DMCA.com Protection Status
title="৭

এবার নিজের বউ পিটিয়ে মামলা খেলেন ডাঃ মুরাদ হাসান!!!

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ ইসলাম বিদ্বেষী,চিত্র নায়িকা মাহিয়া মাহিকে ধর্ষণের হুমকি এবং বিরোধী রাজনীতিবীদ সহ নারী সমাজের প্রতি চরম অশোভন আচরণের কারনে মিডনাইট হাসিনা সরকারের প্রতিমন্ত্রীর পদ হারানো ডাঃ মুরাদ হাসান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আবারও ভাইরাল হয়েছেন। 

এবার অভিযোগ তিনি তার স্ত্রী ডা. জাহানারা এহসানকে পিটিয়েছেন। স্ত্রীকে শারিরীক নির্যাতনের অভিযোগে গতকাল তার বিরুদ্ধে ধানমন্ডি থানায় জিডি করা হয়। অতপর ফেসবুক, টুইটার, বগে ভাইরাল হন। তাকে নিয়ে নেটিজনরা নানান মন্তব্য করছেন।

বিতর্কিত রাজনীতিক সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান দেশের রাজনীতিতে একটি বিতর্কিত চরিত্র।  প্রতিমন্ত্রীর পদ হারিয়ে জনরোষ থেকে বাঁচতে গোপনে কানাডা চলে যান। কিন্তু কানাডা সরকার বিমানবন্দর থেকে ফেরত পাঠানোয় তিনি দুবাইয়ে প্রবেশের চেস্টা করেন। সেখানেও জায়গা না পেয়ে দেশে ফিরেছিলেন গত ১২ ডিসেম্বর। দেশে ফেরার পর ডা. মুরাদ আত্মগোপনে চলে যান। তিনি কোথায় আছেন, সেই তথ্য নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছিল না। তার ফোনও বন্ধ ছিল। অবশেষে গতকাল তার সন্ধান পাওয়া গেছে। শুধু তাই নয়, নিজ বাসায় তিনি স্ত্রীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন এবং প্রাণনাশের হুমকিও দিয়ে প্রকাশ্যে চলে আসেন। সাবেক প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন তার স্ত্রী ডা. জাহানারা এহসান। গতকাল বৃহস্পতিবার ধানমন্ডি মডেল থানায় ডা. জাহানারা এহসান বাদী হয়ে সাধারণ ডায়েরি করে স্বামী মুরাদের নির্যাতনের চিত্র সবিস্তারে বর্ণনা করেন।

 মুরাদের নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে ধানমন্ডি থানায় করা জিডিতে জাহানারা এহসান বলেন, ১৯ বছরের বিবাহিত জীবনে তাদের ১৬ বছরের একটি মেয়ে এবং ১১ বছরের একটি ছেলে রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে তিনি কারণে অকারণে আমাকে এবং সন্তানদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করিয়া আসিতেছেন। এবং হত্যার হুমকিও প্রদান করিয়া আসিতেছেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকাল পৌনে ৩টার দিকে মুরাদ আবারও ‘গালিগালাজ করে মারতে উদ্যত হলে’ ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চান জানিয়ে জাহানারা জিডিতে বলেছেন, ওই ফোন পেয়ে পুলিশ বাসায় গেছে তার স্বামী বাসা থেকে বেরিয়ে যান। এ অবস্থায় নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে থাকার কথা তুলে ধরে তিনি লিখেছেন,মুরাদ যে কোনো সময় তার এবং তার সন্তানদের ‘ক্ষতি করতে পারেন’ বলে তিনি আশঙ্কা করছেন। মুরাদ হাসানের স্ত্রীও একজন চিকিৎসক।

ধানমন্ডি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম বলেন, জাতীয় জরুরি সেবা ‘৯৯৯’ নম্বরের মাধ্যমে আমরা অভিযোগ পেয়েছি যে ধানমন্ডির বাসায় সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন তার স্ত্রী ডা. জাহানারা এহসান। তিনি জানান, পরে আমি নিজে ফোর্সসহ ওই বাসায় যাই। এ সময় ডা. জাহানারা এহসান তার স্বামীর বিরুদ্ধে শারীরিক নির্যাতন এবং প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ করেন।

ডা. মুরাদ হাসান তখন বাসায় ছিলেন কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে সাইফুল ইসলাম বলেন, আমরা যখন ঘটনাস্থলে যাই, তখন তিনি বাসায় ছিলেন না। পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, মুরাদ হাসানের স্ত্রী ডা. জাহানারা শারীরিক, মানসিক এবং প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ এনে তার স্বামী মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ধানমন্ডির থানার ওসি ইকরাম আলী মিয়া বলেন, বেলা ৩টার দিকে ৯৯৯ এ কল করে নির্যাতনের ওই অভিযোগ করেন জাহানারা। তার হাসবেন্ডের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। এটা ডমেস্টিক ভায়োলেন্স। আমরা বিষয়টা দেখছি।

এর আগে এক চিত্রনায়িকাকে টেলিফোনে হুমকি আর অশালীন বক্তব্যের ভিডিও ফাঁস হলে গত ডিসেম্বরে প্রতিমন্ত্রীর পদ হারাতে হয় মুরাদ হাসানকে। জামালপুর আওয়ামী লীগের পদ থেকেও অব্যাহতি দেওয়া হয় স্থানীয় এই এমপিকে। নানা নাটকীয়তার মধ্যে ৯ ডিসেম্বর রাতে কানাডার উদ্দেশে দেশ ছাড়েন মুরাদ। কিন্তু কানাডায় কিংবা আরব আমিরাতে ঢুকতে না পেরে দুদিন পর তাকে ফের দেশে ফিরতে হয়। এরপর থেকে তিনি লোকচক্ষুর আড়ালে চলে যান। অনেকের ধারণা, ডা. মুরাদ আত্মগোপনে রয়েছেন। সেখান থেকে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। তার বিরুদ্ধে দেশের জেলায় জেলায় মামলা হচ্ছে, অনেক জেলায় মামলা দায়েরের আবেদন করা হয়েছে। ঢাকায়ও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। এসব কারণে হয়ত তিনি নিকেজে আপাতত আড়াল করে রেখেছেন।

জানা যায়, রাজধানীর ধানমন্ডির ১৫ নম্বর সড়কের ৩০/এ ভবনে সপরিবারে থাকতেন ডা. মুরাদ হাসান। ভবনটির চার তলায় তার বাসা, আর দ্বিতীয় তলায় অফিস। মন্ত্রিত্ব ও দলীয় পদ হারানোর আগে তার বাসায় নেতাকর্মীদের আনাগোনা ছিল, কিন্তু এখন সুনসান নীরবতা। মুরাদ দেশত্যাগের পর পরিবারের সদস্যরা ওই বাসায়ই ছিলেন।
সূত্র বলছে, বিমানবন্দরের অভ্যন্তরীণ টার্মিনাল দিয়ে অপরিচিত একজনের গাড়িতে করে চলে যান ডা. মুরাদ। প্রথমে ধারণা করা হয়েছিল, তিনি তার ধানমন্ডির নিজের বাসায় যাবেন। তবে তিনি সেখানে যাননি। পরে শোনা যায় তিনি তার এক ভাইয়ের বাসায় উত্তরায় চলে যান। সেখান থেকে গোপনেই ধানমন্ডি বাসায় যান তিনি। যাওয়ার পর থেকেই স্ত্রীর উপর নির্যাতন শুরু করেন। পরে গতকাল তার স্ত্রী জাতীয় জরুরি সেবা ‘৯৯৯’ নম্বরের মাধ্যমে নির্যাতনের বিষয়টি জানিয়েছেন। এছাড়াও ধানমন্ডি থানায় একটি সাধারণ ডায়রিও করেছেন তিনি।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!