সকাল হতেই উৎসবপ্রিয় বাঙ্গালীর কেউ ছুটছেন রমনার বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে ‘মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা’ গানের সঙ্গে কণ্ঠ মেলাতে, কেউবা আবার চারুকলায় মঙ্গল শোভাযাত্রার মাধ্যমে নতুন বছরকে বরণ করে নিতে। সাধারণ মানুষের মতো তারকারাও এসব আয়োজন থেকে বাদ যায়নি। তবে তারকাখ্যাতি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রত্যেক অভিনেতা অভিনেত্রী কিংবা শিল্পীদের বৈশাখ উদযাপনের ধরণটাও পাল্টে গেছে। ফলে সেকালের সঙ্গে একালের অনেক কিছু যোগ হয়েছে আবার অনেক কিছু হারিয়েও গিয়েছে।
পহেলা বৈশাখ উদযাপনে একাল সেকাল নিয়ে তারকারা কি ভাবছেন, তা জানতে নতুন পুরনো তারকাদের মুখোমুখি হয় এই প্রতিবেদক।
চিত্রনায়িকা মৌসুমী
একসময় পহেলা বৈশাখ বলতেই বুঝতাম মেলায় গিয়ে নাগরদোলায় চড়া, আর মুড়িমুড়কি খাওয়া। পুরনোকে ঝেড়ে ফেলে নতুন দিনের স্বপ্ন দেখতে শুরু করা। আর এখন তো কত ব্যস্ততা। সকাল হতেই বেরিয়ে পরেছি অ্যাসাইনমেন্টে। আরএফএলের শুবেচ্ছাদূত হিসেবে আমাকে সাত বিভাগে পৃথক কয়েকটি বৈশাখী অনুষ্ঠান অংশ নিতে হবে। ব্যস্ততার মাঝেও আমার পরিবারের সকলের জন্যে নতুন পোশাক কিনেছি। সবাইকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি, আবার আমিও অনেকের শুভেচ্ছা পাচ্ছি। তবে আমার কাছে সেই ছোটবেলার পহেলা বৈশাখই বেশি আনন্দের ছিল।
সংগীতশিল্পী বাপ্পা মজুমদার
আগে পহেলা বৈশাখে আমরা পাড়া মহল্লায় মেলায় ঘুরতে যেতাম। সকাল থেকেই দলবেঁধে মেলায় গিয়ে নাগরদোলায় চড়তাম। এমন কি এখনকার মতো তখনও নববর্ষের শুভেচ্ছা বিনিময় করতাম। কিন্তু ব্যস্ততার কারণে এখন আর সেইসব সুযোগ হয়না। তাই প্রতিবারই কোনো কোনা কনসার্টে অংশ নিয়ে নাগরিক জীবনে অভ্যস্থ মানুষকে অন্তত একটি দিনের জন্যে হলেওেআনন্দ দিতে চেষ্টা করি।
মডেল ও অভিনেত্রী প্রভা
পহেলা বৈশাখ মানেই মেলায় ঘুরতে যেতাম, এখন আর তা সম্ভব হয় না। শুটিং না থাকলেও সম্ভব নয়। কারণ যেখানেই যাই না কেন ভক্তরা ঠিকই চিনে ফেলেবে। ফলে একটা হুড়োহুড়ি তৈরি হবে। তবে মিডিয়াতে কাজ শুরু করার আগে নিয়মিত ভাবেই মেলায় ঘুরতে যেতাম। এমন কি সারাদিনই ঘুরে বেড়াতাম।আর বিয়ের পর তো দায়িত্বও বেড়ে গিয়েছে। তাই পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে পরিবারের সবার জন্যে শপিং করেছি। রাতে সবাই মিলে বাইরে কোথাও খেতে যাব। এর বাইরে আর কিছু করার নেই।
মডেল মুমতাহিনা টয়া
প্রতিবারই পহেলা বৈশাখে বন্ধুবান্ধবীদের সঙ্গে মজা করে ঘুরে বেড়াই। এখনও তার ব্যতিক্রম হয় না। তবে শুটিংয়ের ব্যস্ততার কারণে খুব বেশি কিছু করা যায় না। আর আজ সারাদিন বাসাতেই আছি। কারণ গতকাল সারারাত মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে বৈশাখের আল্পনা আঁকা হয়। যা চ্যানেল নাইনে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। রাতব্যাপী এই অনুষ্ঠানটি আমি উপস্থাপনা করেছি, তাই ব্যাপক ক্লান্ত।তবে একবারের জন্যে হলেও ঘুরেতে বের হব।
অভিনেতা চঞ্চল
গ্রামে থাকতে বৈশাখে মেলায় গিয়ে মণ্ডা-মিঠাইয়ের দোকানে ভিড় জমাতাম। আর বাড়িতে বিশেষ খাবার রান্না হত। তবে ঢাকায় চলে আসার পর সবকিছু পাল্টে যায়। কারণ চারুকলার ছাত্র হিসেবে মঙ্গল শোভাযাত্রার জন্যে কাজ করতাম। বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে সারাদিন নেচে গেয়ে বেড়াতাম। আর এখন এতা ব্যস্ত থাকি যে, মঙ্গলশোভাযাত্রায় আর যেতে পারি না। তা নিয়ে প্রতি বছরই আফসোস করি।
সংগীতশিল্পী কনা
এক সময় পহেলা বৈশাখ উদযাপনের জন্যে টানা কয়েকদিন প্রস্তুতি নিতাম। কি করব, কোথায় যাব কিংবা কি খাব। এখনও পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে কয়েকদিন ধরে প্রস্তুতি গ্রহণ করি, তবে তা কনসার্টে শ্রোতাদের আনন্দ দেয়ার জন্যে। যেমন আজ দুপুর বেলা রমনায় একটি কনসার্টে অংশ নিচ্ছি। তাছাড়া রাত পযর্ন্ত কয়েকটি কনসার্ট রয়েছে।