DMCA.com Protection Status
title="৭

চট্টগ্রামে ৬মাস ধরে কারাগারে থাকা ৩ বিএনপি নেতা পুজা মন্ডপে হামলার আসামী!

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে চট্টগ্রামের হাটহাজারিতে পূজামন্ডপের তোরণ ভাংচুর মামলায় আসামি করা হয়েছে হেফাজতের সহিংসতা মামলায় ৬ মাস ধরে জেলে থাকা ৩ বিএনপি নেতাকে।

হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্যপরিষদের দাবি সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনাগুলোয় শুরু থেকেই পুলিশের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। আর আইন বিশেজ্ঞরা বলছেন, এ অবস্থা রক্ষা করবে অপরাধীদের,বাধাগ্রস্ত হবে ন্যায় বিচার। এ বিষয়ে কথা বলতে রাজী নয় পুলিশ।  

কুমিল্লায় সাম্প্রতিক ঘটনার জের ধরে চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানেও শারদীয় দুর্গোৎসবে ভাঙচুর ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। চট্টগ্রামের বিভিন্ন থানায় করা মামলায় আসামি করা হয়েছে কয়েক হাজার। এখন পর্যন্ত গ্রেফতার শতাধিক। 

চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে হাটহাজারি থানার এক ভাঙচুর মামলা। সরকারহাটে পূজামণ্ডপের তোরণ ভাঙচুরের এ মামলায় এমন তিন বিএনপি নেতাকে আসামি হিসেবে দেখানো হয়েছে যারা ঘটনাস্থলেতো ছিলেনই না, বরং হেফাজতে ইসলামের সহিংসতার মামলায় বিগত ছয় মাস ধরে জেলে। 

এই তিন আসামি হলেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবদলের সহসভাপতি সৈয়দ ইকবাল, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সদস্য আকরাম উদ্দিন ওরফে পাভেল ও বিএনপির কর্মী জোনায়েদ মেহেদী। তিনজনেরই বাড়ি হাটহাজারীতে।

কারাগারে থাকা বন্দীদের ভাঙচুরের মামলায় আসামি করা পুলিশের খামখেয়ালিপনা বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মো. ফখরুদ্দিন চৌধুরী। তিনি বলেন, এ কারণে মামলা দুর্বল হবে। সুবিধা নেবেন অন্য আসামিরা।

 

কুমিল্লায় পবিত্র কোরআন অবমাননার অভিযোগের জেরে ১৩ অক্টোবর হাটহাজারী উপজেলার সরকারহাট বাজারসংলগ্ন সোমপাড়া সর্বজনীন পূজামণ্ডপের ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা ও মণ্ডপের গেট ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। পরদিন এই ঘটনায় হাটহাজারী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবিদুর রহমান বাদী হয়ে ৬১ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় ২০০ জনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলার ৬১ আসামির মধ্যে ১৫ নম্বরে রয়েছে জোনায়েদ মেহেদীর নাম। ৫৩ নম্বরে সৈয়দ ইকবাল ও ৫৫ নম্বরে আকরাম উদ্দিন।

কারা সূত্র জানায়, এ বছরের ১৬ এপ্রিল হেফাজতের মামলায় কারাগারে পাঠানো হয় সৈয়দ ইকবালকে। এরপর জোনায়েদ মেহেদীকে ২০ এপ্রিল ও আকরাম উদ্দিনকে ১০ মে কারাগারে পাঠানো হয়। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতা করে গত ২৬ মার্চ হাটহাজারীতে বিক্ষোভ-সহিংসতা হয়েছিল। ওই ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

কারাবন্দী থাকা ব্যক্তিকে আসামি করা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মামলার বাদী হাটহাজারী থানার এসআই আবিদুর রহমান ফোন ধরেননি। বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন জানিয়ে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার এস এম রশিদুল হক  বলেন, জেল থেকেও হুকুম দিতে পারে।

তবে জেল থেকে কোনো আসামির হুকুম দেওয়ার সুযোগ নেই বলে জানান চট্টগ্রাম কারাগারের জ্যেষ্ঠ তত্ত্বাবধায়ক শফিকুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, বন্দীরা কড়া নিরাপত্তার মধ্যে থাকেন। বর্তমানে স্বজনদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ বন্ধ রয়েছে।

 বিএনপি নেতা ভিপি নাজিম জানান, চট্টগ্রামের হাটহাজারিতে পূজামন্ডপের তোরণ ভাংচুর মামলায় যাদের আসামি করা হয়েছে তারা আগে থেকেই জেলে রয়েছেন। এটা পুলিশ কর্তৃপক্ষের চরম দায়িত্বহীনতার প্রমান। 

এদিকে বিষয়টিকে পুলিশের নজিরবিহীন খামখেয়ালী উল্লেখ করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীস্টানঐক্য পরিষদের নেতারা।  

হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীস্টানঐক্য পরিষদের নেতা রানা দাশগুপ্ত জানান, চট্টগ্রামসহ গোটা বাংলাদেশের সহিংসতায় পুলিশের ভূমিকা ছিল নিষ্ক্রিয়। তিনি আরও বলেন, তদন্ত সংস্থার গাফিলতির নিষ্ক্রিয়তায় মনে প্রশাসনে ভূত আছে। 

এধরনের স্পর্শকাতর মামলায় পুলিশের এমন প্রশনবিদ্ধ ভুমিকা অপরাধিদের রক্ষার পাশাপাশি ন্যায় বিচারে বড় বাঁধা বলছেন আইনজীবীরা।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!