দৈনিক প্রথম বাংলাদেশ প্রতিবেদনঃ নারায়ণগঞ্জ থেকে অপহরণের প্রায় ৩৫ ঘণ্টা পর বেলার নির্বাহী পরিচালক রিজওয়ানা হাসানের স্বামী গার্মেন্ট ব্যবসায়ী আবু বকর সিদ্দিককে উদ্ধার করা হলেও পুলিশ এখন পর্যন্ত এই চাঞ্চল্যকর শ্বাসরুদ্ধকর ঘটনার কারণ ও মোটিভ কিছুই বের করতে পারেনি।
তবে পুলিশ বলছে, যারাই এ ঘটনা ঘটিয়েছে তারা খুবই দক্ষ ও পেশাদার। অপহরণের পর সরকার, পুলিশ প্রশাসন ও মিডিয়ার চাপে রাখার কারণেই দুর্বৃত্তরা সিদ্দিককে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। আর এতে যে স্বার্থ হাসিলের জন্য তাকে অপহরণ করা হয়েছিল সেটা পূরণ করতে পারেনি। অন্যদিকে সিদ্দিককে ফিরে পেয়ে খুশি তার পরিবারের লোকজন। এদিকে শুক্রবার সকালে সিদ্দিককে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আনা হয়। সেখানে ডাক্তারি পরীক্ষা শেষে তিনি নারায়ণগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জবানবন্দি দেন।
জবানবন্দির পর ফতুল্লার দাপায় নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হামিদ ফ্যাশন হয়ে যেখান থেকে অপহরণ হয়েছিল ফতুল্লার সেই স্থানে সিদ্দিককে নিয়ে যায় পুলিশ। অপহরণের ঘটনায় পুলিশ খুলনা থেকে একটি নীল রঙের হাইএস গাড়ি আটক করেছে।
বুধবার সকাল ১১টায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থায় নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আনা হয় এ বি সিদ্দিককে। ওই সময়ে তার স্ত্রী রিজওয়ানা হাসান, মা মঞ্জুর জলিলসহ পুলিশের তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মারুফ হাসানসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সিদ্দিকের মেডিকেল পরীক্ষা করানো হয়। নারায়ণগঞ্জ ১০০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ডাক্তার ফরহাদ মেডিকেল চেকআপ করান। ডা. ফরহাদ জানান, এ বি সিদ্দিকের স্বাস্থ্যের অবস্থা ভালো আছে। শুধুমাত্র তার রক্তচাপ বেশি। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য ওষুধ দেয়া হয়েছে। তার নাকে এবং দুই হাতে দাগ রয়েছে। তার চোখ এবং দুই হাত শক্ত করে বেঁধে রাখার কারণেই এ দাগ পড়ে বলে তিনি প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত করেন।
দুপুর সাড়ে ১২টায় আবারো কঠোর নিরাপত্তায় এসপি অফিস লাগোয়া নারায়ণগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট যাবিদ হোসেনের আদালতে নেয়া হয় সিদ্দিককে। পরে সেখান থেকে নেয়া হয় নারায়ণগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট চাঁদনী রূপমের আদালতে। দুপুর ২টা ৩৫ মিনিট পর্যন্ত ওই আদালতে সিদ্দিকের জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়।
বেঁচে থাকার আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন
গার্মেন্ট ব্যবসায়ী এ বি সিদ্দিক এখনো তার নিজের জীবন নিয়ে শঙ্কিত। তিনি বলেছেন, এখনো নিজেকে নিরাপদ বোধ করতে পারছেন না। এখন থেকে পরিস্থিতি বুঝেই চলতে হবে। তবে তিনি বেঁচে আসবেন এটা ভাবতে পারেননি।
জবানবন্দি শেষে এ বি সিদ্দিক বলেন, বুধবার দুপুরে ফতুল্লার হামিদ ফ্যাশন থেকে বের হওয়ার পর নিজের গাড়িতে করে ঢাকায় ফেরার পথে ফতুল্লার ভূঁইগড় এলাকায় একটি নীল রঙের হাইএস তার গাড়িটিতে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। নেমে গাড়ির ক্ষতি হয়েছে কিনা তা দেখার সময় কয়েকজন ওই গাড়ি থেকে নেমে তাকে জোর করে তাদের গাড়িতে তুলে নেয়। পরে হাত-পা-চোখ বেঁধে ৩ থেকে সাড়ে ৩ ঘণ্টা গাড়ি চলার পর একটি বাড়ির মেঝেতে তাকে নিয়ে রাখা হয়।
বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে ওই বাড়ি থেকে বের করে এক থেকে দেড় ঘণ্টা গাড়িতে করে চলার পর মিরপুরে আনসার ক্যাম্পের সামনে নামিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা।
সিদ্দিক বলেন, চোখ বাঁধা থাকায় কাউকে চিনতে পারেননি। তবে তাদের ফিসফিস কথা শুনেছেন।
হাত-পা বাঁধা ছিল সিদ্দিকের
এদিকে সিআইডির ক্রাইম অর্গানাইজার অফিসার আশরাফুজ্জামান জানিয়েছেন, জিজ্ঞাসাবাদে এ বি সিদ্দিক জানিয়েছেন হাইএস গাড়িতে তাকে উঠানোর পর তাকে প্রথমে মারধর তথা চড়-থাপড় মারে দুর্বৃত্তরা। তাকে অস্ত্রের মুখে সিটের নিচে ফেলে রাখে। সিদ্দিকের ধারণা মতে তাকে নিয়ে প্রায় এক-দেড় ঘণ্টা খুব হাইস্পিডে গাড়ি চালানোর পর কিছু সময়ের জন্য থেমে থাকে। পরে আবারো এক-দেড় ঘণ্টা গাড়ি চলার পর তাকে একটি উচুঁ ভবনে আটকে রাখে। সেখানে তার চোখ ও হাত-পা বাঁধা ছিল। শুধু বাথরুমের সময়ে হাত-পায়ের বাঁধন খুলে দেয়া হয়।
অপহরণের ঘটনাস্থলও পরিদর্শন
আদালতে জবানবন্দি দিয়ে বের হওয়ার পর সিদ্দিককে নিরাপত্তায় নেয়া হয় ফতুল্লার দাপায় হামিদ ফ্যাশনে। তিনি এ কারখানার নির্বাহী পরিচালক। বুধবার দুপুর ২টা ২০ মিনিটে এ কারখানা থেকে গাড়ি নিয়ে বের হন সিদ্দিক। পরে বৃহস্পতিবার এ কারখানার শ্রমিকরা কর্মবিরতি দিয়ে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-পাগলা সড়ক অবরোধ, নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও পরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেন।
শুক্রবার দুপুর ২টা ৪৫ মিনিটে হামিদ ফ্যাশনে প্রবেশ করে শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে সিদ্দিক বলেন, 'আমি তোমাদের মাঝে ফিরে এসেছি। কোনো চিন্তা করো না। তোমরা ঠিকমতো কাজ করো। আমি দ্রুত আবার অফিস করবো।' সিদ্দিকের বক্তব্যে হামিদ ফ্যাশনের শত শত শ্রমিকের মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসে।
হামিদ ফ্যাশনের পর তিনি যান ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের ফতুল্লার দেলপাড়া ভূঁইয়া পেট্রল পাম্পের সামনে। বুধবার এ স্থান থেকেই তিনি অপহৃত হয়েছিলেন।
ব্রিফিংয়ে এসপি
আবু বকর সিদ্দিককে শুক্রবার সকাল ১১টায় এসপি অফিসে আনা হলেও তিনি কিংবা তার পরিবারের কেউ তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি। তবে জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম বলেন, ঘটনার পর থেকে তারা নারায়ণগঞ্জ এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ, ডিবি, র্যাব একত্রে কাজ করেছে। তারা কয়েকটি সূত্র ধরে তদন্ত কাজ চালিয়ে গেছে। প্রশাসনের অব্যাহত তৎপরতায় এবং মিডিয়ায় সার্বক্ষণিক প্রচারের কারণে এ বি সিদ্দিকের অপহরণকারীরা তাদের চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌছাতে পারেনি। তবে ঠিক কি কারণে তাকে অপহরণ করা হয়েছিল সে বিষয়টি ধোঁয়াশা রয়ে গেছে। এখানে অনেক প্রশ্ন রয়ে গেছে। ভিকটিম উদ্ধার হলেও অপহরণের যে অপরাধ তা রয়ে গেছে। অপরাধীদের গ্রেপ্তারে তাদের তদন্ত অব্যাহত থাকবে।
তিনি আরো বলেন, সিদ্দিকের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি জানিয়েছেন, অপহরণের পর সিদ্দিককে যে রুমে রাখা হয়েছিল সেখানে লোকজন ফিসফিস করে বলছিল 'আমরা আপনাকে চিনি না। কিন্তু আপনি এত কী বড় মানুষ যে আপনাকে নিয়ে সারাদেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।'
এসপি আরো বলেন, আমরা কয়েকটি সূত্র ধরে তদন্ত কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলাম। যখন অপহরণের কাজে ব্যবহার হওয়া গাড়িটির নাম্বার ভুয়া জানা গেল তখন আমরা ঢাকা ভেতরে চলাচলকারী নীল রঙের সব মাইক্রোবাসের ডাটা বিআরটিএ থেকে সংগ্রহ করি এবং যে সব নীল রঙের মাইক্রোবাসের গতিবিধি সন্দেহজনক মনে হয়েছে সেই গাড়ির ওপর নজর রাখা হয়েছে। আমরা খুলনাতে নীল রঙের একটি মাইক্রোবাস আটক করে রেখেছি। অপহরণের সময় যে গাড়িটিতে ব্যবহার করা হয়েছিল তার সঙ্গে এর অনেকটা মিল রয়েছে। তাছাড়া এ গাড়ির মালিকের বাড়ি ঢাকার ধানমন্ডিতে।
গোটা দেশ এক হয়েছিল : রিজওয়ানা
দুপুরে এ বি সিদ্দিকের জবানবন্দির পর বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)-এর নির্বাহী পরিচালক সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, স্বামীকে ফিরে পেয়ে অত্যন্ত খুশি। এই দুদিন একটা অনিশ্চয়তার জগতে ছিলাম। এ বোধ এখনো কাটেনি। আইনগত পদ্ধতি শুরু হয়েছে। এটা শেষ করতেই হবে। নাগরিকদের নিরাপত্তা, অধিকার কর্মীদের অধিকার আদায় তথা গোটা দেশকে আশ্বস্ত করতে হবে। কারণ এই ইস্যুতে গোটা দেশ এক হয়েছিল। এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টিকে অবশ্যই শেষ করতে হবে।
পরিবেশ বিষয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অবশ্যই পরিবেশের অধিকার আদায়ে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। কারণ যারা অপহরণ করেছিল তাদের উদ্দেশ্য কখনোই সফল হতে দেয়া যাবে না।
কে এই সিদ্দিক
ফতুল্লার দাপা এলাকাতে অবস্থিত হামিদ ফ্যাশন লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক আবু বক্কর সিদ্দিক। এই প্রতিষ্ঠানটির মালিক বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। সিদ্দিক পরিবেশ আইনজীবীদের সংস্থা বেলার নির্বাহী পরিচালক সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের স্বামী। তিনি শহরের ডিআইটি বাণিজ্যিক এলাকায় অবস্থিত জলিল সুপার মার্কেটের মালিক প্রয়াত প্রকৌশলী হাজী আব্দুল জলিলের দ্বিতীয় ছেলে। আবু বক্কর সিদ্দিকরা তিন ভাই ও তিন বোন। সিদ্দিকের বড় ভাই বাবু বর্তমানে নারায়ণগঞ্জে থাকেন। ছোট ভাই এটিএম কামাল টিটু প্রবাসে থাকেন।
যেভাবে উদ্ধার
শ্বাসরুদ্ধ অবস্থার পর বৃহস্পতিবার দিবাগত মধ্যরাতে রাজধানীর কলাবাগান বাসস্ট্যান্ডে স্থাপিত চেকপোস্টে একটি সিএনজি অটোরিকশায় তাকে খুঁজে পায় পুলিশ। নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম জানান, চেকপোস্টে তল্লাশির জন্য থামানো একটি সিএনজি অটোরিকশার ভেতর আবু বকরকে দেখতে পান তারা। এ সময় আবু বকরের সঙ্গে আর কেউ ছিলেন না। পরে পরিচয় পেয়ে তাকে ধানম-ি থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
এদিকে আবু বকরকে বহনকারী সিএনজি অটোরিকশা ড্রাইভার হাফিজুর রহমান বলেন, রাত পৌনে ১টার সময় মিরপুর কাজীপাড়া থেকে তিনি আবু বকরকে তার অটোরিকশায় ওঠান। রিকশা করে ১০ নাম্বারের দিক থেকে আসছিলেন তিনি। ওই সময়ে কলাবাগান এলাকায় চেকপোস্টে পুলিশ তল্লাশির সময়ে সিদ্দিককে উদ্ধার করেন। উদ্ধারের পর রাতেই ঢাকার ধানম-ির বাসায় নেয়া হয় সিদ্দিককে।
যেভাবে অপহরণ
আবু বকর সিদ্দিক গত বুধবার দুপুর আড়াইটার দিকে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার ভূঁইগড় থেকে অপহৃত হন। এরপর রিজওয়ানা হাসান ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা করেন। মামলায় তিনি উল্লেখ করেন, 'পেশাগত কারণে আমি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রভাবশালী মহলের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই করে আসছি, যা অনেকের অর্থনৈতিক স্বার্থকে ক্ষুণ্ন করেছে। প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে এসব মহল বিভিন্ন সময়ে আমার বিরুদ্ধে প্রচার মাধ্যমে নানা অপপ্রচার চালিয়েছে এবং বিভিন্নভাবে আমাকে আমার কাজ থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করেছে। আমার স্বামী নিখোঁজ হওয়ার সঙ্গে এর কোনো যোগসূত্র থাকতে পারে।'
তদন্ত সংশ্লিষ্ট একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, অপহরণকারীরা মাইক্রোবাস দিয়ে আবু বকরকে বহনকারী গাড়িটির পেছনে ধাক্কা দেয়। চালক মো. রিপন গাড়ির কোনো ক্ষতি হলো কি না, দেখতে নামলে তার ঘাড়ে পিস্তল দিয়ে আঘাত করে প্রায় অচেতন করে ফেলে দুর্বৃত্তরা। রিপনের চোখে পেপার স্প্রে (মরিচের মতো ঝাঁজালো এক ধরনের রাসায়নিক) ছোড়া হয়েছিল বলে মনে করা হচ্ছে। অপহরণকারীরা আবু বকরের মুঠোফোন দুটিও নেয়নি। আর পুরো ঘটনাটি তারা ঘটায় এক মিনিটের মধ্যে। দক্ষ ও পেশাদারদের পক্ষেই এ রকম সম্ভব বলে পুলিশ বলছে।
অপহরনের ধরন একই
২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল রাতে ইলিয়াস আলী ও তার গাড়িচালক আনসার আলীকে রাজধানীর বনানী থেকে ধরে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। ঘটনাস্থলের আশপাশের লোকজন ও পুলিশের বর্ণনা অনুযায়ী, ইলিয়াসের গাড়িটিকে প্রথমে পেছন থেকে ভারী কোনো জিপ দিয়ে ধাক্কা দেয়া হয়। এরপর চালক গাড়ি থামিয়ে দরজা খুলে নামলে তাদের দুজনকেই ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই ঘটনাস্থলের পাশে থাকা একটি ভবনের এক নিরাপত্তাকর্মী গাড়ি ধাক্কা দেয়ার শব্দ ও হইচই শুনেছেন।
আবু বকরকে অপহরণের প্রত্যক্ষদর্শী মোটর মেকানিক আবুল কালাম বৃহস্পতিবার বলেন, তিনি একটি গাড়ি মেরামতের পর তা পরীক্ষামূলক চালানোর জন্য বের হন। এ সময় তিনি লাল রঙের কার থেকে একজনকে মাইক্রোবাসে ধরে নিয়ে যেতে দেখেন। ওই রাস্তাটিতে যানবাহনের চাপ বেশি। অল্প সময়ের মধ্যেই আরো কয়েকটি গাড়ি সেখানে দাঁড়ায়। পরে তিনি ওই গাড়ির পিছু নিয়ে চিটাগাং রোড পর্যন্ত যান। গিয়ে দেখেন, গাড়িটি বাঁ দিকে ঘুরে ঢাকার দিকে গেছে। গাড়ির নাম্বার প্লেটে শুধু চট্ট মেট্রো লেখাটি তিনি দেখতে পেয়েছেন।
মাইক্রোবাসের নাম্বার ভুয়া
জেলার পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেন, বুধবার রাত ১টার দিকে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে মাইক্রোবাসের ছবিটি পাওয়া যায়। তাতে দেখা যায়, বুধবার দুপুর ২টা ৫৩ মিনিটে মাইক্রোবাসটি ফ্লাইওভারের টোলপ্লাজায় টোল দেয়। গাড়িটির নাম্বার প্লেট কিছুটা ঝাপসা ছিল। তবে বিআরটিএতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এটি ভুয়া নাম্বার।