DMCA.com Protection Status
title="৭

এমপি পাপুল,মেয়ে-শ্যালিকাসহ ৬জনের নামে সিআইডির মামলাঃ৬১৩ কোটি টাকা ফ্রিজ।

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ  কুয়েতের কারাগারে আটক  লক্ষ্মীপুর-২ আসনের মিডনাইট এমপি কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে অর্থপাচারের অভিযোগ এনে মামলা করেছে সিআইডি। এ ছাড়া পাপুলের ভাই ও শ্যালিকার দুটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেও এই মামলা করা হয়েছে।

এদিকে,মিডনাইট সংসদ সদস্য কাজী শহীদুল ইসলাম পাপুল, তার স্ত্রী সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য সেলিনা ইসলাম, মেয়ে ওয়াফা ইসলাম ও শ‌্যালিকা জেসমিন প্রধানের নামে মোট ৮টি ব্যাংক হিসাবে থাকা ৬১৩ কোটি টাকা ফ্রিজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক।

বুধবার দুদকের তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদনের প্রেক্ষিতে কমিশন তা মঞ্জুর করে। বিষয়টি এখন আদালতকে অবহিত করা হবে।

এদিকে তাদের চারজনের নামে দেশের বিভিন্ন স্থানে ৩০.২৭ একর জমি ও গুলশানের একাধিক ফ্ল্যাট ক্রোক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক।

মঙ্গলবার পল্টন থানায় মানি লন্ডারিং আইনে এই মামলাটি দায়ের করে সিআইডি।  মামলায় ৩৮ কোটি ২২ লাখ ৪০ হাজার ৫৬৭ টাকা পাচার করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

এমপি পাপুল ছাড়াও মামলার অপর আসামিরা হলেন- পাপুলের মেয়ে ওয়াফা ইসলাম (২৬), শ্যালিকা জেসমিন প্রধান (২৩), ভাই কাজী বদরুল আলম লিটন, ব্যক্তিগত কর্মচারী মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান মনির (৩৫) এবং জব ব্যাংক ইন্টারন্যাশনালের ব্যবস্থাপক গোলাম মোস্তফা (৫৬)।

এছাড়াও ‍পাপুলের ভাই কাজী বদরুল আলম লিটনের প্রতিষ্ঠান জব ব্যাংক ইন্টারন্যাশনাল ও শ্যালিকা জেসমিন প্রধানের প্রতিষ্ঠান জে. ডব্লিউ লীলাবালীর বিরুদ্ধে অর্থপাচারের এই মামলা করা হয়েছে।

এদিকে, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের মামলায় এমপি পাপুলের স্ত্রী সংসদ সদস্য সেলিনা ইসলাম ও তার মেয়ে ওয়াফা ইসলামকে আগাম জামিন না দিয়ে তাদের আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ২৮ ডিসেম্বরের মধ্যে বিচারিক আদালতে তাদেরকে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে। মঙ্গলবার বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

প্রসঙ্গত, লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য পাপুলকে গত ৬ জুন রাতে কুয়েতের মুশরিফ এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। মারাফি কুয়েতিয়া কোম্পানির অন্যতম মালিক পাপুলের সেখানে বসবাসের অনুমতি রয়েছে।

পাচারের শিকার পাঁচ বাংলাদেশির অভিযোগের ভিত্তিতে পাপুলের বিরুদ্ধে মানবপাচার, অর্থপাচার ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের শোষণের অভিযোগ এনেছে কুয়েতি প্রসিকিউশন। ১৭ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের পর এখন তাকে রাখা হয়েছে কুয়েতের কেন্দ্রীয় কারাগারে।

কুয়েতি কর্মকর্তাদের কীভাবে কত টাকা ঘুষ দিয়েছেন, সে বিষয়ে রিমান্ডে বিস্তারিত তথ্য দিয়েছেন পাপুল। যা প্রসিকিউটরদের বরাতে প্রকাশ করছে স্থানীয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম। সেখানে নাম আসায় কুয়েতের দুই এমপির বিরুদ্ধেও পাপুলকে বেআইনি কাজে সহযোগিতা এবং অর্থপাচারে জড়িত থাকার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আনা হয়।

মামলার তদন্তের সময় অভিযুক্ত হিসেবে ১৩ জনের নাম উঠে আসে। এর মধ্য থেকে চারজনকে তদন্তকালে বাদ দেয়া হয়।

সাধারণ শ্রমিক হিসেবে কুয়েত গিয়ে বিশাল সাম্রাজ্য গড়া পাপুল ২০১৮ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তার মালিকানাধীন মারাফি কুয়েতিয়া কোম্পানি পরিচ্ছন্নতাকর্মী নেয়ার কাজ করলেও কুয়েতে অন্যান্য ব্যবসার কাজও বাগিয়েছিলেন পাপুল।

এর আগে গালফ নিউজের খবরে বলা হয়েছিল, ‘জেনারেল ট্রেডিং অ্যান্ড কনট্রাক্টিং’ নামক লাইসেন্স ছিল পাপুলের। যার মাধ্যমে শিশুদের খেলনা থেকে শুরু করে অ্যানটিক কার্পেটের ব্যবসাও তিনি করতে পারেন। পাপুল ও তার কোম্পানির ব্যাংক হিসাব ইতোমধ্যে জব্দ করেছে কুয়েত কর্তৃপক্ষ। বাংলাদেশেও তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে।

রাজনৈতিক অঙ্গনে অনেকটাই অপরিচিত শহিদ ইসলাম পাপুল ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের নির্বাচনে তাক লাগিয়েছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোটে দাঁড়িয়ে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের সমর্থন আদায় করে।

মহাজোটের প্রার্থী সরে দাঁড়িয়েছিলেন পাপুলকে কেন্দ্রীয়ভাবে তার জোট সমর্থন দেয়ায়। নির্বাচনের পর আরেক চমক ছিল পাপুলের স্ত্রীর সংরক্ষিত নারী আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া।

এর পর দেশের রাজনীতির চমক এই সংসদ সদস্য আবারও আলোচনায় আসেন গত ফেব্রুয়ারিতে কুয়েতের একটি সংবাদপত্রে বাংলাদেশি মানবপাচারকারীদের নিয়ে একটি সংবাদ প্রকাশের পর।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!