ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃবাংলাদেশের মিডনাইট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, 'ফেব্রুয়ারি মাস আমাদের মহান ভাষা আন্দোলনের মাস। ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শেখ মুজিব শুরু করেছিলেন এই আন্দোলন। আমরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাভাষা, মায়ের ভাষা, সেই মাতৃভাষায় কথা বলার সুযোগ পেয়েছি। বাংলা মাতৃভাষা হিসেবে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা পেয়েছে।'
রোববার (১৩ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রামে মেরিন একাডেমির ক্যাডেটদের শিক্ষা সমাপনী অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই ভাষা আন্দোলন ও সংগ্রামের পথ দিয়েই আমরা বাঙালি, আমাদের আলাদা জাতিসত্তা প্রতিষ্ঠা এবং সেইসাথে একটি স্বাধীন জাতিরাষ্ট্র আমাদের উপহার দিয়ে গেছেন।'
তিনি বলেন, 'জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে বাংলাদেশে ফিরে আসেন। তখন ছিল একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ। তার উপর ছিল পাকিস্তানের একটি প্রদেশ। যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি দেশ তিনি গড়ে তুলেছেন, সেইভাবে একটি স্বাধীন, সার্বভৌম বাংলাদেশকে গড়ে তোলার প্রতিটি প্রতিষ্ঠানই তিনি গড়ে তুলেছেন। তিনি মাত্র সাড়ে তিন বছর সময় পেয়েছিলেন। এই সময়ের মধ্যেই তিনি বাংলাদেশকে গড়ে তোলেন একটি স্বল্পোন্নত দেশে হিসেবে।'
শেখ হাসিনা বলেন, 'আমরা বাঙালিরা সবসময় বঞ্চিতই ছিলাম। কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ তীরে মার্কেন্টাইল মেরিন একাডেমিটি করাচিতে স্থানান্তর করা হয়। তখন বাংলাদেশে আর কোনো মেরিন একাডেমি তখন ছিল না। জাতির পিতা বাহাত্তর সালে দেশে ফিরে এসেই পদক্ষেপ নেন। ১৯৭৩ সালে ডেভেলপমেন্ট অব মেরিন একাডেমি শীর্ষক প্রকল্প হাতে নেন এবং এর মধ্য দিয়ে পূর্ণাঙ্গ মেরিন একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেন। এখানে ৬০ একর জমি ছিল, জাতির পিতা আরও ৪০ একর জমি আরও যুক্ত করে প্রায় ১০০ একর জমি দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তুলেছিলেন।'
দেশের প্রত্যেকটি বিভাগে একটি করে মেরিন একাডেমি চালু করা হবে বলে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ মেরিন একাডেমিকে বিশ্বের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অংশীদারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে আমরা উন্নীত করেছি। ফলে বর্তমানে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে একাডেমির গ্রহণযোগ্যতা যেমন বৃদ্ধি পেয়েছে, কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে এবং সমুদ্র বিশ্বের চাহিদা অনুযায়ী আমরা এ বছর অর্থাৎ ২০২২-এর জানুয়ারি থেকে পাবনা, বরিশাল, রংপুর ও সিলেটে আরও ৪টি মেরিন একাডেমির কার্যক্রম আমরা চালু করেছি। আমার ইচ্ছা আছে যে, প্রত্যেক বিভাগে একটি করে মেরিন একাডেমি চালু হবে। যেখানে আমাদের ছেলে-মেয়েরা শুধু প্রশিক্ষিতই হবে না, দেশে-বিদেশে তাদের ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে এবং আমাদের বেকার সমস্যা দূর হবে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এবং নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মেসবাহ উদ্দিন চৌধুরী।
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী কৃতী ক্যাডেটদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন। সিনিয়র ক্যাডেট ক্যাপ্টেন নাদিম আহমেদ সকল বিষয়ে কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য রাষ্ট্রপতি স্বর্ণপদক লাভ করেন।