালিত হতো। তখন এর মূল তাৎপর্য ছিল কৃষিকাজ। প্রযুক্তি প্রয়োগের যুগ শুরু না হওয়ার আগ পর্যন্ত কৃষকদের ঋতুর ওপরই নির্ভর করতে হতো।

ইতিহাস বলে, ভারতবর্ষে মোগল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার পর সম্রাটরা হিজরি পঞ্জিকা অনুসারে কৃষিপণ্যের খাজনা আদায় করতেন। কিন্তু হিজরি সন চাঁদের ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় তা কৃষি ফলনের সঙ্গে মিলত না। এতে অসময়ে কৃষকদের খাজনা পরিশোধ করতে বাধ্য করা হতো। খাজনা আদায়ে সুষ্ঠুতা প্রণয়নের লক্ষ্যে মোগল সম্রাট আকবর বাংলা সন প্রবর্তন করেন। তিনি মূলত প্রাচীন বর্ষপঞ্জিতে সংস্কার আনার আদেশ দেন। সম্রাটের আদেশমতে, তৎকালীন বাংলার বিখ্যাত জ্যোতির্বিজ্ঞানী ও চিন্তাবিদ ফতেহউল্লাহ সিরাজি সৌর সন এবং আরবি হিজরি সনের ওপর ভিত্তি করে নতুন বাংলা সনের নিয়ম তৈরি করেন। ১৫৮৪ খ্রিস্টাব্দের ১০ বা ১১ মার্চ থেকে বাংলা সন গণনা শুরু হয়। তবে এই গণনা পদ্ধতি কার্যকর করা হয় আকবরের সিংহাসন আরোহণের সময় (৫ নভেম্বর, ১৫৫৬) থেকে। প্রথমে এই সনের নাম ছিল ফসলি সন। পরে বঙ্গাব্দ বা বাংলা বর্ষ নামে পরিচিতি লাভ করে।

পহেলা বৈশাখ উদযাপন আকবরের শাসনামল থেকেই শুরু হয়। চৈত্র মাসের শেষ দিন, অর্থাৎ চৈত্রসংক্রান্তির দিনে সব খাজনা, মাসুল ও শুল্ক পরিশোধ করতে হতো। এর পরদিন, অর্থাৎ পহেলা বৈশাখে ভূমিমালিকরা নিজ নিজ অঞ্চলের অধিবাসীদের মিষ্টান্ন দ্বারা আপ্যায়ন করতেন। এ থেকেই হালখাতার প্রচলন শুরু হয়। গ্রাম-গঞ্জে মানুষ আবহমানকাল ধরেই পহেলা বৈশাখ পালন করে এলেও শহরে পালন শুরু হয়েছে উনিশ শতকে। দেশে তখন স্বদেশি আন্দোলনের যুগ। ব্রিটিশদের 'হ্যাপি নিউ ইয়ার' ধারণাকে দাঁতভাঙা জবাব দিতে গ্রামে-গঞ্জের সর্বজনীন উৎসব পহেলা বৈশাখ নাগরিকরা উদযাপন করতে শুরু করে। ক্রমেই জনপ্রিয়ও হয়ে ওঠে এই উৎসব।

পাকিস্তান আমলে তৎকালীন শাসকগোষ্ঠী পহেলা বৈশাখ পালনের ব্যাপারটিকে সুনজরে দেখেনি। এ ব্যাপারে হিন্দুয়ানিসহ বিভিন্ন অভিযোগ তোলা হয়েছিল। বাংলা নববর্ষ উদযাপনের ক্ষেত্রে রাজধানী ঢাকায় ১৯৬৫ সালে যুক্ত হয় নতুন মাত্রা। ওই বছর রমনার বটমূলে সাংস্কৃতিক সংগঠন 'ছায়ানট' আয়োজন করেছিল বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। এরপর থেকে প্রতি বছর রমনার বটমূলে অনুষ্ঠিত হয় বর্ষবরণ অনুষ্ঠান, যা এখন ঢাকার বাংলা বর্ষবরণের প্রধান উৎসব।

পহেলা বৈশাখের কর্মসূচি

বাংলা নববর্ষ ঘিরে উৎসবমুখর রাজধানীতে আজ থাকছে নানা আয়োজন। বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক-রাজনৈতিক সংগঠন থেকে শুরু করে পাড়া-মহল্লার যুবক-কিশোররাও আয়োজন করেছেন বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালার।

ছায়ানট : পহেলা বৈশাখ উদযাপনের সবচেয়ে বড় এবং আকর্ষণীয় আয়োজন রমনার বটমূলে ছায়ানটের প্রভাতি আয়োজন। ছায়ানটের সাধারণ সম্পাদক খায়রুল আনাম শাকিল জানান, ভোর সোয়া ৬টায় সরোদের আহীর-ভৈরব সুরের আলাপ দিয়ে শুরু হবে অনুষ্ঠান। প্রতিধ্বনিত হবে বাঙালির অন্তরের কথা। গান ও কথায় মাতিয়ে রাখবেন ছায়ানটের শিক্ষক, শিল্পী এবং সঙ্গীত বিদ্যায়তনের শিক্ষার্থীরা। এবারকার বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের প্রতিপাদ্য 'স্বদেশ ও সম্প্রীতি' হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই ছায়ানটের পরিবেশনায় প্রাধান্য পাবে স্বদেশ পর্যায়ের গান। এবারকার আয়োজনে সম্মেলক গানের দলে সব মিলিয়ে অংশ নেবেন ১৫০ জন শিল্পী, যার মধ্যে ৮২ জন শিশু-কিশোর শিক্ষার্থী। আবৃত্তি পরিবেশন করবেন তিনজন। শিল্পীদের পোশাকের ক্ষেত্রে এবার থাকছে ইন্ডিগো-বস্নু শাড়ি আর সাদা পাঞ্জাবি। বরাবরের মতো প্রভাতি এই আয়োজনের পরিসমাপ্তি ঘটবে ছায়ানটের সভাপতি ও রবীন্দ্র গবেষক ড. সনজীদা খাতুনের বৈশাখী কথনের মধ্য দিয়ে।

চারুকলার মঙ্গল শোভাযাত্রা : পহেলা বৈশাখের অন্যতম বড় আকর্ষণ হচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা শিক্ষার্থীদের আয়োজনে মঙ্গল শোভাযাত্রা। 'জাগ্রত কর-উদ্যত কর-নির্ভয় কর হে' সেস্নাগানে সোমবার সকাল ৯টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সামনে থেকে বের হবে মঙ্গল শোভাযাত্রা। এর নেতৃত্ব দেবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক এবং চারুকলা অনুষদের ডিন সৈয়দ আবুল বারক আলভী। শোভাযাত্রাটি চারুকলার সামনে থেকে শুরু হয়ে রূপসী বাংলা হোটেল-চারুকলা-টিএসসি হয়ে চারুকলায় এসে শেষ হবে।

বরাবরের মতো লোকজ ধারার শিল্পকর্ম থাকবে শোভাযাত্রাজুড়ে। তবে সবকিছু ছাপিয়ে এবার শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের জন্মশতবর্ষের কারণে তিনি থাকবেন সবার আগ্রহের কেন্দ্রে। সবকিছুতেই তাকে প্রাধান্য দেয়ার একটা মানসিকতা রয়েছে চারুকলার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাঝে। শোভাযাত্রার মূল আকর্ষণ থাকছে মা ও শিশু। এছাড়া প্রায় ২০ ফুট উচ্চতার তোরণ এবং পাখি, চরকা, গাজীরপটের বাঘ ও মানুষ, বিড়ালের চিংড়ি খাওয়া, মাছের ঝাঁক, লক্ষ্মীপেঁচা, শিশু হরিণ, হাঁস এবং বাঘের মুখ থাকছে শোভাযাত্রাজুড়ে। ১১টি স্ট্রাকচার আর বড়-ছোট প্রায় ২০০টি মুখোশও রয়েছে। মুখোশে তুলে ধরা হবে রাজা-রানী, উজির-নাজির, লক্ষ্মীপেঁচা, খরগোশ, বাংলার বাঘ, ধূর্ত শেয়ালের প্রতীক। শোভাযাত্রায় যাতে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতির ঘটনা না ঘটে, সেজন্য পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে থাকবে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

সুরের ধারা ও চ্যানেল আই : নববর্ষ উপলক্ষে সোমবার 'লাক্স : হাজারো কণ্ঠে বর্ষবরণ-১৪২১' শিরোনামের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে সুরের ধারা ও চ্যানেল আই। এবার এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে লাক্স। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সবার জন্য উন্মুক্ত এই বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন সুবীর নন্দী, সুজিত মোস্তফা, রফিকুল আলম, শাকিলা জাফর, ফাহমিদা নবী, সামিনা চৌধুরী, তপন চৌধুরী, লিলি ইসলাম, শাহনাজ নাসরিন ইলা এবং কোনালসহ সারাদেশের এক হাজার কণ্ঠশিল্পী। অনুষ্ঠানের সার্বিক তত্ত্বাবধান করবেন রবীন্দ্রসঙ্গীতশিল্পী ও সুরের ধারার অধ্যক্ষ রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা। সূর্যোদয় থেকে শুরু হওয়া এই বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের 'নূরুলদীনের সারা জীবন' থেকে একটি অংশ উপস্থাপন করা হবে। এছাড়া অনুষ্ঠানস্থলে থাকবে মেলার আয়োজন।

অন্যান্য আয়োজন : শাহবাগে শিশু পার্কের সামনে নারিকেলবীথি চত্বরে ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠী প্রভাতি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বাংলা নববর্ষকে হৃদয়ের অর্ঘ্যে আহ্বান জানাবে। অনুষ্ঠান শুরু হবে সকাল সাড়ে ৭টায়। অনুষ্ঠান উদ্বোধন করবেন বেসামরিক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন।

নববর্ষ উপলক্ষে খেলাঘর আসর ঢাকা মহানগর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলায় বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করেছে। অনুষ্ঠানে শিশুদের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা জানানো হবে ভারত সরকারের পদ্মভূষণ পদক অর্জনকারী অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামানকে। অনুষ্ঠানটির উদ্বোধন করবেন কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসরের সভাপতি মাহফুজা খানম। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। 

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!