ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ দেশে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে জনগণের চরম দুরাবস্থার মধ্যে ভারত থেকে আনিত শিল্পীর কনসার্টে মিডনাইট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গান-বাজনা উপভোগ করার প্রবল সমালোচনা করলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, একদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় চাল-ডাল-তেল-লবন কেনার জন্য মানুষ টিসিবির ট্রাকের পেছনে লাইন দিচ্ছে অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটি কোটি টাকা খরচ করে ভারত থেকে বিখ্যাত গায়ককে নিয়ে এসে সামনে থেকে কনসার্টে গান শুনছেন, নিজে ভিডিও করছেন। দেশের লুটপাটকারীরা ঢাকা-টোরেন্টো ফ্লাইটে কানাডা যাচ্ছেন। সেই ফ্লাইটে কোটি কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে। এটিই দেশের অবস্থা।
বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে সদ্য কারামুক্ত বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজীকে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল আমিন গাজী মুক্তি পরিষদ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সাংবাদিকদের বিভিন্ন ইউনিয়নের পক্ষ থেকে কারামুক্ত নেতাকে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়।
টিসিবির ন্যায্যমূল্যের কার্ডেও দলীয়করণ করা হচ্ছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ন্যায্যমূল্যের পণ্য কিনতে ন্যায্যমূল্য কার্ড দিয়েছে সরকার। কিন্তু এখানেও দলীয়করণ করা হচ্ছে। ঠাকুরগাঁওয়ে মহিলা লীগের সভানেত্রীকে কার্ড দেওয়া হয়েছে। তার দোতলা বাড়ি আছে। আর তার পাশেই একজন দুস্থ গরিব মানুষ। সে কোনো কার্ড পায়নি। এটাই হচ্ছে বর্তমান দেশের অবস্থা।
গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণে যত আইন হচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, গণমাধ্যম কর্মী আইনের খসড়া বিল জাতীয় সংসদে উত্থাপন করা হয়েছে। এই আইন সাংবাদিকরা করছে না। আইন করছে সংসদ সদস্যরা। যারা নির্বাচিত হয়নি। যারা বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতা দখল করে বসে আছে তারা আইন তৈরি করবে সাংবাদিকদের জন্য, গণমাধ্যমের জন্য। সেটির কি অবস্থা দাঁড়াবে তা সবাই জানে।
তিনি বলেন, আরেকটি হচ্ছে উপাত্ত সংরক্ষণ আইন। ৩৪ পৃষ্ঠা খসড়া দিয়েছে। এ ছাড়া বিটিআরসির মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে সেই আইনও আনছে তারা। সামগ্রিকভাবে ফ্যাসিবাদী একটা রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে এই বাংলাদেশ। এখানে কথা বলার কোনো স্বাধীনতা তো নেই, কথা বললে শিরশ্ছেদ হতে পারে এই রকম একটি অবস্থা তৈরি হতে যাচ্ছে।
সংগঠনের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন আলমগীরের সভাপতিত্বে এবং সাংবাদিক আবদুল হাই শিকদার ও শহীদুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে জামায়াতের প্রচার সম্পাদক মতিউর রহমান আখন্দ, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক আনোয়ারুল্লাহ চৌধুরী, অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, অধ্যাপক লুৎফুর রহমান, সাংবাদিক কামাল উদ্দিন সবুজ, এলাহী নেওয়াজ খান, হাসান হাফিজ, সৈয়দ আবদাল আহমেদ, আমিরুল ইসলাম কাগজী, সর্দার ফরিদ, কাদের গনি চৌধুরী, বাছির জামাল, খোরশেদ আলম, ইলিয়াস হোসেন, রফিকুল ইসলাম, মোরসালিন নোমানী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।