DMCA.com Protection Status
title="৭

বাংলাদেশের জন্য আওয়ামী লীগের কি অবদান, জাতি জানতে চায়ঃমির্জা ফখরুল

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ‘গণঅভ্যুত্থান’ গড়ে তোলার ডাক দিয়েছে বিএনপি। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই ঘোষণা দিয়ে নেতাকর্মীদের প্রস্তুতি নেওয়া আহ্বান জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে দলের প্রতিষ্ঠবার্ষিকীর উন্মুক্ত আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে আমাদের দায়িত্ব বিএনপির নেতা হিসেবে, কর্মী হিসেবে দেশের সমস্ত মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করা। সমস্ত গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করে আজকে আমাদেরকে অবশ্যই এই যুদ্ধে জয়লাভ করতে হবে এবং এই স্বৈরাচারী, এই হাসিনার সরকারকে পরাজিত করে আমাদেরকে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আমাদের দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে, আমাদের নেতা তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে।

ফখরুল বলেন, আসুন- আমরা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে এবং এই দেশে গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে আমরা দুর্বার গণআন্দোলন গড়ে তুলি, গণঅভ্যুত্থান গড়ে তুলি।  যার মাধ্যমে পরাজিত হবে এই স্বৈরাচারী, একনায়ক কর্তৃত্ববাদী আওয়ামী লীগের সরকার এবং জনগণের বিজয় হবে।

তিনি বলেন, বিএনপির ইতিহাস হচ্ছে এই দেশের স্বাধীনতার ইতিহাস, ৪৩ বছরের ইতিহাস হচ্ছে এদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ইতিহাস, বিএনপির ইতিহাস হচ্ছে এই দেশে সত্যিকার অর্থে এই রাষ্ট্র ও এই জাতিকে একটা অস্তিত্ব প্রদানের ইতিহাস।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা স্বাধীনতার ঘোষক শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান তিনি আমাদেরকে একটা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে অনুপ্রাণিত করেছিলেন, তিনি যুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছেন, পরবর্তীকালে তাকে যখন রাষ্ট্র নির্মাণের দায়িত্ব দেওয়া হয়, তখন তিনি আমাদের বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন, জাতিকে নির্মাণ করার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন, তিনি আমাদেরকে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদী দর্শন দিয়ে আমাদের নিজেদের অস্তিত্বকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন যে, আমরা একটা স্বাধীন জাতি এই ভূখণ্ডে সেটাই হচ্ছে জিয়াউর রহমান ও বিএনপির সবচেয়ে বড় অবদান।

তিনি বলেন, আমাদের আওয়ামী লীগ বন্ধুরা সারাক্ষণ বিএনপির বিরুদ্ধে বিষোদগার করে, আমাদের স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানকে খাটো করার চেষ্টা করে, আমাদের আপসহীন নেত্রী দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে খাটো করার চেষ্টা করে এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেবকে খাটো করার চেষ্টা করে, বিএনপিকে খাটো করার চেষ্টা করে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, তারা (আওয়ামী লীগ) যদি নিজেদেরকে একবার জিজ্ঞাসা করার চেষ্টা করে যে, তাদের অবদান কী এদেশের জন্য? তাদের অবদান হচ্ছে পাকিস্তানিদের কাছে আত্মসমর্পণ, তাদের অবস্থান ভারতে পালিয়ে গিয়ে নেতা সাজা, নিজেদের মনে করে যে, তারাই এদেশে স্বাধীনতা নিয়ে এসেছে, তাদের অবদান গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দিয়ে ১৯৭৫ সালে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার করা, তারা সেদিন দেশকে, জাতিকে বাংলাদেশের আত্মাকে নিহত করেছিল। আমরা ভুলে যাইনি ৭৪ সালের দুর্ভিক্ষের কথা….।  আওয়ামী লীগের ইতিহাস এদেশের আত্মাকে বিক্রি করার ইতিহাস, আওয়ামী লীগের ইতিহাস এদেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ধ্বংস করার ইতিহাস।

মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা থেকে শুরু করে আধুনিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে জিয়াউর রহমানের ভূমিকার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আজকে আওয়ামী লীগ যা শুরু করেছে কেন করছে? তারা জনগণকে বিভ্রান্ত করতে চায়, প্রকৃত ইতিহাস থেকে জনগণকে সরিয়ে দিয়ে তারা মিথ্যা ইতিহাস প্রতিষ্ঠা করতে চায়। সেজন্য গোয়েবলসীয় কায়দায় মিথ্যা শুধু বারবার বলতেই থাকে। কিন্তু তাতে কোনো লাভ হবে না।

ফখরুল বলেন, শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষক। তিনি এদেশের মানুষের হৃদয়ের মধ্যে আছেন।  তিনি তার কাজের মধ্য দিয়ে, তিনি প্রাণ উৎসর্গ করার মধ্য দিয়ে এদেশের মানুষের কাছে তার স্মৃতি পুরোপুরি প্রথিত হয়ে আছেন। শহিদ জিয়াউর রহমানকে ইতিহাস ধারণ করেছে। এই দেশের ধানক্ষেতে পথে-প্রান্তরে শহিদ জিয়া আজকে চিরজাগ্রত হয়ে আছেন।

দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ‘মিথ্যা মামলায়’ সাজা দিয়ে সরকার আটক করে রেখেছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, সেই নেত্রীও এদেশে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদীর পতাকা যেদিন হাতে তুলে নিয়েছিলেন জিয়াউর রহমানের শাহাদতের পরে সেদিনও অনেকে মনে করেছিল যে, বিএনপি বোধহয় শেষ, বিএনপি ধ্বংস, আর বিএনপি জেগে উঠবে না। কিন্তু বিএনপির ফিনিক্স পাখির মতো জেগে উঠেছে দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে। ৯ বছর তিনি পথে-প্রান্তরে চারণ কবির মতো গান গেয়ে গণতন্ত্রের গান গেয়েছেন দেশকে মুক্তি করেছেন এবং আজকেও এই গণতন্ত্রের জন্য তার সমস্ত সুখ-আয়েশ ত্যাগ করে, আত্বীয়-স্বজন ত্যাগ করে তিনি গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠার জন্য কারান্তরীণ হয়ে আছেন। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলায় বিদেশে নির্বাসিত হয়ে আছেন। সেখান থেকে তিনি চেষ্টা করছেন। আজকে সমাবেশই প্রমাণ করে তার এই চেষ্টা সফল হচ্ছে। ইনশাআল্লাহ, সমস্ত জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করা সম্ভব হবে।

সরকারের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা খুব স্পষ্ট করে বলতে চাই, মিথ্যাচার করে গোয়েবলসীয় কায়দায় সত্যকে মিথ্যা প্রমাণ করে কোনো লাভ হবে না। আর মানুষের অধিকার দাবিয়ে রেখেও কোনো লাভ হবে না।

জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে বিএনপির ৪৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এই উন্মুক্ত আলোচনা সভা হয়। মিলনায়তনের বাইরেও শত শত নেতাকর্মীর সরব উপস্থিতি দেখা গেছে। পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত ও দোয়া অনুষ্ঠানের পর জাতীয় সঙ্গীত ও দলীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে এই আলোচনা সভা শুরু হয়।

৪৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে মিলনায়তন ও আশপাশে জাতীয় ও দলীয় পতাকা, জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের প্রতিকৃতি দিয়ে বর্ণিলভাবে
সাজানো হয়। 

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!