ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ নির্বাচন নিয়ে সমালোচনাকারীদের মুখ বন্ধ করতে হলে দেশে মার্শাল ল’ দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা।
তিনি বলেছেন, গণতান্ত্রিক পরিবেশে নির্বাচন কমিশন নিয়ে সমালোচনা থাকবেই। এটা বন্ধ করা যাবে না। সমালোচনা বন্ধ করতে হলে মার্শাল ল’ দিতে হবে। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় মানুষের বাকস্বাধীনতা ছিল না। মানুষের মাথায় লাঠি ধরে, বন্দুকের নল উঁচিয়ে জরুরি অবস্থার মধ্যে নির্বাচন হয়েছে।
গতকাল আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে নির্বাচন কমিশন বিটে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্র্যাসি (আরএফইডি) আয়োজিত ‘আরএইডি টক’ শীর্ষক আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। সিইসি বলেন, রাজনৈতিক পরিমন্ডলে অর্থাৎ দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করা কঠিন, তবে অসম্ভব নয়। বন্দুক মাথায় রেখে একটা নির্বাচন করা যেতে পারে। চিরদিন সেটা হতে পারে না।
সিইসি কে এম নূরুল হুদা বলেন, সাবেক প্রধান র ড. এ টি এম শামসুল হুদা বর্তমান কমিশন নিয়ে সমালোচনা করেন, অথচ তিনি আইন লঙ্ঘন করে ৯০ দিনের নির্বাচন করেছিলেন ৬৯০ দিনে। তিনি নিয়মবহির্ভ‚তভাবে অনেক কাজ করেছেন দায়িত্বে থাকা অবস্থায়। ড. বদিউল আলম মজুমদারের (সুজন সম্পাদক) মতো একজন লোককে তিনি কিভাবে নির্বাচন কমিশনে কাজ করার সুযোগ দিয়েছেন। শামসুল হুদা কমিশন ক্যান্টনমেন্টের আশীর্বাদ নিয়ে নির্বাচন করেছেন। ইসি মাহবুব তালুকদারের বিভিন্ন মন্তব্যের বিষয়ে তিনি বলেন, মাহবুব তালুকদারের কথা আমি বরাবরই বলেছি। ইসিতে তিনি ব্যক্তিগত এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন। তিনি রোগাক্রান্ত ব্যক্তি। মাহবুব কখনও আইসিইউতে কখনও সিসিইউতে ছিলেন। এছাড়া তিনি সিঙ্গাপুর, ভারতে চিকিৎসা নিয়েছেন। এসব চিকিৎসার ব্যয় কমিশন থেকে করা হয়। এ অর্থের পরিমাণ বছরে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ লাখ টাকা।
সিইসি বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘দিনের ভোট রাতে’ হওয়ার যে অভিযোগ, সেটির কোনো সত্যতা নেই। আদালতের নির্দেশে এ অভিযোগ তদন্ত করা যেত। অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে নির্বাচন বন্ধ করা যেত। এটা তো অভিযোগ আকারে থেকে গেছে। আদালতের ইন্সট্রাকশন ছাড়া কিছুই হয় না। এসব অভিযোগের ওপর ভিত্তি করে আমি কনক্লুসিভ কিছু বলতে পারি না। আমি তো দেখিনি, আপনিও দেখেননি, আপনারা দেখেছেন? এটা একটা অভিযোগ। এখন তদন্ত হলে আদালতের নির্দেশে হয়তো সেটা বেরিয়ে আসত। সেটা হলে নির্বাচন বন্ধ হয়ে যেত। হয়তো সারাদেশের নির্বাচন বন্ধ হতো। দিনের ভোট রাতে হয়েছে এ বিষয়ে কোনো প্রার্থীসহ কেউ নির্বাচন কমিশনে সরাসরি কোনো অভিযোগ করেননি। এমনকি এ অভিযোগ নিয়ে কেউ আদালতেও যাননি। ফলে আমরা ধরে নিচ্ছি, দিনের ভোট রাতে হওয়ার বিষয়টি নেহাতই একটি অভিযোগ।