ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ বাংলাদেশে গুমের শিকার হওয়া মানুষদের হদিস স্বজনদের জানাতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ সহ ১২টি মানবাধিকার সংস্থা৷ এই বিষয়ে একটি স্বাধীন ও আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবিও জানিয়েছে সংস্থাগুলো৷
গত বছরের ১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসকে সামনে রেখে বাংলাদেশে ‘জোরপূর্বক গুমের' ঘটনা নিয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ৷ সেখানে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান ছাড়াও এই বিষয়ে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সক্রিয় ভূমিকাও দাবি করা হয়েছে৷
এইচআরডব্লিউ বলেছে, তারা ২০০৯ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে গুমের ৮৬টি ঘটনা নথিভুক্ত করেছে৷
র্যাব – বিতর্কিত এক বিশেষ বাহিনী
‘এলিট ফোর্স’
বাংলাদেশে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন বা র্যাব নামক ‘এলিট ফোর্স’-এর যাত্রা শুরু হয় ২০০৪ সালে৷ এই বাহিনীর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ‘‘পুলিশ বাহিনীর কার্যক্রমকে আরো গতিশীল ও কার্যকর করার লক্ষ্যে সরকার একটি এলিট ফোর্স গঠনের পরিকল্পনা করে৷’’ তবে এই বাহিনী এখন তুলে দেয়ার দাবি জানিয়েছে বিভিন্ন মহল৷
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সরকারের উচিত হারিয়ে যাওয়া প্রিয়জনদের হদিস তাদের স্বজনদের জানানো৷ সংগঠনের এশিয়া পরিচালক ব্র্যাড অ্যাডামস বলেন, ‘‘গুমের শিকার ব্যক্তিদের হদিস তাদের পরিবারদের জানাতে একটি স্বাধীন আন্তর্জাতিক তদন্তকে স্বাগত জানানোর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ সরকারের আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উদযাপন করা উচিত৷’’
এসব ঘটনায় জড়িত নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে এবং পুনরাবৃত্তি বন্ধে জাতিসংঘের কর্মকর্তা, দাতা সংস্থা ও ব্যবসায়িক অংশীদারদেরও পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি৷
তবে বাংলাদেশের সরকার ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বরারবরই গুমের ঘটনায় নিজেদের সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করে আসছে৷ এই বিষয়ে ব্র্যাড অ্যাডামস বলেন, ‘‘…বাংলাদেশ সরকারের মিথ্যাচার কেউ বিশ্বাস করে না৷ দাতারা ও জাতিসংঘ কী পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে এখন সেটিই প্রশ্ন৷’’
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অন্য যে-কোনো বাহিনীর চেয়ে গুমের ঘটনায় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন- র্যাবের দায় সবচেয়ে বেশি৷ এইচআরডব্লিউর মতে, জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তনিও গুতেরেসের উচিত অনতিবিলম্বে র্যাব কর্মকর্তাদের শান্তি রক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করা৷
এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈনকে ফোন করা হলে তিনি স্বরাষ্ট্র বা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ছাড়া কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি৷ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর এ ধরনের বিবৃতির বিষয়ে সাধারণত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ই সরকারের অবস্থান তুলে ধরে বলেও উল্লেখ করেন তিনি৷
সূত্রঃ ডয়চে ভেলে বাংলা