ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে মানব এবং অর্থ পাচারের দায়ে কয়েতে আটক লক্ষ্মীপুর-২ আসনের মিডনাইট সংসদ সদস্য কাজী শহিদুল ইসলাম পাপুলের ২৩ বছর বয়সী শ্যালিকা জেসমিন প্রধান ৫০০ কোটি টাকার অবৈধ সম্পত্তির মালিক। শুধু তার পাঁচটি ব্যাংক হিসাবেই ১৪৮ কোটি ৪২ লাখ টাকার তথ্য পাওয়া গেছে। অথচ একটা সময় জেসমিনের পরিবারে তিন বেলা ঠিকমতো খাবার জুটতো না, অর্থের অভাবে তার লেখাপড়াও হয়নি।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, মাত্র সাত বছরের ব্যবধানে দিনমজুর বাবার সন্তান জেসমিন প্রধান বিত্তশালী বনে গেছেন। তার নামে বাড়ি, গাড়ি, আলিশান ফ্ল্যাট সবই আছে। যদিও তার নিজস্ব কোনো আয়ের উৎস নেই।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সাংসদ পাপুল অর্থ ও মানবপাচারের মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়া অবৈধ সম্পদ আড়াল করতে সেগুলো শ্যালিকার অ্যাকাউন্টে রাখেন। আর তা বৈধ দেখাতে শ্যালিকা জেসমিনের মালিকানায় 'লিলাবালি' নামের একটি কাগুজে প্রতিষ্ঠানও গড়ে তোলেন। ওই প্রতিষ্ঠানের আড়ালে টাকাগুলো বৈধভাবে পাচার করা হয়।
২০১২ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত জেসমিন প্রধানের পাঁচটি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে পাচার করা হয় ১৪৮ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে তিনি এখন প্রায় ৫০০ কোটি টাকার মালিক।
অনুসন্ধান প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, একটি ব্যাংকে ৩৪টি এফডিআরসহ বিভিন্ন ব্যাংকে জেসমিনের প্রায় ৪৪টি হিসাব পাওয়া গেছে। এসব টাকার কোনো উৎস তিনি দেখাতে পারেননি। তাই তার বিরুদ্ধে আরো মামলা করতে যাচ্ছে দুদক।
জেসমিন প্রধানের নিজ নামে ২০টি এফডিআরে এক কোটি টাকা, বোন সেলিনা ইসলামের নামে ২৯৫টি এফডিআরে ২০ কোটি ৮৬ লাখ টাকা, শহিদুল ইসলাম পাপুলের নামে ২৩টি এফডিআরে ২ কোটি ১৮ লাখ টাকা এবং পাপুলের মেয়ে ওয়াফা ইসলামের নামে ৪১টি এফডিআরে ২ কোটি ২৯ লাখ টাকার তথ্য পাওয়া গেছে। সব মিলিয়ে মোট ২৬ কোটি ৩৪ লাখ টাকা জেসমিন প্রধানের একটি ব্যাংকের হিসাবে লগ্নি করে ২৫ কোটি ২৩ লাখ টাকার ওভার ড্রাফট সুবিধা গ্রহণের প্রমাণ মেলে।