ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ নিজের দেওয়া তালিকা থেকেই দেশের নতুন সিইসি (কাজী হাবিবুল আউয়াল) বেছে নেওয়ায় রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়েছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
মিডনাইট হাসিনা সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে জাফরুল্লাহ বলেন, সরকার একটা ভালো কাজ করল। এখন সরকার যদি তাকে (নতুন সিইসি) বিরক্ত না করে, তাকে যদি তার মতো করে চলতে দেয়, তাহলে তিনি খারাপ করবেন না। তার অনেক সাহসী গুণাবলী আছে।
সার্চ কমিটির কাছে নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী তার পছন্দের যে আটজনের নাম প্রস্তাব করেছিলেন- সেই তালিকায় ৮ নম্বরে থাকা সাবেক সিনিয়র সচিব কাজী হাবিবুল আউয়ালকে নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) হিসেবে বেছে নিয়েছেন রাষ্ট্রপতি।
শনিবার বিকালে নতুন ইসি নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি পর সন্ধ্যায় জাফরুল্লাহ গণমাধ্যমকে বলেন, কাজী হাবিবুল আউয়ালের নাম আমি প্রস্তাব করেছিলাম। নাম প্রস্তাব করার আগে তার সঙ্গে আমার কোনো আলাপ হয়নি। আমি ব্যক্তিগতভাবে তাকে চিনি। তিনি একজন সৎ লোক। তিনি খারাপ করবেন না।
ডা. জাফরুল্লাহ আশা প্রকাশ করে বলেন, আমি আশা করব- উনি (সিইসি) নির্বাচনে কারো কথা শুনবেন না। উনাকে এখন সবার সমর্থন দেওয়া দরকার। আমি মনে করি, বহুদিন পরে আমরা একজন সহাসী লোক পেয়েছি।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব কাজী হাবিবুল আউয়ালকে নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তার নেতৃত্বাধীন ইসির নতুন ৪ কমিশনার হলেন- বেগম রাশিদা সুলতানা (জেলা ও দায়রা জজ, অবসরপ্রাপ্ত), আহসান হাবীব খান (ব্রিগেডিয়ার জেনারেল, অবসরপ্রাপ্ত), মো. আলমগীর (সিনিয়র সচিব, অবসরপ্রাপ্ত) ও আনিছুর রহমান (সিনিয়র সচিব, অবসরপ্রাপ্ত)।
গত ২৭ জানুয়ারি নির্বাচন কমিশন গঠনে প্রথমবারের মতো আইন প্রণয়ন করে সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় ৫ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে সভাপতির দায়িত্ব দিয়ে ছয় সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করে দেন রাষ্ট্রপতি। এরপর সার্চ কমিটির প্রথম বৈঠকে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল ও সুধীজনের কাছ থেকে নাম আহ্বানের সিদ্ধান্ত হয়। একইসঙ্গে বিশিষ্টজনদের সঙ্গে বৈঠক আহ্বান করে সার্চ কমিটি। সরাসরি ও ইমেইলের মাধ্যমে সার্চ কমিটির কাছে প্রায় পাঁচশজনের নাম জমা পড়ে।
বিশিষ্টজনদের মধ্যে জাফরুল্লাহ চৌধুরীও আমন্ত্রণ পেয়ে সার্চ কমিটির সঙ্গে বসেন। সেখানে ইসির জন্য তার পছন্দের ৮টি নামের তালিকা দেন সার্চ কমিটির হাতে। সেই প্রস্তাবিত তালিকায় যারা ছিলেন, তারা হলেন- প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) হিসেবে সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাখাওয়াত হোসেন এবং নির্বাচন কমিশনার হিসেবে সাবেক বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) বদিউল আলম মজুমদার, সাবেক সেনাপ্রধান ইকবাল করিম ভুইয়া, সাবেক সচিব শওকাত আলী, খালেদ শামস, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সুলতানা কামাল ও সাবেক আইনসচিব কাজী হাবিবুল আউয়াল।
পরে জাফরুল্লাহ চৌধুরীও সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে এম সাখাওয়াত হোসেনের নাম প্রস্তাব করেছি। নির্বাচন কমিশনার হিসেবে সাবেক সেনাপ্রধান ইকবাল করিম ভূঁইয়া, আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি নাজমুন আরা, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সুলতানা কামাল ও সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) বদিউল আলম মজুমদারের নাম প্রস্তাব করেছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘যেহেতু অনুসন্ধান কমিটি ১০ জনের নাম প্রস্তাব করবে, তাই নির্বাচন কমিশনার হিসেবে আরও দু–তিনজনের নাম বলেছি। তার মধ্যে সাবেক সচিব কাজী হাবিবুল আউয়াল, খালেদ শামসের নাম বিবেচনা করা যেতে পারে।’